বাণিজ্যের ভারসাম্য (Balance of Trade):
একটি দেশের শুধুমাত্র দৃশ্যমান দ্রব্যসামগ্রী রপ্তানি ও আমদানির হিসাব বা সুবিনস্ত তথ্যকে বাণিজ্যের ভারসাম্য বলা হয়। লেনদেন ভারসাম্যের সাথে বাণিজ্যের ভারসাম্যের পার্থক্য অত্যন্ত সুস্পষ্ট। প্রথমত: বাণিজ্যের ভারসাম্য শুধুমাত্র দৃশ্যমান দ্রব্যসামগ্রীর আদান-প্রদানের হিসাব নির্দেশ করে। লেনদেন ভারসাম্য দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান উভয়প্রকার দ্রব্যসামগ্রী এবং মূলধনের আদান-প্রদানের সুবিনস্ত হিসাব।
বস্তুতঃ বাণিজ্যের ভারসাম্য লেনদেন ভারসাম্যের চলতি হিসাবের একটি অংশ মাত্র। দ্বিতীয়তঃ লেনদেন ভারসাম্য সবসময় ’ স্থিতাবস্তায় থাকে। কিন্তু বাণিজ্য ভারসাম্যে স্থিতি, ঘাটতি অথবা উদ্বৃত্ত যে কোন অবস্থায় বিদ্যমান থাকতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, বাণিজ্যের ভারসাম্য স্থিতাবস্তার ধারণা করা কঠিন।
লেনদেন ভারসাম্য (Balance of Payments):
আন্তর্জাতিক বাণিজে্য অংশগ্রহণকারী একটি দেশ প্রতিবছর দৃ্শ্যমান ও অদৃ্শ্যমান দ্রব্যসামগ্রী এবং স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী মূলধন আমদানির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে একটি নির্দিষ্ট অংক প্রদান করে থাকে। একইভাবে, উল্লেখিত দ্রব্যসামগ্রী ও মূলধন বিনিময় করে দেশটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে। প্রতিটি দেশ বহিবিশ্বেরর সাথে এ ধরনের লেনদেনের একটি সুবিন্যস্ত (systematic)) হিসাব স্থিতিপত্র বা balance sheet -এর মাধ্যমে রাখে। স্থিতিপত্রের মাধ্যমে লেনদেনের হিসাবের সুবিন্যস্ত বর্ণনাকে লেনদেন ভারসাম্য বলে।
অন্যভাবে বলা যায়, লেনদেন ভারসাম্য একটি দেশের মুদ্রার চাহিদা ও যোগানের সম্পর্ক নির্দেশ করে। এখানে মুদ্রার চাহিদা বলতে বহিবিশ্ব কর্তৃক সংশিন্তষ্ট দেশটির রপ্তানি দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়ে ব্যয়িত অর্থ, দেশটির বস্তুগত এবং আর্থিক মূলধনে বিনিয়োগকৃত অর্থ এবং দেশটির হস্তান্তর-পাওনা হিসেবে প্রাপ্ত অর্থকে বুঝানো হয়েছে। অন্যদিকে, মুদ্রার যোগান হচ্ছে বহিবিশ্ব থেকে আমদানিকৃত দ্রব্যসামগ্রীর জন্য ব্যয়, অন্য দেশের বস্তুগত ও আর্থিক মূলধনে বিনিয়োগকৃত অর্থ এবং হস্তান্তর প্রদানের যোগফল।
বাণিজ্য ভারসাম্য ও লেনদেন ভারসাম্যের মধ্যে পার্থক্য:
একটি দেশের শুধুমাত্র দৃশ্যমান দ্রব্যসামগ্রী রপ্তানি ও আমদানির হিসাব বা সুবিনস্ত তথ্যকে বাণিজ্যের ভারসাম্য বলা হয়। বাণিজ্য ভারসাম্য ও লেনদেন ভারসাম্যের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-