মূলকঃ
একাধিক মৌলের একাধিক পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত একটি পরমাণু গুচ্ছ যা একটি আয়নের ন্যায় আচরণ করে এবং বিক্রিয়া শেষে অপরিবর্তিত থাকে, সেসব পরমাণু গুচ্ছকে যৌগমূলক বলে। যেমনঃ সালফেট (SO₄² – ) যৌগমূলক। কারণ এখানে সালফার ও অক্সিজেন এই দুটি মৌলের পাঁচটি পরমাণু যুক্ত হয়ে একটি পরমাণু গুচ্ছ গঠন করে যার নির্দিষ্ট আধান -2 আছে। যৌগমূলকের যে চার্জ বা আধান থাকে সেই চার্জ বা আধান থেকে ধনাত্মক বা ঋণাত্মক চিহ্ন বাদ দিলে যে সংখ্যাটি থাকে তাই ঐ যৌগমূলকের যোজনী নির্দেশ করে। যেমনঃ কার্বনেট (CO₃² -) যৌগমূলকের আধান বা চার্জ -2. এখান থেকে ঋণাত্মক (-) চিহ্ন টি বাদ দিলে দুই (2) থাকে। এই দুই হচ্ছে কার্বনেট যৌগমূলকের যোজনী।
যৌগঃ
যৌগ হল একপ্রকারের পদার্থ যা দুই বা ততোধিক ভিন্ন মৌলিক উপাদানের মধ্যে রাসায়নিক বন্ধনের মাধ্যমে গঠিত হয়। মৌলিক উপাদানসমূহ নির্দিষ্ট ভরের অনুপাতে যুক্ত হয়ে রাসায়নিক যৌগ গঠন করে এবং যৌগ ভাঙ্গলে এর মৌলিক উপাদানসমূহ পাওয়া যায়। অথাৎ বলা যায় দুই বা ততোধিক মৌলের পরমাণুর বিক্রিয়ার মাধ্যমে যৌগ গঠিত হয়।
যৌগ ও মূলকের মধ্যে পার্থক্যঃ
১.দুই বা ততোধিক মৌলের পরমাণুর বিক্রিয়ার মাধ্যমে যৌগ গঠিত হয়। অন্যদিকে দুই বা ততোধিক মৌলের একাধিক পরমাণুর সংযুক্ত হওয়ার ফলে একটি পরমাণু গ্রুপ গঠন করলে তাকে যৌগমূলক বলে।
২. প্রত্যেকটি যৌগের রয়েছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য এবং তা যৌগের ন্যায় আচরণ করে। অন্যদিকে যৌগমূলক নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকলে তা কেবলমাত্র একটি পরমাণুর ন্যায় আচরণ করে।
৩. বিভিন্ন যৌগ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে নতুন পদার্থ উত্পন্ন করে। অন্যদিকে যৌগমূলক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণের পর অপরিবর্তিত থাকে।
৪. যৌগের উদাহরণ: H2SO4 , H2,O2, । অন্যদিকে মুলকের উদাহরণ: অ্যমোনিয়াম: NH4+ , সালফেট: SO4–, সালফাইট SO3-
৫. যৌগ কখনো ধনাত্নক বা ঋণাত্নক হয় না। অন্যদিকে যৌগমূলক ধনাত্নক ও ঋণাত্নক উভয়ই হতে পারে। যেমন: ধনাত্নক যৌগ মূলক: NH4+,ঋণাত্নক যৌগমূলক:SO4-