বায়োপসি এবং অটোপসি, দুটি মেডিকেল পরীক্ষা যা প্রায়শই শুনতে পাওয়া যায়। যদিও উভয়ই শরীরের টিস্যু পরীক্ষা করে, তবে তাদের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে বায়োপসি এবং অটোপসির মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়েছে-
বায়োপসি (Biopsy) :
বায়োপসি হল রোগননির্ণয় বা পরীক্ষার করার জন্য শরীরের যেকোনো অংশ থেকে টিস্যু অপসারণ করা। এটি সাধারণত একজন সার্জন, রেডিওলজিস্ট বা একজন ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট দ্বারা হস্তক্ষেপমূলক সঞ্চালিত একটি মেডিকেল পরীক্ষা। প্রক্রিয়াটির মধ্যে একটি রোগের উপস্থিতি বা মাত্রা নির্ধারণের জন্য পরীক্ষার জন্য নমুনা কোষ বা টিস্যু নিষ্কাশন জড়িত।
সাধারণত প্যাথলজিস্ট দ্বারা একটি মাইক্রোস্কোপের নীচে পরীক্ষা করার আগে টিস্যুকে স্থির, নিরুদিত, খচিত, ভাগ, দাগ এবং স্ফিত করা হয়। এটি রাসায়নিকভাবেও বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। যখন একটি সম্পূর্ণ গলদ বা সন্দেহজনক এলাকা অপসারণ করা হয়, তখন পদ্ধতিটিকে বলা হয় এক্সিসিয়াল বায়োপসি। ইনসিশনাল বায়োপসি বা কোর বায়োপসি সম্পূর্ণ ক্ষত বা টিউমার অপসারণের চেষ্টা না করেই অস্বাভাবিক টিস্যুর একটি অংশের নমুনা দেয়। যখন টিস্যু বা তরলের একটি নমুনা একটি সুই দিয়ে এমনভাবে সরানো হয় যে কোষগুলিকে টিস্যু কোষের হিস্টোলজিক্যাল আর্কিটেকচার সংরক্ষণ না করেই অপসারণ করা হয়, তখন পদ্ধতিটিকে একটি সুই অ্যাসপিরেশন বায়োপসি বলা হয়। সম্ভাব্য ক্যান্সার বা প্রদাহজনক অবস্থার অন্তর্দৃষ্টির জন্য বায়োপসিগুলি সাধারণত সঞ্চালিত হয়।
অটোপসি (Autopsy) :
অটোপসি মানে হচ্ছে ময়না তদন্ত। মরদেহের উপর পরীক্ষা চালিয়ে মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের প্রক্রিয়াকেই অটোপসি বলা হয়ে থাকে। এই কাজটি সাধারণত পুলিশ কিংবা গোয়েন্দা বিভাগ কর্তৃক নিয়োজিত ডাক্তাররাই করে থাকেন। অপঘাতে মৃত্যু হলে কিংবা কেউ হত্যাকান্ডের শিকার হলে তার মরদেহ এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়।
ময়নাতদন্ত সাধারণত একজন প্যাথলজিস্ট নামে একজন বিশেষ ডাক্তার দ্বারা সঞ্চালিত হয়। শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে মৃত্যুর একটি ময়নাতদন্ত করা প্রয়োজন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, একজন মেডিকেল পরীক্ষক বা করোনার মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ করতে পারেন।
বায়োপসি এবং অটোপসির মধ্যে পার্থক্যঃ
১. বায়োপসি হল রোগননির্ণয় বা পরীক্ষার করার জন্য শরীরের যেকোনো অংশ থেকে টিস্যু অপসারণ করা। অন্যদিকে, অটোপসি মানে হচ্ছে ময়না তদন্ত। মরদেহের উপর পরীক্ষা চালিয়ে মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের প্রক্রিয়াকেই অটোপসি বলা হয়ে থাকে।
২. বায়োপসির প্রক্রিয়া হল সুই, স্ক্যালপেল বা অন্যান্য যন্ত্রের মাধ্যমে টিস্যু বা কোষের নমুনা নেওয়া হয়। অন্যদিকে, অটোপসির পরীক্ষায় শরীর কেটে খুলে বিভিন্ন অঙ্গের পরীক্ষা করা হয়।
৩. বায়োপসির উদ্দেশ্য কোনো রোগ নির্ণয় করা, ক্যান্সারের ধরন এবং পর্যায় নির্ণয় করা, চিকিৎসার পরিকল্পনা করা। অন্যদিকে, অটোপসির উদ্দেশ্য হল মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা, রোগের প্রকৃতি এবং অগ্রগতি বোঝা, আইনি প্রক্রিয়ায় সহায়তা করা।
৪. বায়োপসি করা হয়: কোনো অস্বাভাবিক গঠন বা টিউমার পাওয়া গেলে, কোনো রোগের সন্দেহ হলে। অন্যদিকে, অটোপসি করা হয়: অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে, আইনি কারণে, মেডিকেল গবেষণার জন্য।