ফলিত গণিত (Applied Mathematics) :
ফলিত গণিত(applied mathematics) বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন পদার্থবিজ্ঞান, প্রকৌশল, চিকিত্সা, জীববিজ্ঞান, ব্যবসা, কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং শিল্প-কারখানায় গাণিতিক পদ্ধতির প্রয়োগ। সুতরাং গাণিতিক বিজ্ঞান এবং বিশেষ জ্ঞানের সংমিশ্রণই মূলত ফলিত গণিত। ”ফলিত গণিত” শব্দটি দ্বারা পেশাদার বিশেষত্বও বর্ণনা করা হয় যেখানে গণিতবিদরা গাণিতিক মডেলসমূহ প্রণয়ন এবং অধ্যয়ন করে অনেক ব্যবহারিক সমস্যার সমাধান করে থাকেন।
অতীতে, ব্যবহারিক প্রয়োগ গাণিতিক তত্ত্বসমূহের বিকাশের জন্য একরকম অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ায় যা পরে আলাদাভাবে বিশুদ্ধ গণিতে অধ্যয়নের বিষয় হয়ে ওঠে। বিশুদ্ধ গনিতে বিমূর্ত ধারণাগুলো গণিতের নিজস্ব স্বার্থে অধ্যয়ন করা হয়। ফলিত গণিতের ক্রিয়াকলাপ এভাবেই বিশুদ্ধ গনিতে গবেষণার সাথে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত থাকে।
পরিসংখ্যান (Statistics) :
পরিসংখ্যান ল্যাটিন শব্দ Status বা ইতালি শব্দ statista বা জার্মানি শব্দ Statistik বা ইংরেজী শব্দ Statistics হতে উৎপত্তি লাভ করেছে। পরিসংখ্যান বা সংখ্যায়ন (Statistics) এক ধরনের গাণিতিক বিজ্ঞান (Mathematical Science) যা মূলত উপাত্ত সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা ও উপাত্ত সহজে পরিবেশন নিয়ে কাজ করে। বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক এবং আরো নানা শাখায় পরিসংখ্যানের ব্যবহার রয়েছে। উপাত্ত বিশ্লেষন করে তা থেকে তথ্যসমৃদ্ধ সিদ্ধান্ত (informed decision) গ্রহণে পরিসংখ্যানের ভূমিকা অপরিহার্য।
যে কোনো ধরনের গবেষণার জন্য পরিসংখ্যান এর মৌলিক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। তবে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে পরিসংখ্যানের অপব্যবহারও হয়ে থাকে।
ফলিত গণিত এবং পরিসংখ্যানের মধ্যে পার্থক্যঃ
গনিত বিষয়টির ব্যাপ্তি বিশাল । পরিসংখ্যান তার একটি ছোট অংশ মাত্র । ফলিত যোগ করলেও সম্বন্ধ একই থাকে। ফলিত গণিত এবং পরিসংখ্যানের মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-
১. ফলিত গণিত বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন পদার্থবিজ্ঞান, প্রকৌশল, চিকিত্সা, জীববিজ্ঞান, ব্যবসা, কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং শিল্প-কারখানায় গাণিতিক পদ্ধতির প্রয়োগ। অন্যদিকে, পরিসংখ্যান যা মূলত উপাত্ত সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা ও উপাত্ত সহজে পরিবেশন নিয়ে কাজ করে।
২. ফলিত গণিতে বিপত্তি স্থাপন করা হয়। এখানে আমরা ইভেন্টগুলির সম্ভাব্যতা বা প্রস্তাবিত ঘটনার সম্ভাব্যতা সন্নিবেশ করি। অন্যদিকে, পরিসংখ্যানে আমরা বাস্তব ডেটা ব্যবহার করে আসল পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করি। এখানে ডেটা সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং সমাপ্ত করে সাধারণ মৌলিক তথ্য প্রাপ্ত করা হয়।
৩. ফলিত গণিতে আমরা ইভেন্টগুলির সম্ভাব্যতা সম্পর্কিত আলোচনা করি, যা বর্তমান সময়ের মধ্যে ঘটে যেতে পারে। অন্যদিকে, পরিসংখ্যানে আমরা পুরাতন ডেটা ব্যবহার করে মৌলিক বৈশিষ্ট্য বা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পরিস্থিতির তথ্য প্রাপ্ত করি।
৪. ফলিত গণিতে ইভেন্টগুলির মধ্যে সাপেক্ষিকতা বা সম্পর্ক অনুসন্ধান করা হয়। অন্যদিকে, পরিসংখ্যানে আমরা ডেটা পরিবর্তন এবং বর্গীকরণের পরে তাদের মধ্যে সাপেক্ষিকতা নির্ধারণ করতে পারি।
৫. ফলিত গণিতে আমরা প্রস্তাবিত উদাহরণ বা ইভেন্টগুলির উদাহরণ ব্যবহার করে সম্ভাব্যতা নির্ণয় করি। অন্যদিকে, পরিসংখ্যানে আমরা বাস্তব ডেটা ব্যবহার করে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া তথ্য বা মানগুলি বিশ্লেষণ করি যা একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে কীভাবে আচরণ করছে।
৬. ফলিত গণিতে আমরা সাধারণ মানগুলির সম্ভাব্যতা নির্ণয় করি, উদাহরণস্বরূপ, একটি পাতার উপর দাঁড়ানোর সম্ভাব্যতা ইত্যাদি। অন্যদিকে, পরিসংখ্যানে আমরা সাধারণ মানগুলির পর্যাপ্ত বিবরণ এবং উন্নতি দেখাতে ব্যবহার করি, উদাহরণস্বরূপ, মানগুলির গড়, মধ্যম, বিচ্যুতি ইত্যাদি।