অ্যান্টিজেন (Antigens):
অ্যান্টিজেন (Antigens) হচ্ছে ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণুর দেহ কোষের কিছু প্রোটিন উপাদান, কিংবা এমন কোনো বস্তু যা শরীরের নিজস্ব গঠন থেকে আলাদা প্রকৃতির, কিংবা কোনো ফরেইন উপাদান, কিংবা শরীরের জন্য কোনো অপরিচিত বস্তু, যেমন কোনো টক্সিন, ক্যামিকেল, ড্রাগস ইত্যাদি, যা দেহে প্রবেশ করলে ইমিউন সিস্টেম প্ররোচিত হয়ে অ্যান্টিবডি (Antibodies) তৈরী হয় এবং ওই এন্টিবডি, অণুজীবের কিংবা অ্যান্টিজেনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীর কে মুক্ত রাখে। ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া কিংবা ক্ষুদ্র অণুজীব গুলির দেহকোষের প্রোটিন উপাদান অ্যান্টিজেন (Antigens) হিসাবে বিবেচিত হয় এবং এগুলো শরীরে রোগ তৈরীতে ভূমিকা রাখে।
অ্যান্টিবডি (Antibodies)
অ্যান্টিবডি (Antibodies) হচ্ছে এক প্রকার প্রোটিন, যা শ্বেতরক্ত কণিকার বি-লিম্পোসাইট থেকে তথা রক্তের প্লাজমা সেল থেকে উৎপন্ন হয়। যখন শরীরের অভ্যন্তরে কোনো অ্যান্টিজেন (Antigens)প্রবেশ করে, উদাহরণস্বরূপঃ ভাইরাস, কিংবা ব্যাক্টেরিয়া কিংবা ফানজাই, তখন তাকে নিউট্রালাইজড করার জন্য শ্বেত রক্তকণিকার বি-লিম্পোসাইট থেকে এক প্রকার প্রোটিন উপাদান তৈরি হয়, যা ওই ভাইরাস কিংবা ব্যাক্টেরিয়াকে ধ্বংস করে দেয়, এবং ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেয়, যাকে অ্যান্টিবডি (Antibodies) বলে। এইভাবে অ্যান্টিজেনের প্রভাবে শরীরের অভ্যন্তরে অ্যান্টিবডি (Antibodies) তৈরী হবার প্রক্রিয়াকে ইমিউন রেসপন্স বলে।
অ্যান্টিজেন এবং অ্যান্টিবডি মধ্যে পার্থক্যঃ
১। অ্যান্টিজেন (Antigens) দেহে রোগ সৃষ্টি করে। অন্যদিকে অ্যান্টিবডি (Antibodies) রোগ প্রতিরোধ করে।
২। অ্যান্টিজেন (Antigens) দুইপ্রকার, দেহে উৎপন্ন এন্টিজেন (ক্যান্সার কোষ) ও বহিরাগত এন্টিজেন। অন্যদিকে অ্যান্টিবডি (Antibodies) ৫ প্রকার, IgA, IgE, IgG, IgM এবং IgD.
৩। অ্যান্টিজেন (Antigens) রক্তে পৃথক বৈশিষ্ট্য তৈরি করে। যেমন, (এ), (বি), (ও) এবং (এবি) চারটি পৃথক রক্ত বহনকারী। যার কারণে তা পূর্বে জানা থাকলে রক্ত দানে, জটিলতা তৈরি হয়না। অন্যদিকে অ্যান্টিবডির (Antibodies) এক্ষেত্রে কোনো জটিলতা নেই।
৪। (এবি) রক্ত গ্রুপ ধারণকারী ব্যক্তির এন্টিবডি থাকে না কিন্তু ২টি অ্যান্টিজেন (Antigens) থাকে। অন্যদিকে (ও) গ্রুপ ধারণকারী ব্যক্তির রক্তে অ্যান্টিজেন (Antigens) থাকে না কিন্তু দুই ধরণের অ্যান্টিবডি ( এ, বি) থাকে।
৫. অ্যান্টিজেন (Antigens) সক্রিয় হলে রোগের উপসর্গ দেখা দেয় । অন্যদিকে রোগের উপসর্গ দেখা দিলে অ্যান্টিবডিও (Antibodies) সক্রিয় হয় এবং রোগ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে।