তেহারি:
তেহারি মূলত তিনটা হাড়িতে রান্না করতে হয় এর জন্য নামকরণ হয়েছে তেহারি। তেহারি এক প্রকার খাবার বিশেষ। পোলাও’র চাল ও মাংস এর প্রধান উপকরণ। বিরিয়ানি’র সাথে এর মূল পার্থক্য হলো এতে মাংসের টুকরা বেশ ছোট হয়। এক ধরনের তেহারি রান্নায় গোল আলু ব্যবহার করা হয়।
তেহারি বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং উত্তর ভারতে খুবই জনপ্রিয়। জিরা, ধনে গুঁড়া, গোলমরিচ, এলাচ, দারুচিনি, জায়ফল গুঁড়া করুন। গরম তেলে মাংস আদা বাটা, রসুন বাটা, দই, কাঁচামরিচ, লবণ মিশিয়ে হালকা বাদামী করে ভাজুন এবং মাংস সিদ্ধ হলে মসলা দিয়ে নেড়ে নামান।
হাঁড়িতে প্রয়োজনমতো পানি ফুটিয়ে চাল, দুধ, লবণ দিয়ে নাড়ূন। পোলাও চাল হয়ে আসার আগে ৬-৭ টুকরো কাঁচামরিচ দিন। অল্প আঁচে রেখে রান্না মাংস ছড়িয়ে দিন এবং মাংসগুলো পোলাও চালের সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। হয়ে এলে নামিয়ে পরিবেশন করুন
বিরিয়ানি:
বিরিয়ানির সঠিক উৎপত্তি সম্পর্কে অনশ্চিয়তা রয়েছে। তবে উত্তর ভারতে, দিল্লির মুসলিম বসতিপূর্ণ স্থানগুলিতে, রামপুর, লখনউ এবং অন্যান্য ছোট রাজ্যে বিরিয়ানি বিভিন্ন বৈচিত্র্যের উৎপত্তি লক্ষ করা যায়।
বিরিয়ানি বা বিরানি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো, বিশেষ করে ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশে প্রচলিত এক বিশেষ প্রকারের খাবার যা সুগন্ধি চাল, ঘি, গরম মশলা এবং মাংস মিশিয়ে রান্না করা হয়। এটি ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের মাধ্যমে উৎপত্তি লাভ করে।
বিরিয়ানি ও তেহারির মধ্যে পার্থক্য:
বিরিয়ানি ও তেহারির মিল বৈশিষ্ট্যগত কিছু মিল থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অমিল রয়েছে। বিরিয়ানি ও তেহারির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। তেহারীকে বিরিয়ানির একটি বিশেষ পরিমার্জিত ধরন বলা চলে। তেহারীতে গোশতের পরিমাণ থাকে কম। আলু ও হাড় থাকে বেশি। মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চড়া দামের কারণে খরচ বাঁচাতে এই বৈচিত্র্য আনা হয়েছিল। তবে প্রেক্ষাপট বদলে গেলেও এখনও আবেদন বদলে যায়নি তেহারীর।
২। তেহারিতে সরিষার তেল ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে বিরিয়ানিতে সরিষার তেল ব্যবহার হয় না। সয়াবিন, সূর্যমুখী কিংবা চালের কুড়ার তেল ব্যবহার করা হয়।
৩। তেহারীর মাংসের সাইজ ছোট কিউব কিউব থাকে। বড় টুকরা তেহারীতে ভালো লাগে না। অন্যদিকে বিরিয়ানিতে বড় মাংসের টুকরা ব্যবহার করা হয়।
৪। তেহারীতে মাংসের প্রিপারেশনে মশলা একটু কম দেয়া হয়। অন্যদিকে বিরিয়ানীতে নানা ধরনের মশলা ব্যবহার হয়।
৫। তেহারী মেজবানী খাবার। অন্যদিকে বিরিয়ানী রাজকীয় খাবার।
৬। তেহারী চিনিগুড়া চাল দিয়ে করতে হয়। বাসমতি চালের তেহারী হয় না। অন্যদিকে বাসমতি চাল ব্যবহার হয় বিরিয়ানীতে।
৭। তেহারীতে কেওড়া জল দেয়া হয় না। গোলাপ জল দিলেও খুব সামান্য দেয়া হয়। না দিলেই তেহারীর আসল ফ্লেভার পাওয়া যায়।
অন্যদিকে বিরিয়ানিতে কেওড়া ও গোলাপ জল দেওয়া হয়।
লাইফ স্টাইল সংক্রান্ত আরো পার্থক্য পড়ুনঃ Lifestyle
আরোও পার্থক্য পড়ুনঃ রম্বস ও সামান্তরিকের মধ্যে পার্থক্য, কার্ডিয়াক এবং কঙ্কাল পেশীর মধ্যে পার্থক্য, সম্পাদ্য এবং উপপাদ্যের মধ্যে পার্থক্য, তথ্য ও উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য, গণিত এবং ফলিত গণিতের মধ্যে পার্থক্য, অক্ষাংশ ও অক্ষরেখার মধ্যে পার্থক্য, ভর এবং ওজনের মধ্যে পার্থক্য