Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য

সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের

সুপরিবর্তনীয় সংবিধানঃ

সংশােধন পদ্ধতিকে ভিত্তি করে লর্ড ব্রাইস সংবিধানকে সুপরিবর্তনীয় বা নমনীয় এবং দুষ্পরিবর্তনীয় বা অনমনীয়। এই দুই ভাগে ভাগ করেছেন। যে সংবিধানকে আইনসভা সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতি অনুসরণ করে সংশােধন করতে পারে অর্থাৎ সংবিধান সংশােধনের জন্য কোনাে বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করার প্রয়ােজন হয় না, সেই সংবিধানকে সুপরিবর্তনীয় বা নমনীয় সংবিধান বলে। ব্রিটেন, নিউজিল্যান্ড প্রভৃতি দেশের সংবিধান এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।

দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানঃ

যে সংবিধানকে আইনসভায় সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশোধন করা যায় না, সংশােধনের জন্য এক বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়, সেই সংবিধানকে দুষ্পরিবর্তনীয় বা অনমনীয় সংবিধান বলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুইটজারল্যান্ড প্রভৃতি দেশের সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় বা অনমনীয় সংবিধান।

সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মধ্যে পার্থক্যঃ

সংশােধন পদ্ধতিকে ভিত্তি করে লর্ড ব্রাইস সংবিধানকে সুপরিবর্তনীয় বা নমনীয় এবং দুষ্পরিবর্তনীয় বা অনমনীয়। সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। সুপরিবর্তনীয় সংবিধানকে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশোধন করা যায়। অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানকে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশোধন করা যায় না এই জন্য বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়।

২। সুপরিবর্তনীয় সংবিধান নমনীয় বলে সাধারণ আইন এর তুলনায় সাংবিধানিক আইনের বিশেষ কোনো মর্যাদা থাকে । অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানকে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশোধন করা যায় না বলে সাংবিধানিক আইনের বিশেষ মর্যাদা থাকে।

৩। সুপরিবর্তনীয় সংবিধান সংবিধান সভা বা কনভেনশন দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে রচিত না হয়ে প্রথা, রীতিনীতি, আইনসভা প্রণীত আইন ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান সংবিধান সভা বা কনভেনশন দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে রচিত হয়।

৪। সুপরিবর্তনীয় সংবিধান লিখিত বা অলিখিত দুই হতে পারে। যেমন- ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত এবং নিউজিল্যান্ডের সংবিধান লিখিত। অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান লিখিত হতেই হবে।

৫। সুপরিবর্তনীয় সংবিধানকে ইচ্ছামত সংশোধনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ নাগরিক অধিকারের উপর সহজেই হস্তক্ষেপ করতে পারে। অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে এই সুযোগ না থাকায় নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত থাকে।

৬। সুপরিবর্তনীয় সংবিধান অলিখিত বলে অস্পষ্ট হয়। অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান লিখিত বলে স্পষ্ট হয়।

৭। সুপরিবর্তনীয় সংবিধান আইন সভাই সার্বভৌম ক্ষমতার একমাত্র অধিকারী। অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে আইনসভা কে সংবিধানের নিয়ন্ত্রণাধীনে থেকে আইন প্রণয়ন করতে হয়। এক্ষেত্রে সংবিধান হলো সর্বোচ্চ কর্তৃত্বের অধিকারী।

Exit mobile version