গড় ভোগ প্রবণতা ও প্রান্তিক ভোগ প্রবণতার মধ্যে পার্থক্য

গড় ভোগ প্রবণতা (Average Propensity to Consume) :
মোট ভোগব্যয়কে মোট আয় দ্বারা ভাগ করলে যে মান পাওয়া যায়, তাকে গড় ভোগ প্রবণতা (Average Propensity to Consume, APC) বলে। অর্থাৎ মোট ভোগ ব্যয় এবং মোট আয়ের আনুপাতিক মানই হলো APC. গড় ভোগপ্রবণতার (APC) সাহায্যে প্রতি একক আয় থেকে সম্ভাব্য ভোগব্যয় সম্পর্কে জানা যায়। অধ্যাপক কেইস (Keynes)-এর মতে আয় বাড়লে ভোগব্যয় বাড়ে। কিন্তু আয়ের বৃদ্ধির তুলনায় ভোগব্যয়ের বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে কম হয়।

C=f(y) হলো একটি ভোগ অপেক্ষক, এই ভোগ অপেক্ষকে

c/y = মোট ভোগ ব্যয়/মোট ব্যয়যোগ্য আয়= f(Y)/Y = APC

C=a+by হলো একটি ভোগ সমীকরণ, যেখানে C/Y =a/y+b হলো APC। C=100+0.75y ভোগ অপেক্ষক।

প্রান্তিক ভোগ প্রবণতা (Marginal propensity to consume) :
আয়ের পরিবর্তন দ্বারা ভোগব্যয়ের পরিবর্তনকে ভাগ করলে যা পাওয়া যায়, তাকে বলা হয় প্রান্তিক ভোগ প্রবনতা। অর্থাৎ আয়ের অতি সূক্ষ্ম পরিবর্তনের ফলে ভোগের কতটুকু পরিবর্তন হয় তার অনুপাতই হলো প্রান্তিক ভোগ প্রবণতা MPC (Marginal propensity to consume)|। MPC-র মান ধনাত্মক হবে, কিন্তু এককের চেয়ে কম হবে (0 < MPC < 1)। তবে যদি Y, C হয়, তাহলে C/Y – APC – 1 হবে। আবার, Y> C হলে, C/P APC <1 এবং CY হলে C/Y – APC > 1 হবে।

সহজভাবে : MPC = ΔC/ΔY যেখানে, ΔC = ভোগ ব্যয়ের পরিমাণের পরিবর্তন, ΔY = আয়ের পরিমাণের পরিবর্তন

গড় ভোগ প্রবণতা ও প্রান্তিক ভোগ প্রবণতার মধ্যে পার্থক্যঃ
মোট ভোগব্যয়কে মোট আয় দ্বারা ভাগ করলে যে মান পাওয়া যায়, তাকে গড় ভোগ প্রবণতা (APC) বলে। গড় ভোগ প্রবণতা ও প্রান্তিক ভোগ প্রবণতার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। মোট ভোগ ব্যয়কে মোট আয় দ্বারা ভাগ করলে যা পাওয়া যায়, তাকে বলা হয় গড় ভোগ প্রবণতা। অন্যদিকে, আয়ের পরিবর্তন দ্বারা ভোগব্যয়ের পরিবর্তনকে ভাগ করলে যা পাওয়া যায়, তাকে বলা হয় প্রান্তিক ভোগ প্রবনতা।

২। গড় ভোগপ্রবণতার (APC) সাহায্যে প্রতি একক আয় থেকে সম্ভাব্য ভোগব্যয় সম্পর্কে জানা যায়। অন্যদিকে, প্রান্তিক ভোগপ্রবণতা (MPC) অতিরিক্ত একক আয় থেকে উদ্ভূত অতিরিক্ত ভোগব্যয়কে নির্দেশ করে।

৩। অধ্যাপক কেইস (Keynes)-এর মতে আয় বাড়লে ভোগব্যয় বাড়ে। কিন্তু আয়ের বৃদ্ধির তুলনায় ভোগব্যয়ের বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে কম হয়। অন্যদিকে, MPC-র মান ধনাত্মক হবে, কিন্তু এককের চেয়ে কম হবে (0 < MPC < 1)। তবে যদি Y, C হয়, তাহলে C/Y – APC – 1 হবে। আবার, Y> C হলে, C/P APC <1 এবং CY হলে C/Y – APC > 1 হবে।

৪। APC নির্ধারণের জন্য একটি আয়স্তর ও সেই আয়স্তরে ভোগব্যয়ের পরিমাণ জানতে হয়। অন্যদিকে, MPC নির্ধারণের জন্য দুটি আয়স্তর ও দুটি ভোগব্যয় স্তর জানা দরকার।

৫। দীর্ঘকালে APC=MPC এবং স্বল্পকালে APC>MPC এবং স্বল্পকালীন ভোগ রেখার ছেদক থাকে। এর ঢাল একের চেয়ে কম। তাই গড় মান যা থাকে প্রান্তিক মান তার চেয়ে কম। স্বল্পকালে APC>MPC।