বায়োটিক বিক্রিয়াঃ
যে সমস্ত বিক্রিয়া সজীব বস্তু, তথা বিভিন্ন অণুজীব কর্তৃক নিঃসৃত উৎসেচকের প্রভাবে সংঘটিত হয় তাদেরকে বায়োটিক বিক্রিয়া বলে।
বায়োটিক উপাদান বা কারণগুলি বাস্তুতন্ত্রের সমস্ত জীবকে বোঝায়। এগুলি সারা পৃথিবীতে পাওয়া যায়। জীবিত জিনিসগুলো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বাস্তুতন্ত্রের অন্যান্য জীবিত জিনিসগুলোকে প্রভাবিত করে।
বাস্তুতন্ত্রের বায়োটিক উপাদানগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:- বায়োটিক উপাদান, বায়োটিক রিসোর্স এবং বায়োটিক ফ্যাক্টর।
এবায়োটিক বিক্রিয়াঃ
যে সমস্ত বিক্রিয়া অজৈব রাসায়নিক বস্তুর সহায়তায় সংঘটিত হয় তাদেরকে এবায়োটিক বিক্রিয়া বলে।
সূর্যালোকের মতো অ-জৈবিক উপাদান, সালফার ডাই অক্সাইডের মতো উপাদান এবং হাইড্রোলাইসিসের মতো প্রক্রিয়াগুলি, যা বাস্তুসংস্থার জীবিত উপাদানগুলিকে প্রভাবিত করে তাকে এবায়োটিক হিসাবে অভিহিত করা হয়। একটি বাস্তুতন্ত্রের জৈব উপাদানগুলিও তিনটি বিভাগের অধীনে বর্ণিত হতে পারে। এগুলি হ’ল জৈব উপাদান, অ্যাজিওটিক উৎস এবং জৈবিক উপাদান। এর উপাদানগুলো জীবের সংখ্যা নির্ধারণ করে, যা পরিবেশে বিদ্যমান ও সক্ষম।
বায়োটিক ও এবায়োটিক বিক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্যঃ
যে সমস্ত বিক্রিয়া অজৈব রাসায়নিক বস্তুর সহায়তায় সংঘটিত হয় তাদেরকে এবায়োটিক বিক্রিয়া বলে। বায়োটিক ও এবায়োটিক বিক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১) যে সমস্ত বিক্রিয়া সজীব বস্তু, তথা বিভিন্ন অণুজীব কর্তৃক নিঃসৃত উৎসেচকের প্রভাবে সংঘটিত হয় তাদেরকে বায়োটিক বিক্রিয়া বলে। অপরদিকে যে সমস্ত বিক্রিয়া অজৈব রাসায়নিক বস্তুর সহায়তায় সংঘটিত হয় তাদেরকে এবায়োটিক বিক্রিয়া বলে।
২) বায়োটিক বিক্রিয়া জৈব অনুঘটক এর উপস্থিতিতে বিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। অপরদিকে এবায়োটিক বিক্রিয়া প্রভাবকের উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে এটি সংঘটিত হয়।
৩) বায়োটিক বিক্রিয়াটি জৈব-রাসায়নিক প্রকৃতির। অপরদিকে এবায়োটিক বিক্রিয়াটি অজৈব প্রকৃতির।
৪) বায়োটিক বিক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার স্থান কোষের ভিতরে বা বাইরে হতে পারে। অপরদিকে এবায়োটিক বিক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার স্থান কোষের বাইরে হয়।
৫) বায়োটিক বিক্রিয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে উভমুখী বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। অপরদিকে এবায়োটিক বিক্রিয়া সব ধরণের বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে ।
৬) বায়োটিক বিক্রিয়ায় প্রভাবক হিসেবে এনজাইম কাজ করে। অপরদিকে এবায়োটিক বিক্রিয়ায় প্রভাবক হিসেবে অজৈব বস্তু কাজ করে।
৭) বায়োটিক বিক্রিয়ায় NH3 ও অক্সিজেন বিক্রিয়া করে নাইট্রাইট (NO2) , H2O ও শক্তি উৎপন্ন করে। অপরদিকে এবায়োটিক বিক্রিয়ায় হেবার প্রণালীতে 3H2 + N2 বিক্রিয়া করে NH3 উৎপন্ন হয়।