বেকিং সোডা (Baking Soda):
সোডার বাইকার্বোনেট বা সোডিয়াম বাইকার্বোনেট হিসেবে পরিচিত বেকিং সোডা। এতে অ্যাসিড জাতীয় কোনো দ্রব্য থাকে না। তাই এর সঙ্গে অ্যাসিড যুক্ত করলে কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্যাস তৈরি হয়। রান্নায় বেকিং সোডা অ্যাসিড হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং কার্বন-ডাই অক্সাইড তৈরি করে। মাখন, লেবুর শরবতসহ আরও অনেক খাবার তৈরিতে বেকিং সোডা ব্যবহার করা হয়। তবে খাবারে অতিরিক্ত বেকিং সোডা ব্যবহার না করাই শ্রেয়। অতিরিক্ত বেকিং সোডা ব্যবহার করলে খাবার বিস্বাদ হয়ে যায়।
বেকিং পাউডার (Baking Powder):
বেকিং পাউডার সোডিয়াম বাইকার্বোনেট, একটি অ্যাসিডাইফিং এজেন্ট এবং একটি শুকানোর এজেন্টের মিশ্রণ। অ্যাসিডাইফিং এজেন্ট সাধারণত টারটার ক্রিম এবং শুকানোর এজেন্ট স্টার্চ হয়। বেকিং পাউডার একটি খামির এজেন্ট। এটি কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস ছেড়ে দিয়ে একটি ময়দা বা বাটা মিশ্রণের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। এই প্রকাশিত গ্যাস ময়দার মধ্যে জড়িয়ে যায়, ময়দার প্রসারণ ঘটায়। এটি বেকারি আইটেমের টেক্সচারটিও আলোকিত করে। বেকিং পাউডারটি খামিরের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, যা ফেরেন্টেশন প্রক্রিয়াটির কারণে অবাঞ্ছিত স্বাদ তৈরি করে।
বেকিং পাউডার দুই ধরনের হয়- সিঙ্গল এক্টিং এবং ডাবল এক্টিং। সিঙ্গেল এক্টিং বেকিং পাউডার এক্টিভেট হয় ভেজা অবস্থায়। ডাবল এক্টিং বেকিং পাউডার দুইভাবে কাজ করে- কিছু গ্যাস রুম টেম্পারেচারে ছাড়ে আর কিছু গ্যাস ওভেনে দেয়ার পর।
কিছু রেসিপিতে বেকিং সোডা আর কিছু রেসিপিতে বেকিং পাউডার আবার কোনো কোনো রেসিপিতে দুটোর কথাই লেখা থাকে বলে আপনারা কনফিউসড হয়ে যান। মনে রাখবেন বেকিং সোডার পরিবর্তে আপনি বেকিং পাউডার ইউজ করতে পারবেন। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই বেকিং পাউডারের পরিবর্তে বেকিং সোডা ইউজ করতে পারবেন না। বেকিং পাউডার বেকিং আইটেমের একটি কমন উপাদান।
বেকিং সোডা এবং বেকিং পাউডারের মধ্যে পার্থক্যঃ
সোডার বাইকার্বোনেট বা সোডিয়াম বাইকার্বোনেট হিসেবে পরিচিত বেকিং সোডা। এতে অ্যাসিড জাতীয় কোনো দ্রব্য থাকে না। বেকিং সোডা এবং বেকিং পাউডারের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। বেকিং পাউডার ও বেকিং সোডা দুটিই কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন করে যা খাবারকে ফোলাতে সাহায্য করে। বেকিং পাউডারে বেকিং সোডা আছে কিন্তু বেকিং সোডাতে শুধু একটিই উপাদান আছে।
২। বেকিং পাউডার অনেক মসৃণ, অনেকটা ময়দার মতো। অন্যদিকে, বেকিং সোডা অনেকটা দানা দানা।
৩। দই, বাটার মিল্ক, লেবুর রসের মতো টক জিনিসের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় বেকিং সোডা। অন্যদিকে, বেকিং পাউডার ব্যবহার হয় ভেজা জিনিসের ক্ষেত্রে।
৪। নান, বটোরার মতো জিনিস বানানোর জন্য বেকিং সোডা ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে, কেক, কুকিজের মতো বেকিং আইটেম যেগুলো ভাজা হয় না, সেগুলোর জন্য ব্যবহার করা হয় বেকিং পাউডার।
৫। মাখন, লেবুর শরবত বা ভিনেগার তৈরিতে বেকিং সোডা ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে, বিস্কুট, কর্ন ব্রেড বা প্যানকেক তৈরির সময় বেকিং পাউডার ব্যবহার করা হয়।
৬। বেকিং সোডা ক্ষারীয় যৌগ তাই এসিডিক যৌগের সাথে মেশালে প্রতিক্রিয়া দেখায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, যদি আপনি ভিনেগার, ঘোল, লেবুর রস বা দইয়ের মত এসিডিক যৌগের সাথে বেকিং সোডা মেশান তাহলে কার্বন ডাই অক্সাইড গঠিত হবে, যা ময়দার খামিরে গাঁজনের প্রভাব ফেলবে। অন্যদিকে, বেকিং পাউডার হচ্ছে একটি মিশ্রণ যাতে বেকিং সোডার সাথে অন্য এসিডিক উপাদান থাকে, যা একে শুষ্ক ও পৃথক রাখে। বর্তমানে যে বেকিং পাউডার পাওয়া যায় তা দ্বি-ক্রিয়া বিশিস্ট, অর্থাৎ গাঁজন দুইবার হয়। একবার যখন আপনি পানি মেশান এবং দ্বিতীয়বার হয় যখন আপনি খামিরে তাপ দেন।