ভাঙ্গর সমভূমি:
হিমালয়ের বরফ গলা জলে সৃষ্ট গঙ্গা ও তার বিভিন্ন শাখা ও উপনদীর হাজার হাজার বছর ধরে পলি সঞ্চয়ের ফলে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে উপদ্বীপীয় মালভূমির উত্তর অংশ বিস্তৃত ভারতের বৃহত্তম গাঙ্গেয় সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে। নদীর প্লাবনভূমি থেকে উচ্চ অংশে অবস্থিত প্রাচীন পলি দ্বারা গঠিত সমভূমি অঞ্চল গুলি ভাঙ্গর নামে পরিচিত। নদীর এই অংশে বন্যার জল প্রবেশ করতে পারে না বলে নতুন পলির সঞ্চয় ঘটে না।
খাদার সমভূমি:
হিমালয়ের বরফ গলা জলে সৃষ্ট গঙ্গা ও তার বিভিন্ন শাখা ও উপনদীর হাজার হাজার বছর ধরে পলি সঞ্চয়ের ফলে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে উপদ্বীপীয় মালভূমির উত্তর অংশ বিস্তৃত ভারতের বৃহত্তম গাঙ্গেয় সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে। গাঙ্গেয় সমভূমির সৃষ্টির ফলে নদীর প্লাবনভূমি অঞ্চলে প্রতি বছর নবীন পলির সঞ্চয় হয়ে; যে নিচু সমতল ভূমির সৃষ্টি হয়েছে, তাকে খাদার বলে।
ভাঙ্গর ও খাদার সমভূমির মধ্যে পার্থক্য:
দক্ষিণে উপদ্বীপীয় মালভূমির উত্তর অংশ বিস্তৃত ভারতের বৃহত্তম গাঙ্গেয় সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙ্গর ও খাদার সমভূমির মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-
১। গাঙ্গেয় সমভূমি র প্রাচীন পলিরাশি দ্বারা গঠিত অঞ্চল কে ভাঙ্গর। অন্যদিকে, নতুন পলি রাশি সঞ্চিত হয়ে গঠিত সমভূমি গুলি খাদার নামে পরিচিত।
২। ভাঙ্গর সমভূমি অঞ্চলের উর্বরতা অপেক্ষাকৃত ভাবে কম হয়। অন্যদিকে, নবীন পলি রাশি দ্বারা গঠিত খাদার অঞ্চলের উর্বরতা অনেক বেশি হয়।
৩। ভাঙ্গর অঞ্চল গুলি অপেক্ষাকৃত উচ্চ ভূমি। অন্যদিকে, খাদার অঞ্চল গুলি মূলত নিম্ন ভূমি।
৪। উচ্চতা তুলনামূলক ভাবে বেশি হওয়ায় ভাঙ্গর সমভূমি অঞ্চলের বন্যার প্রবণতা কম। অন্যদিকে, খাদার অঞ্চল গুলি প্রতি বছর প্লাবিত হয় বলে নতুন নতুন পলির স্তর সৃষ্টি হয়।
৫। ভাঙ্গর সমভূমি মূলত স্থূল আকৃতির নুড়ি, পাথর ও বালি দ্বারা গঠিত। অন্যদিকে, খাদার সমভূমি অঞ্চল গুলি সূক্ষ্ম পলি ও কাদা কনার সমন্বয়ে গঠিত।
৬। গাঙ্গেয় সমভূমি র বেশির ভাগ অংশ মূলত ভাঙ্গর পলি মাটি দ্বারা গঠিত। অন্যদিকে, নদী তীরবর্তী প্লাবন সমভূমির সামান্য পরিমাণ অংশ খাদার পলি মাটি দ্বারা গঠিত।
৭। ভাঙ্গর অঞ্চলের মাটির রঙ গাঢ় হয়। অন্যদিকে, ক্রমাগত গঠিত হতে থাকায় খাদার অঞ্চলের মাটি হালকা রঙের হয়ে থাকে।