রাগ:
রাগের সাথে হিংসাত্মক মনোভাব জড়িত থাকে। রাগ হলে একজন মানুষ অনেক কিছু করতে পারে যেমন: খুন,রাহাজানি ( নেতিবাচক) আর রাগ থেকে অনেকে ইতিবাচক কোন কিছু করার চেষ্টা করে। যেমন: অনেকে খারাপ ফলাফল করে এবং সবার ঠাট্রা ও বিদ্রপ এর শিকার হয়। তখন ওই ব্যক্তি রাগ ভেতরে পুষে রাখে এবং ভাল ফলাফল করে দেখিয়ে দেয়। রাগ আবার দুই ধরনের হয় প্রকাশিত রাগ এবং অপ্রকাশিত রাগ। যারা রাগ সহজেই প্রকাশ করে তারা সাধারণত ভাল মানুষ হয়ে থাকে, আবার কিছু মানুষ আছে যারা রাগ প্রকাশ না করে না কিন্তু গোপনে অনেক বড় ক্ষতি করার জন্য তৈরী থাকে। রাগ কাছে বা দুরের দুই ধরনের মানুষের সাথেই করা যায়।
অভিমান:
অভিমান রাগ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একটি অনুভুতি। কাছের লোকের উপরই কেবল অভিমান করা যায়। অভিমানের সাথে অধিকার নামক একটি ব্যাপার থাকে, অর্থাৎ যার উপর অধিকার আছে তার সাথেই শুধু অভিমান করা যায়। যার কাছ থেকে কিছু পাবার আশা আছে,অথবা যাকে কিছু দেবার আশা আছে অভিমান তো তারই উপর করা যায়। অভিমান নিজের মানুষদের সাথে করা যায়। অভিমানে লুকিয়ে থাকে সুপ্ত ভালোবাসা, অনুযোগ, প্রাপ্তির আশা, কিছুটা অভিনয়। অভিমানে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবার আকাঙ্খা থাকে। অভিমানে ভালোবাসা থাকে। একজন মুমিন ব্যক্তির সাথে অভিমান করে কথা না বলা ইসলাম কখনো সমর্থন করেনা।
রাগ এবং অভিমানের মধ্যে পার্থক্য:
রাগ এবং অভিমানকে আপেক্ষিক অর্থে একই মনে হতে পারে কিন্তু এই দুটির মাঝে সূক্ষ্ম কিছু পার্থক্য রয়েছে। রাগ এবং অভিমানের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। অভিমান হল মনের অন্তঃপ্রকাশ। অন্যদিকে, রাগ হল মনের বহিঃপ্রকাশ।
২। রাগের সাথে হিংসাত্মক বা নেতিবাচক মনোভাব জড়িত থাকে। রাগ হলে মানুষ নেতিবাচক কাজে প্রলুব্ধ হয় স্বাভাবিকভাবে। অন্যদিকে অভিমান রাগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। তবে অভিমানের সঙ্গে বিরক্তির সম্পর্ক কম। অভিমানের সঙ্গে অধিকার বলে একটি ব্যাপার থাকে।
৩। অভিমানে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবার আকাঙ্খা থাকে। অন্যদিকে, রাগে প্রতিশোধ গ্রহণের ইচ্ছা থাকে।
৪। অভিমানে ভালোবাসা থাকে। অন্যদিকে, রাগে ভালোবাসা থাকে না।
৫। অভিমান শুধুমাত্র কাছের মানুষের উপরেই করা যায়। অন্যদিকে, রাগ যেকোনো ব্যক্তির সাথেই করা যায়।
৬। অভিমানে লুকিয়ে থাকে সুপ্ত ভালোবাসা, অনুযোগ, প্রাপ্তির আশা, কিছুটা অভিনয়। অন্যদিকে, রাগে থাকে প্রচন্ড ক্ষোভ, অজ্ঞতা, প্রত্যাশা, হিংসা বা প্রতিহিংসা।