আমাদের শরীরে যেসব রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে তাদোর মধ্যে এসিড-ক্ষার বিক্রিয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ । এছাড়া কোনো একটা দ্রবণের pH কত সেটার উপর ভিত্তি করে সেই দ্রবণটিকে ক্ষারীয় বলা হয় । তাই pH আমাদোর শরীরের একটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় । এছাড়া প্রোটিন এবং DNA এর সর্বশেষ গঠন কেমন হবে সেটাও নির্ভর করে pH এর মানের উপর ।
এসিড
এসিড হচ্ছে একটি রাসায়নিক পদার্থ। যৌগের অণুতে এক বা একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং ঐ প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেনকে ধাতু বা যৌগমূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপিত করা যায় এবং যা ক্ষারকের সাথে প্রশমন বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাকে অম্ল বা অ্যাসিড বলে। যে সকল যৌগ জলীয় দ্রবণে H+ আয়ন উৎপন্ন করে তাকে বলা হয় এসিড। কোনো কিছুর pH মান 7 হতে কম হলে সেটি এসিড ।
ক্ষার
ক্ষার এক শ্রেণির রাসায়নিক যৌগ যা হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করতে সক্ষম। যেমন ধাতুর অক্সাইড বা হাইড্রোক্সাইডসমূহ ক্ষার। জলে দ্রবণীয় ক্ষারক যা হাইড্রোক্সাইড আয়ন প্রদান করে তাকে ক্ষার বলা হয়। আর যে সকল যৌগ জলীয় দ্রবণে OH- আয়ন উৎপন্ন করে ও পানিতে দ্রবীভূত হয় তাকে বলা হয় ক্ষার। কোনো কিছুর pH মান 7 এর বেশি ও পানিতে দ্রবীভূত হলে সেটি ক্ষার জাতীয়।
এসিড এবং ক্ষারের মধ্যে পার্থক্য
১। এসিডে এক বা একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন থাকে পক্ষান্তরে ক্ষারকে অক্সাইড বা হাইড্রোক্সাইড বা হাইড্রোক্সিল আয়ন থাকে।
২। এসিড ক্ষারক সাথে বিক্রিয়া করে লবন ও পানি উৎপন্ন করে পক্ষান্তরে ক্ষারক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবন ও পানি উৎপন্ন করে।
৩। এসিড নীল লিটমাসকে লাল করে পক্ষান্তরে ক্ষারক লাল লিটমাসকে নীল করে।
৪। এসিড ধাতুর সাথে বিক্রিয়া করে লবন ও হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে পক্ষান্তরে খুব কম ক্ষারক ব্যাতিত অধিকাংশ ক্ষারক ধাতুর সাথে ক্রিয়া করেনা। অধিক শক্তিশালী ক্ষারক হলে একাধিক ধাতুর জটিল যৌগ সৃষ্টি করে।
৫। এসিড খুবই শক্তিশালী হয়, মানবদেহকে বিশ্লিষ্ট(পুড়িয়ে) দিতে পারে পক্ষান্তরে ক্ষারক মানব শরীরে ক্ষতি করতে পারলেও তা এসিডের মত মারাত্মক হয়না।