বিযোজন বিক্রিয়া :
যে প্রক্রিয়ায় তাপ রাসায়নিক পদার্থ বা জৈবিক পদার্থের প্রভাবে একটি যৌগ ভেঙে দুই বা ততোধিক ভিন্ন পদার্থে পরিণত হয় তাকে বিযোজন বিক্রিয়া বলে। যেমন : চুনাপাথরকে উত্তপ্ত করলে তা বিযোজিত হয়ে চুন কার্বন-ডাইঅক্সাইডে পরিণত হয়। তাপ প্রয়োগের ফলে বিক্রিয়াটি সংঘটিত হয় কিন্তু কক্ষ তাপমাত্রায় পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে না। অর্থাৎ বিযোজন বিক্রিয়া সাধারণত একমুখী বিক্রিয়া। তাপের প্রভাবে যে বিযোজন বিক্রিয়া সংঘটিত হয় তাকে তাপীয় বিযোজন বলে। বিযোজন বিক্রিয়া যথা-
NH4NO3 —∆ → N2O + 2 H2O
CaCO3 — ∆ → CaO + CO2
2 H2O2 →2 H2O + O2
দ্বিবিযোজন বিক্রিয়া :
যে বিক্রিয়ায় দুইটি যৌগ পরষ্পরের মধ্যে তাদের উপাদান মূলক বা পরমাণু বিনিময় করে দুইটি নতুন যৌগ উত্পন্ন করে, তাকে দ্বিবিযোজন বিক্রিয়া বলে। যথা- NaOH + H2CO3 –> Na2CO3 + H2O
উক্ত বিক্রিয়াটিতে NaOH (সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড)-এর Na (সোডিয়াম) মৌল ও H2CO3 (কার্বোনিক এসিড)-এর H (হাইড্রোজেন) মৌল পরস্পরের মধ্যে স্থান বিনিময় করে দুইটি নতুন অণু Na2CO3 (সোডিয়াম কার্বনেট) ও H2O (পানি) উৎপন্ন হয়। তাই বলা যায়, করিম সাহেবের উল্লেখিত রাসায়নিক বিক্রিয়াটি একটি দ্বিবিযোজন বিক্রিয়া।
বিযোজন ও দ্বিবিযোজন বিক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্যঃ
যে প্রক্রিয়ায় তাপ রাসায়নিক পদার্থ প্রভাবে একটি যৌগ ভেঙে দুই বা ততোধিক ভিন্ন পদার্থে পরিণত হয়। বিযোজন ও দ্বিবিযোজন বিক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। যে প্রক্রিয়ায় তাপ রাসায়নিক পদার্থ বা জৈবিক পদার্থের প্রভাবে একটি যৌগ ভেঙে দুই বা ততোধিক ভিন্ন পদার্থে পরিণত হয় তাকে বিযোজন বিক্রিয়া বলে। অন্যদিকে, যে বিক্রিয়ায় দুইটি যৌগ পরস্পরের মধ্যে তাদের উপাদান মূলক বা পরমাণু বিনিময় করে দুইটি নতুন যৌগ উৎপন্ন করে তাকে দ্বিবিযোজন বিক্রিয়া বলে।
২। বিযোজন বিক্রিয়ায় যৌগ সরল উপাদানে বিভক্ত হয়, কিন্তু কোন অধঃক্ষেপ পড়ে না। অন্যদিকে, দ্বিবিযোজন বিক্রিয়ায় দুটি যৌগের পরস্পরের মধ্যে তাদের উপাদান পরমাণু বা মুলক বিনিময় করে এবং অধঃক্ষেপ উৎপন্ন করে।
৩। বিযোজন বিক্রিয়া সংগঠনের জন্য তাপ প্রয়োগ অপরিহার্য। অন্যদিকে, দ্বিবিযোজন বিক্রিয়া সংগঠনের জন্য তাপ প্রয়োগ অপরিহার্য নয়।
৪। বিযোজন বিক্রিয়া যথা- NH4NO3 —∆ → N2O + 2 H2O. অন্যদিকে, দ্বিবিযোজন বিক্রিয়া যথা- NaOH + H2CO3 –> Na2CO3 + H2O.