অ্যাকুইফার (Aquifer):
“Aquifer” শব্দটি লাতিন শব্দ “Aqua” অর্থাৎ জল এবং “Fero” অর্থাৎ আমি ধারণ করি-এই শব্দ দুটির সমন্বয়ে গঠিত। শিলাস্তরে সঞ্জিত জলের ভাণ্ডারকে অ্যাকুইফার বলে। অর্থাৎ অ্যাকুইফার হলো সেই প্রবেশ্য শিলাস্তর যা সর্বদা ভৌম জল ধারণ করে সম্পৃক্ত থাকে। কোনো প্রবেশ্য শিলাস্তরের নিচে যদি কোনো অপ্রবেশ্য শিলাস্তর অবস্থান করে, তাহলে ওই প্রবেশ্য শিলাস্তরের মধ্য দিয়ে বৃষ্টির জল ও তুষার গলা জল অপ্রবেশ্য শিলাস্তরে পৌঁছালে জলের নিম্ন গতি বন্ধ হয়ে যায়। তখন ওপরের প্রবেশ্য শিলাস্তরটি জল ধরে রাখতে সক্ষম হয় এবং সম্পৃক্ত হয়। এই জল ধারণকারী প্রবেশ্য শিলাস্তরকে অ্যাকুইফার বলে।
অ্যাকুইক্লুড (Aquiclude):
যে শিলা জলধারন করতে সক্ষম কিন্তু ভূ-অভ্যন্তরে পরিবহনে অক্ষম, তাদের অ্যাকুইক্লুড বলে। ভূ-অভ্যন্তরের যে সছিদ্র শিলাস্তর জলধারণ করতে সক্ষম হলেও জল সরবরাহ বা পরিবহন করতে অক্ষম, তাকে অ্যাকুইক্লুড বলে। অধ্যধিক সছিদ্রতার কারণে এই শিলাস্তর প্রচুর পরিমাণে জল ধরে রাখতে পারলেও অপেক্ষাকৃত কম প্রবেশ্যতার কারণে এই শিলাস্তর জল পরিবাহিত হয় না। কর্দম কণায় গঠিত শিলাস্তর বা কাদাশেল অ্যাকুইক্লুডের উদাহরণ।
অ্যাকুইফার ও অ্যাকুইক্লুডের মধ্যে পার্থক্যঃ
যে শিলা জলধারন করতে সক্ষম কিন্তু ভূ-অভ্যন্তরে পরিবহনে অক্ষম, তাদের অ্যাকুইক্লুড বলে। অ্যাকুইফার ও অ্যাকুইক্লুডের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হয়েছে-
১। শিলাস্তরে সঞ্জিত জলের ভাণ্ডারকে অ্যাকুইফার বলে। অন্যদিকে, ভূ-অভ্যন্তরের যে সছিদ্র শিলাস্তর জলধারণ করতে সক্ষম হলেও জল সরবরাহ বা পরিবহন করতে অক্ষম, তাকে অ্যাকুইক্লুড বলে।
২। অ্যাকুইফার একপ্রকার প্রবেশ্য ও সচ্ছিদ্র শিলাস্তর। অন্যদিকে, অ্যাকুইক্লুড প্রকৃতি গত দিক থেকে অপ্রবেশ্য শিলা কিন্তু সচ্ছিদ্র।
৩। অ্যাকুইফার কে কেন্দ্র করেই ভৌমজল ভান্ডার গড়ে ওঠে। অন্যদিকে, অ্যাকুইক্লুডে খুব সামান্য পরিমাণ জল থাকে বলে ভৌমজল ভান্ডার গড়ে ওঠে না এবং প্রবেশ্যতা কম বলে ভৌমজল ভান্ডার গড়ে তুলতে ও সাহায্য করে না।
৪। অ্যাকুইফারের নিচে সবসময় অপ্রবেশ্য শিলা অবস্থান করে। অন্যদিকে, অ্যাকুইক্লুড প্রবেশ্য শিলা স্তরের নিচে প্রবেশ্য শিলা স্তর কে বেষ্টন করে অবস্থান করে।
৫। অ্যাকুইফারের উদাহরণ হল বেলে পাথর ও চুনাপাথর। অন্যদিকে অ্যাকুইক্লুডের উদাহরণ হল কর্দম কণায় গঠিত শিলাস্তর বা কাদাশেল।