খ্রিস্টাব্দ এবং খ্রিস্টপূর্বাব্দ নিয়ে প্রশ্ন থাকে অনেকেরই। খ্রিস্টাব্দ এবং খ্রিস্টপূর্বাব্দ একই না, এদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ইতিহাস নিয়ে গবেষণায় এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় সবচেয়ে বেশি। সামান্য একটু ভুলে পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে ইতিহাস। তাই এই ইতিহাস নিয়ে সঠিক ধারণা রাখতে খ্রিস্টাব্দ ও খ্রিস্টপূর্বাব্দ সম্পর্কে জানা আবশ্যক। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক খ্রিস্টাব্দ ও খ্রিস্টপূর্বাব্দ সম্পর্কে গুরুত্বপুর্ন বিষয় সমূহ।
খ্রিস্টাব্দ ও খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে পার্থক্যঃ
খ্রিস্টাব্দ এবং খ্রিস্টপূর্বাব্দ শব্দ দুটো জুলীয় বর্ষপঞ্জি ও গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির বছর গণনার জন্য ব্যবহৃত হয়। আসলে খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্টের জন্মের বছর থেকে যে বছর গণনা করা হয়, তাকেই খ্রিস্টাব্দ বলে। যিশুখ্রিস্টের জন্ম, জীবন, সেবা কাজ, মৃত্যু, পুনরুত্থান অবিস্মরণীয় করে রাখার জন্য সাধু গ্রেগরি নতুন এ বছরের গণনা শুরু করেছিলেন। আর বর্তমান পৃথিবীতে এ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ও প্রচলিত। ১৫৮২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পোপ ত্রয়োদশ গ্রোগোরির এক আদেশানুসারে এই বর্ষপঞ্জির প্রচলন ঘটেছিল।
বছর গণনায় ইংরেজিতে ‘বিসি’ ও ‘এডি’ দুটি শব্দ প্রচলিত। ইংরেজি ‘বিসি’ শব্দটির পুর্ণ রূপ হলো বিফোর খ্রাইস্ট যার বঙ্গানুবাদ হলো খ্রিস্টপূর্ব বা খ্রিস্টপূর্বাব্দ। আর ল্যাটিন শব্দ ‘এডি’ এর পুর্নরূপ ‘অ্যানো ডোমিনি নস্ট্রি জেসু ক্রিস্টি’, যার বঙ্গানুবাদ হলো খ্রিস্টাব্দ। এ গণনারীতি অনুযায়ীই কোনো শূন্য বছর নেই, অর্থাৎ যিশুখ্রিস্টের জন্মবছরই হলো খ্রিস্টপূর্ব বছরের শেষ বছর আর খ্রিস্টাব্দের প্রথম বছর।
গোটা বিশ্ব ২৫ ডিসেম্বর তারিখটি যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন বা বড়োদিন হিসাবে পালন করে। কিন্তু যিশুর জন্মতারিখ কোনো ঐতিহাসিক লেখাপত্রে উল্লেখ নেই। কিন্তু যিশুর জন্ম সংক্রান্ত ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে অধিকাংশ গবেষক যিশুর জন্ম তারিখ হিসেবে ৬ খ্রিস্টপূর্ব থেকে ৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে ধারণা করে থাকেন।
৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে রোমে প্রথম ২৫ ডিসেম্বর যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসাবে পালন করা শুরু হয়। এর পর ৩৫০ খ্রিস্টাব্দে পোপ জুলিয়াস এই দিনটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই এই দিনটিই ‘ক্রিসমাস ডে’ হিসাবে পালন করা হচ্ছে।