Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

জৈব প্রযুক্তি এবং ন্যানো প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্য

জৈব প্রযুক্তি এবং ন্যানো প্রযুক্তি

জৈব প্রযুক্তি (Bio technology) :
কৃষিকাজে জৈবপ্রযুক্তি বহুকাল পূর্বে থেকে ব্যবহৃত হচ্ছে, তবুও উদ্ভিদের চাষাবাদে এর আধুনিকতম প্রয়োগ দেখা যায়। নব্যপ্রস্তর যুগের নবোপলীয় বিপ্লবের পর থেকেই কৃষিকে খাদ্য উৎপাদনের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হিসেবে গণ্য করা হয়। আধুনিক যুগের কৃষকেরা শ্রেষ্ঠ বীজ নির্বাচন ও ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ফলন ঘটিয়ে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণ করছে। যখন শস্য ও জমির পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল।

তখন এমন কিছু জীব এবং তাদের থেকে উৎপন্ন পদার্থের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা মাটির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি করে, নাইট্রোজেন সংবদ্ধকরণ করে, এবং ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ বা পেস্ট দমন করে। কৃষির ইতিহাসে দেখা যায়। কৃষক ভিন্ন পরিবেশে ভিন্ন উদ্ভিদের সাথে কোনো উদ্ভিদের প্রজনন ঘটিয়ে উদ্ভিদের জিনে কিছু পরিবর্তন ঘটিয়ে জৈবপ্রযুক্তির প্রাথমিক রূপ উন্মোচন করেছেন। উদাহরণ- বিয়ারের গাঁজন ও আদিম জৈবপ্রযুক্তির

ন্যানো প্রযুক্তি (Nano technology) :
পারমাণবিক বা আণবিক পর্যায়ে অতিক্ষুদ্র যন্ত্র তৈরি করার জন্য ধাতব বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানোর বিজ্ঞানকে ন্যানো টেকনোলজি তথা ন্যানোপ্রযুক্তি বলে। ন্যানো শব্দটি গ্রিক nanos শব্দ থেকে এসেছে। এর আভিধানিক অর্থ dwarf। কিন্তু এটি একটি মাপের একক হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। রিচার্ড ফাইনম্যানকে ন্যানোপ্রযুক্তির জনক বলা হয়। ১ মিটারের ১০০ কোটি ভাগের এক ভাগকে বলা হয় ১ ন্যানোমিটার। অর্থাৎ 1 nm = 10-9 m। ন্যানোমিটার পর্যায়ের টেকনোলজিকেই বলে ন্যানো টেকনোলজি।

ন্যানোটেকনলজির ভিত্তিতে অনেক অনেক নতুন নতুন টেকনলজির উদ্ভব হচ্ছে। নতুন নতুন দ্রব্য এর সূচনা করছে এবং সেই সাথে ব্যবসায়িক সুযোগের দ্বার উন্মোচন করছে। আশা করা হচ্ছে যে আমেরিকাতে ২০১০ সনের আগে ন্যানোটেকনলজি সম্পর্কিত পণ্যের বাজার ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌছবে এবং ৮ লক্ষ নতুন চাকরির সুযোগ করে দেবে। ন্যানোটেকনলজির গুরুত্বের কথা চিন্তা করে আমেরিকার সরকার বর্তমানে ন্যানোটেকনলজি সংক্রান্ত গবেষণাতে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে ৪২২ মিলিয়ন ডলার এবং ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে ৭১০ মিলিয়ন ডলার ব্যবহৃত হয়েছিল। শুধু সরকারই নয়, পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও ন্যানোটেকনলজি গবেষণায় অর্থ সরবরাহ করছে।

জৈব প্রযুক্তি এবং ন্যানো প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্যঃ

কৃষিকাজে জৈবপ্রযুক্তি বহুকাল পূর্বে থেকে ব্যবহৃত হচ্ছে, তবুও উদ্ভিদের চাষাবাদে এর আধুনিকতম প্রয়োগ দেখা যায়। জৈব প্রযুক্তি এবং ন্যানো প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১. যে প্রযুক্তির সাহায্যে কোনো জীবকোষ, অণুজীব বা তার অংশবিশেষ ব্যবহার করে নতুন কোনো বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জীব এর উদ্ভাবন বা উক্ত জীব থেকে প্রক্রিয়াজাত বা উপজাত দ্রব্য প্রস্তুত করা যায়, সে প্রযুক্তিকে জৈব প্রযুক্তি বলে।

অন্যদিকে, পারমাণবিক বা আণবিক পর্যায়ে অতিক্ষুদ্র যন্ত্র তৈরি করার জন্য ধাতব বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানোর বিজ্ঞানকে ন্যানো টেকনোলজি তথা ন্যানোপ্রযুক্তি বলে।

২. জৈব প্রযুক্তি হলো জৈব রসায়নের উপর ভিওি করে যে প্রযুক্তি। অন্যদিকে, ন্যানো প্রযুক্তি হলো কাবন বা কোনো ( ১০^৯) অাকারের মৌলের পরমাণু নিয়ে প্রযুক্তি।

৩. জৈব প্রযুক্তি DNA transplant মেথডে করা হয়। অন্যদিকে, ন্যানো প্রযুক্তি হলো পারমাণবিক বা আণবিক স্কেলে অতিক্ষুদ্র ডিভাইস তৈরি করার জন্য ধাতব ও বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানোর বিজ্ঞান। এ প্রযুক্তিতে পরমাণুকে ন্যানো পার্টিকেল হিসাবে রূপায়িত করা হয়।

৪. জৈব প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয় জীবের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন সাধনের জন্য। অন্যদিকে, ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন বস্তুর (যেমন : যন্ত্রপাতি) উন্নতি সাধনের জন্য।

৫. জৈব প্রযুক্তির অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে। এর মধ্যে টিস্যু কালচার ও জিন প্রকৌশল অন্যতম। অন্যদিকে, ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয় দুটি পদ্ধতিতে। একটি ‘বটম আপ’ এবং অন্যটি ‘টপ ডাউন’।

Exit mobile version