Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

বিপরীত বিরোধিতা ও অধীন বিপরীত বিরোধিতার মধ্যে পার্থক্য

বিপরীত বিরোধিতা ও অধীন বিপরীত বিরোধিতার

বিপরীত বিরোধিতা এবং অধীন বিপরীত বিরোধিতা দুইটি ধরনের যৌক্তিক সম্পর্ক যা দুটি বাক্যের মধ্যে থাকতে পারে। এই দুটি ধরনের বিরোধিতা বুঝতে হলে, আমাদের বাক্যের গঠন এবং তাদের অর্থের মধ্যকার সম্পর্ক সম্পর্কে জানতে হবে। নিম্নে বিপরীত বিরোধিতা ও অধীন বিপরীত বিরোধিতার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করা হয়েছে-

বিপরীত বিরোধিতা (Contrary Opposition) :
দুটি বাক্য যদি একই বিষয় এবং একই বিধেয় নিয়ে গঠিত হয় এবং এমন হয় যে, দুটি একসাথে সত্য হতে পারে না, কিন্তু দুটি একসাথে মিথ্যাও হতে পারে, তাহলে তাদের মধ্যে বিপরীত বিরোধিতা থাকে। আবার, একই উদ্দেশ্য এবং বিধেয়যুক্ত দুটি সার্বিক বচনের মধ্যে যদি কেবল গুণের পার্থক্য থাকে তাহলে এই দুটি বচনের একটি কে অন্যটির বিপরীত বচন বলে। এবং তাদের মধ্যবর্তী যে সম্বন্ধ তাকে বিপরীত বিরোধীতার সম্বন্ধ বলা হয়। এই সম্বন্ধ একই উদ্দেশ্য এবং একই বিধেয় যুক্ত A বচন এবং E বচনের মধ্যে হয়ে থাকে।

অধীন বিপরীত বিরোধিতা (Sub-Contrary Opposition) :
একই উদ্দেশ্য ও বিধেয় যুক্ত দুটি বিশেষ বচনের মধ্যে যদি গুণের পার্থক্য থাকে তবে বচন দুটির পারস্পরিক সম্পর্ককে অধীন বিপরীত বিরোধিতা বলা হয়। এবং এই সম্বন্ধে যুক্ত বচন দুটি পরস্পরের অধীন বিপরীত। I এবং O বচনের মধ্যে অধীন বিপরীত বিরোধিতার সম্বন্ধ রয়েছে। অধীন বিপরীত বিরোধিতা হতে গেলে যে ক্ষেত্রগুলি আবশ্যক সেগুলি হল – অধীন বিপরীত বিরোধিতার সম্বন্ধটি দুটি নিরপেক্ষ বচনের মধ্যে হয়ে থাকে। অধীন বিপরীত বিরোধিতার বচন দুটির উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদ এক এবং অভিন্ন হবে। এই বিরোধিতায় উভয় বচন বিশেষ বচন হবে। এই বিরোধিতার ক্ষেত্রে বচন দুটির গুণ ভিন্ন হবে। অর্থাৎ একটি সদর্থক হলে অন্যটি নঞর্থক হবে আবার একটি নঞর্থক হলে অন্যটি সদর্থক হবে।

বিপরীত বিরোধিতা ও অধীন বিপরীত বিরোধিতার মধ্যে পার্থক্যঃ
১. একই উদ্দেশ্য এবং বিধেয়যুক্ত দুটি সার্বিক বচনের মধ্যে যদি কেবল গুণের পার্থক্য থাকে তাহলে এই দুটি বচনের একটি কে অন্যটির বিপরীত বিরোধিতা বলে। অন্যদিকে, একই উদ্দেশ্য ও বিধেয় যুক্ত দুটি বিশেষ বচনের মধ্যে যদি গুণের পার্থক্য থাকে তবে বচন দুটির পারস্পরিক সম্পর্ককে অধীন বিপরীত বিরোধিতা বলা হয়।

২. বিপরীত বিরোধিতার ক্ষেত্রে দুটি নিরপেক্ষ বচন থাকা আবশ্যক এবং দুটির উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদ অভিন্ন হওয়া প্রয়োজন। সাথে সাথে বচন দুটিকে সার্বিক বচন হতে হয়। অন্যদিকে, অধীন বিপরীত বিরোধিতার ক্ষেত্রে সম্বন্ধ দুটি নিরপেক্ষ বচনের মধ্যে এবং বচন দুটির উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ অভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও উভয় বচন দুটি বিশেষ বচন হয়।

৩. বিপরীত বিরোধিতার ক্ষেত্রে সমজাতীয় দুটি সামান্য বচন থাকবে। অন্যদিকে, অধীন বিপরীত বিরোধিতার ক্ষেত্রে দুটি সমজাতীয় বিশেষ বচন থাকবে।

৪. বিপরীত বিরোধিতা ও অধীন বিপরীত বিরোধীতার মধ্যে গুণের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

৫. বিপরীত বিরোধিতার সম্বন্ধ A বচন এবং E বচনের মধ্যে হয়ে থাকে। অন্যদিকে, অধীন বিপরীত বিরোধিতার সম্বন্ধ রয়েছে I বচন এবং O বচনের মধ্যে।

৬. বিপরীত বিরোধিতা উদাহরণ:
“সকল মানুষ মর্ত্য।”
“কোন মানুষ মর্ত্য নয়।”
উপরের দুটি বাক্যের মধ্যে বিপরীত বিরোধিতা আছে। কারণ, দুটি একসাথে সত্য হতে পারে না, আবার দুটি একসাথে মিথ্যাও হতে পারে।

অন্যদিকে, অধীন বিপরীত বিরোধিতার উদাহরণ:
“কোন মানুষ জ্ঞানী।”
“কোন মানুষ মূর্খ।”
উপরের দুটি বাক্যের মধ্যে অধীন বিপরীত বিরোধিতা আছে। কারণ, দুটি একসাথে মিথ্যা হতে পারে না, কিন্তু দুটি একসাথে সত্য হতে পারে।

Exit mobile version