এসিড ও ক্ষারক এর মধ্যে পার্থক্য

এসিড ও ক্ষারক হল দুটি মৌলিক রাসায়নিক পদার্থ যা বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। এসিড ও ক্ষারকের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হয়েছে-

এসিড (Acid) :
এসিড হচ্ছে একটি রাসায়নিক পদার্থ। যৌগের অণুতে এক বা একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং ঐ প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেনকে ধাতু বা যৌগমূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপিত করা যায় এবং যা ক্ষারকের সাথে প্রশমন বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাকে অম্ল বা অ্যাসিড বলে। যে সকল যৌগ জলীয় দ্রবণে H+ আয়ন উৎপন্ন করে তাকে বলা হয় এসিড। কোনো কিছুর pH মান 7 হতে কম হলে সেটি এসিড ।

ক্ষারক (Alkali) :
ক্ষার এক শ্রেণির রাসায়নিক যৌগ যা হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করতে সক্ষম। যেমন ধাতুর অক্সাইড বা হাইড্রোক্সাইডসমূহ ক্ষার। জলে দ্রবণীয় ক্ষারক যা হাইড্রোক্সাইড আয়ন প্রদান করে তাকে ক্ষার বলা হয়। আর যে সকল যৌগ জলীয় দ্রবণে OH- আয়ন উৎপন্ন করে ও পানিতে দ্রবীভূত হয় তাকে বলা হয় ক্ষার। কোনো কিছুর pH মান 7 এর বেশি ও পানিতে দ্রবীভূত হলে সেটি ক্ষার জাতীয়।

এসিড ও ক্ষারকের মধ্যে পার্থক্যঃ

১. যে সকল রাসায়নিক পদার্থের মধ্যে এক বা একাধিক হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং পানিতে H+ উৎপন্ন করে তাকে এসিড বলে। অন্যদিকে, যে সকল রাসায়নিক পদার্থের মধ্যে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং যারা পানিতে OH- উৎপন্ন করে তাকে ক্ষার বলে।

২. এসিড হল এমন একটি পদার্থ যা জলীয় দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়ন (H+) দান করে। অন্যদিকে, ক্ষারক হল এমন একটি পদার্থ যা জলীয় দ্রবণে হাইড্রোক্সিল আয়ন (OH-) দান করে।

৩. এসিডগুলি ধাতুগুলির সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে। অন্যদিকে, যেখানে ক্ষারকগুলি ধাতুগুলির সাথে বিক্রিয়া করে লবণ এবং জল উৎপন্ন করে।

৪. এসিডগুলি কিছু দ্রব্যের রঙ পরিবর্তন করে। অন্যদিকে, ক্ষারকগুলি অন্যান্য দ্রব্যের রঙ পরিবর্তন করে।

৫. এসিডগুলি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। অন্যদিকে, ক্ষারকগুলি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে এবং চোখের ক্ষতিও করতে পারে।

৬. এসিডের পিএইচ সীমা ০ থেকে ৬.৯ পর্যন্ত। অন্যদিকে, ক্ষারের পিএইচ সীমা ৭.১ থেকে ১৪ পর্যন্ত হয়ে থাকে।

৭. এসিড হল HCl, H2O, H3O^+, AlCl3, BCl3 ইত্যাদি। অন্যদিকে, ক্ষার হল NaOH, KOH, Na2O, K2O ইত্যাদি।

৮. এসিড নীল লিটমাসকে লাল করে। অন্যদিকে, ক্ষার লাল লিটমাসকে নীল করে।

৯. পিএইচ, পিএইচ মান বৃদ্ধি পেলে পানির ক্ষারের পরিমাণ বেড়ে যায়। অন্যদিকে, পিএইচ এর মান কমে গেলে এসিডের মাত্রা বেড়ে যায় তাই পানির পিএইচ মান 7, যা আদর্শ মান।

১০. এসিডের উদাহরণ হলো লেবুর জুস, হাইড্রোক্লোরিক এসিড ইত্যাদি। অন্যদিকে, ক্ষারের উদাহরণ হলো বেকিং সোডা, ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড ইত্যাদি।