আজান ও ইকামতের মধ্যে পার্থক্য

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَإِذَا نَادَيۡتُمۡ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ ٱتَّخَذُوهَا هُزُوٗا وَلَعِبٗاۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمٞ لَّا يَعۡقِلُونَ
‘আর যখন তোমরা সালাতের দিকে ডাক, তখন ‎তারা একে উপহাস ও খেল-তামাশারূপে গ্রহণ ‎করে। তা এই কারণে যে, তারা এমন কওম, যারা ‎বুঝে না।’ (সুরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৫৮)

অন্যত্র তিনি বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও।’ (সূরা আল-জুমু‘আ, আয়াত: ৯)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

‘যখন সালাতের সময় হয়, তখন তোমাদের একজন যেন আজান দেয় এবং তোমাদের মধ্যে বয়স্ক ব্যক্তি যেন তোমাদের ইমামতি করে।’ এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, আজান ফরযে কিফায়া।

ইবন তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘মুতাওতির হাদীসে রয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের জন্য আজান দেওয়া হতো, এটা উম্মতের ইজমা‘ এবং তাদের আমলের পরম্পরা দ্বারা প্রমাণিত।’ (শারহুল উমদা: ২/৯৬); ফাতওয়া ইবন তাইমিয়া: ২২/৬৪)

বিশুদ্ধ অভিমত অনুযায়ী আযান দেওয়া পুরুষদের জন্য ওয়াজিব: বাড়িতে বা সফরে, একাকী বা জমা‘আতের সাথে সালাত আদায়কারী, আদায় সালাত বা কাযা সালাত আদায়কারী, স্বাধীন বা গোলাম সবার ওপর আযান ওয়াজিব।

আজানের আভিধানিক অর্থ: কোনো জিনিস সম্পর্কে ঘোষণা দেওয়া। শরীয়তের পরিভাষায় আযান বলা হয়, ‘শরীয়ত কর্তৃক অনুমোদিত নির্দিষ্ট শব্দের মাধ্যমে সালাতের সময় সম্পর্কে ঘোষণা প্রদান করা।’

আজানের নাম এ জন্য আজান হয়েছে, যেহেতু মুয়াজ্জিন‎ মানুষদেরকে নামাজের সময় জানিয়ে দেন ও তার ঘোষণা প্রদান করেন। আজানের আরেক নাম হচ্ছে ‘নিদা’ অর্থাৎ আহ্বান। কারণ, মুয়াজ্জিন‎ সাহেব লোকদেরকে ডাকেন ও তাদেরকে নামাজের দিকে আহ্বান করেন।

আর ইকামতের আভিধানিক অর্থ হলো, الإقامة শব্দটি أقام ক্রিয়া এর মূল ধাতু বা মাসদার। আরবিতে إقامة الشيء তখনই বলা হয়, যখন কোনো কিছু স্থির ও সোজা করা হয়।

শরীয়তের পরিভাষায় ইকামত হলো, ‘নির্দিষ্ট শব্দের মাধ্যমে নামাজ আরম্ভ হওয়ার ঘোষণা দেওয়া।’ অতএব, আজান হচ্ছে নামাজের সময়ের ঘোষণা দেওয়া, আর ইকামত হচ্ছে নামাজ আরম্ভের ঘোষণা দেওয়া। ইকামতকে দ্বিতীয় আযান বা দ্বিতীয় আহ্বানও বলা হয়।

(শারহুল উমদাহ, ২/৯৫)