পরিবাহী (Conductive):
যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই তড়িৎপ্রবাহ চলাচল করতে পারে তাদেরকে পরিবাহী বলে। যেমন– তামা, রূপা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি। পরিবাহীর পদার্থের ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যা ৪টির কম পদার্থ থাকে। এদের ভ্যলেন্স ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসের সঙ্গে খুব হালকা বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। ফলে ইলেকট্রনগুলোকে সহজেই এক পরমাণু হতে অন্য পরমানুতে স্থানান্ত্র করা যায়।
বিদ্যুৎ চলাচল ব্যবস্থায় বৈদ্যুতিক শক্তিকে এক জায়গা হতে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবাহী পদার্থের তার বা ক্যাবল ব্যবহার করা হয়। তার ও ক্যাবল ছাড়াও বৈদ্যুতিক মোটর, জেনারেটর, ট্রান্সফরমার ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি তৈরি করতে পরিবাহী পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
অর্ধপরিবাহী (semi-conductive):
যে সকল পদার্থের তড়িৎ পরিবাহিতা অপরিবাহী ও পরিবাহীর মাঝামাঝি সেসব পদার্থকে অর্ধপরিবাহী বা সেমিকন্ডাক্টর বলে। অর্ধ পরিবাহী পদার্থের যোজন ব্যান্ডে সাধারণত; ৪টি ইলেকট্রন থাকে। যেমনঃ জার্মেনিয়াম, সিলিকন ইত্যাদি। অর্ধপরিবাহী পদার্থের যোজন ব্যান্ড ও পরিবহন ব্যান্ডের মধ্যে সামান্য শক্তি ব্যবধান থাকে। সেমিকন্ডাকটরের পরিবহন ব্যান্ড প্রায় খালি থাকে। পরম শূণ্য তাপমাত্রায় সেমিকন্ডাকটর অপরিবাহীর ন্যয় আচরণ করে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে কন্ডাকশন ব্যান্ডে ইলেকট্রনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ও সেমিকন্ডাকটরের তড়িৎ পরিবাহীতা বৃদ্ধি পায়। উপযুক্ত ভেজাল দ্রব্য মিশিয়ে অর্ধপরিবাহীর তড়িৎ পরিবাহীতা বৃদ্ধি করা যায়।
পরিবাহী ও অর্ধপরিবাহীর মধ্যে পার্থক্যঃ
১। যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই তড়িৎপ্রবাহ চলাচল করতে পারে তাদেরকে পরিবাহী বলে। অন্যদিকে, যে সকল পদার্থের তড়িৎ পরিবাহিতা অপরিবাহী ও পরিবাহীর মাঝামাঝি সেসব পদার্থকে অর্ধপরিবাহী বা সেমিকন্ডাক্টর বলে।
২। বিদ্যুৎ চলাচল ব্যবস্থায় বৈদ্যুতিক শক্তিকে এক জায়গা হতে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবাহী পদার্থের তার বা ক্যাবল ব্যবহার করা হয়। তার ও ক্যাবল ছাড়াও বৈদ্যুতিক মোটর, জেনারেটর, ট্রান্সফরমার, অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি তৈরী করতে পরিবাহী পদার্থ ব্যবহার করা হয়।অন্যদিকে, বিদ্যুৎ চলাচল ও বন্টন ব্যবস্থায় দুটি বিপরীতধর্মী ক্যাবল বা তার যেমন- বিদ্যুৎ পরিবাহক ও আর্থের মধ্যে তড়িৎ ক্ষরণ বন্ধ করার জন্য অর্ধপরিবাহী ব্যবহার করা হয়।
৩। পরিবাহীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে রোধ বাড়ে। অন্যদিকে, অর্ধপরিবাহীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে রোধ কমে।
৪। পরিবাহী পদার্থ হলো- তামা, রূপা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি। অন্যদিকে, অর্ধপরিবাহী পদার্থ হলো- জার্মেনিয়াম, সিলিকন ইত্যাদি।