আটা (Atta):
আটা একটি শস্যজাত খাদ্য যা গম চূর্ণ করে প্রস্তুত করা হয়। এটি ময়দার অণুরূপ একটি খাদ্য। আটার একটি অপ্রচলিত বাংলা নাম হচ্ছে গোধুমচূর্ণ। গম চূর্ণ করে আটা প্রস্তুতকালে গমের খোসা প্রচুর পরিমাণে আটার ভেতর রয়ে যায় বলে আটার গুঁড়ার মধ্যে লালাভাস দেখা যায়। এটি একটি শর্করা জাতীয় খাদ্য। লাল আটায় ক্যালরির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। অন্যদিকে আঁশের পরিমাণ বেশি। ফলে লাল আটার তৈরি রুটি একদিকে পুষ্টিকর অন্যদিকে স্বাস্থ্যসম্মত। আটার প্রধান ব্যবহার হলো আটা থেকে রুটি ও পরোটা তৈরি করা।
বাংলাদেশের যেমন- ভাত, ভারত ও পাকিস্তান ইত্যাদি বহু দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য আটার তৈরী রুটি। এছাড়া আটা দিয়ে নানা রকম পিঠা, বেগুনী ইত্যাদি তৈরী করা হয়।
ময়দা (mayada):
আটা ও ময়দা কার্যত প্রায় একই জিনিস। গম পিষেই ময়দা তৈরী করা হয়। আটা খোসা সহ মেশিনে গুঁড়া করা হয়, ময়দা একটা মেশিনে খোসা ছাড়িয়ে ময়দা তৈরী করা হয়। তবে আটা থেকে ময়দার দাম খানিকটা বেশি। গম থেকে আটা তৈরি করা হয়। সাধারণত রুটি তৈরিতে আটা ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে ঘরোয়া পরিবেশে আটা বেশি ব্যবহৃত হয়। ময়দা দিয়ে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য তৈরি করা হয়- যেমন- পিঠা, কেক, পাউরুটি, রুটি, পরটা ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য তৈরি করা হয়। নানরুটি বা তন্দরুটিতে ময়দা ব্যবহার করলে তা ভাল ফোলে। সেখানে অবিচ্ছেদ্য এবং অন্যান্য রয়েছে সেগুলির মধ্যে উপস্থিত ময়দার আটা যা প্রোটিন এটি স্নিগ্ধতা এবং দৃঢ়তা দেয়। ময়দা খুবই উপকারী শরীরের পক্ষে। এটি দিয়ে রুটি করে খাওয়া খুবই উপকারী।
আটা ও ময়দার মধ্যে পার্থক্যঃ
গম ভাঙানো আটা ভালো, নাকি পরিশোধিত আটা ভালো? আসলে পরিশোধিত আটাকে আমরা ময়দা বলি। আসুন জেনে নিই ময়দা ও আটার মধ্যে পার্থক্য-
১। আটা এবং ময়দা বানানোর প্রক্রিয়া আসলে ভিন্ন। গম পিষে তৈরি করা হয় আদা। এতে গমের বীজের সঙ্গে তার খোসাও পিষে ফেলা হয়। এ কারণে আদার রং অনেকটা বাদামী হয়।
অন্যদিকে, ময়দা বানাতে আটাকে পরিশোধিত করা হয়। আলাদা করা হয় খোসা। এ কাজটি কয়েক দফা করলেই ময়দা মেলে। এ কারণে ময়দার রং ধবধবে সাদা হয়।
২। ময়দার চেয়ে আটাকে বেশি স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। কারণ আটায় প্রচুর ফাইবার থাকে যা ভক্ষণযোগ্য। এতে ভিটামিন এবং খনিজও থাকে বেশি। অন্যদিকে, ময়দায় তেমন কিছু থাকে না। এতে অবশ্য ক্যালোরিও থাকে না।
৩। ময়দাকে ‘অল পারপাসস ফ্লাওয়ার’ বলা হয়। এর সুন্দর শুভ্র চেহারা ও মসৃণতা আনার জন্যে রাসায়নিক উপাদান দিয়ে ব্লিচ করা হয়। অন্যদিকে, আটায় এসব প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হয় না। ফলে তা থাকে অনেক বেশি সাস্থ্যকর এবং উপাদেয়।
৪। আটায় অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান মেলে। এতে আছে ফোলেট, রিবোফ্লাভিন এবং ভিটাইম বি১, বি৩ এবং বি৫। অন্যদিকে, অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান থেকে পিছিয়ে আছে ময়দা। পরিশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসলে আটা থেকে প্রায় সব পুষ্টি উপাদান বেরিয়ে যায়।
৫। সাদা ময়দার চেয়ে আটায় অনেক বেশি ফাইবার থাকে। ফাইবারসমৃদ্ধ খাবারে অনেক উপকার। কোষ্ঠকাঠিন্য কমে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং ওজন হ্রাস করে।
৬। আটা থেকে রুটি, পরোটা তৈরি করা হয়। অন্যদিকে, ময়দা থেকে পুরী, নুডলস, পিজ্জা বেস, নান, বার্গার, মোগলাই ইত্যাদি ময়দা দিয়ে তৈরি করা হয়।