বিয়ের কেনাকাটায় একটি বড় অংশ গহনা। বিয়েতে সোনার গয়না পরারই চল আমাদের দেশে। সবাই চেষ্টা করেন সাধ্যের মধ্যে কিছু গহনা কিনতে। গহনা শুধু সৌন্দর্য আর আভিজাত্যের প্রতীকই নয়, এটি ভবিষ্যতের সঞ্চয়। ১৬ আনাতে এক ভরি, আর গ্রামের হিসেবে প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম)। বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও মূল্যবান ধাতু স্বর্ণ। অনেকেই স্বর্ণে বিনিয়োগের কথা ভাবেন। কিন্তু তারা বিনিয়োগের আগে একটি প্রশ্ন সচরাচর করে থাকেন। স্বর্ণের মাপের হিসেবে ২২ ক্যারেট ও ২৪ ক্যারেট শব্দ-যুগল নিয়েই তাদের প্রশ্ন। এই দুয়ের মধ্যে পার্থক্য আসলে কোথায়। তা নিচে দেখানো হয়েছে।
২২ ও ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের মধ্যে পার্থক্যঃ
২৪ ক্যারেট স্বর্ণ মানে ৯৯.৯ শতাংশ খাঁটি স্বর্ণ। ব্যবহার উপযোগী গহনা ২২ ক্যারেট স্বর্ণ দিয়েই তৈরি হয়। ২২ ক্যারেট স্বর্ণ মানে ৯১.৬ শতাংশ খাঁটি স্বর্ণ। ক্যারেট হিসেবে তাতে ২ ক্যারেট বাদ গেলে ১ আনা ২ রতি খাঁদ বা ভেজাল থাকবে।
বিষয়টি বোঝার আগে ক্যারেট সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। ক্যারেট বলতে সোনার বিশুদ্ধতা বা খাঁটির পরিমাণ বোঝায়। অর্থাৎ, স্বর্ণে যত বেশি ক্যারেট থাকবে তার বিশুদ্ধতা তত বেশি হবে। ০ থেকে ২৪ ক্যারেটে এই বিশুদ্ধতা পরিমাপ করা যায়। এই কারণে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণকেই খাঁটি সোনা বা বিশুদ্ধ স্বর্ণ বলা হয়। এখন পরিমাপগতভাবে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের বিশুদ্ধতা ৯৯.৯ শতাংশ। আর ২২ ক্যারেট স্বর্ণের বিশুদ্ধতা কম। তা ৯১ শতাংশ। ২২ ক্যারেটের স্বর্ণে জিংক ও কপারের মতো ধাতুও পাবেন। বিশুদ্ধতার দিকে ২৪ ক্যারেট এগিয়ে থাকলেও স্থায়ীত্বের দিকে ২২ ক্যারেট এগিয়ে। যেহেতু অন্য ধাতু মিশ্রিত আছে তাই এর স্থায়ীত্ব বেশি।
২৪ ক্যারেটের স্বর্ণ নরম হওয়ায় এটি দিয়ে অলঙ্কার বানানো যায় না। তবে অনেকেই জানেন না যে ২২ ও ২৪ এর মাঝে ২৩ ক্যারেটও রয়েছে। এই স্বর্ণকেই সবচেয়ে খাঁটি বলে মনে করা হয়। এই স্বর্ণের ৯৫.৮ শতাংশ খাটি। বাকি অংশ ধাতুর মিশ্রণ। উচ্চমানের স্বর্ণের গয়নার ক্ষেত্রে ২৩ ক্যারেট আদর্শস্থানীয়। বিনিয়োগের কাজে ২৪ ক্যারেট বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে আপনি গয়না গড়তে চাইলে ২৪ ক্যারেট অবশ্যই বাছাই করতে পারবেন না।
ইদানিং বড় বড় স্বর্ণালংকারের দোকানগুলোতে খাদ মাপার মেশিন রয়েছে। স্পেকট্রোমিটার নামের ওই মেশিনে মাপার পর স্বর্ণে খাদ থাকলে সহজেই ধরা পড়ে যাবে। মেশিনই বলে দেবে কত ক্যারেটের স্বর্ণ আপনাকে দেওয়া হয়েছে। স্বর্ণ কেনার আগে হলমার্ক BIS চিহ্ন দেখে নিন।