Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

সৃষ্টিবাদ ও বিবর্তনবাদের মধ্যে পার্থক্য

সৃষ্টিবাদ ও বিবর্তনবাদ

সৃষ্টিবাদ (Creationism) :
সৃষ্টিবাদ বা সৃজনবাদ বা সৃষ্টিতত্ত্ব হল ধর্মগ্রন্থের বিবরণ অনুযায়ী জীবন ও বিশ্বজগত সৃষ্টির ইতিহাসের উপর বিশ্বাস। নব্য পৃথিবী সৃজনবাদীগণ বাইবেলের জেনেসিসে বর্ণিত সৃষ্টিতত্ত্বকে সমর্থন করে বিবর্তনের বৈজ্ঞানিক তত্ত্বকে প্রত্যাখ্যান করে থাকেন। জেনেসিস অনুসারে, ঈশ্বর আদিতে বিদ্যমান বিশৃঙ্খল শূন্যতাকে সুসজ্জিত করে তা থেকে জীবন সৃষ্টি করেছেন। অন্যান্য ধর্মে সৃষ্টিতত্ত্বের পৃথক পৃথক পৌরাণিক ব্যাখ্যা রয়েছে। এর প্রথম উদ্যোগটি ক্রিয়েশিয়ো এক্স নিহিলো নামে পরিচিত। ল্যাটিন ভাষায় যার অর্থ হল কিছু নেই বা শূন্য থেকে সৃষ্টি। হিপ্পোর অগাস্টিনের ন্যায় আরও বহু লেখক হাজার হাজার বছর ধরে ঈশ্বর বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন এই মতবাদটি শিক্ষা দিয়ে এসেছেন।

নব্য পৃথিবী সৃজনবাদীগণ বাইবেলের জেনেসিসে বর্ণিত সৃষ্টিতত্ত্বকে সমর্থন করে বিবর্তনের বৈজ্ঞানিক তত্ত্বকে প্রত্যাখ্যান করে থাকেন। জেনেসিস অনুসারে, ঈশ্বর আদিতে বিদ্যমান বিশৃঙ্খল শূন্যতাকে সুসজ্জিত করে তা থেকে জীবন সৃষ্টি করেছেন। অন্যান্য ধর্মে সৃষ্টিতত্ত্বের পৃথক পৃথক পৌরাণিক ব্যাখ্যা রয়েছে। এর প্রথম উদ্যোগটি ক্রিয়েশিয়ো এক্স নিহিলো নামে পরিচিত। ল্যাটিন ভাষায় যার অর্থ হল কিছু নেই বা শূন্য থেকে সৃষ্টি।

বিবর্তনবাদ (Evolutionism) :
বিবর্তন হলো এমন একটি জীববৈজ্ঞানিক ধারণা যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে জীবের গাঠনিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ক্রমপরির্তনকে বুঝায়। কোনো জীবের বংশধরদের মাঝে যে জিনরাশি ছড়িয়ে পড়ে তারাই বংশপ্রবাহে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করে। সাধারণ ভাষায় বিবর্তনবাদের মূল কথা হচ্ছে, এ মহাবিশ্বের প্রাণী প্রজাতির উদ্ভব হয়েছে একটি মাত্র পূর্বপুরুষ (Ancestor) থেকে। সেই এক পূর্বপুরুষ থেকে উদ্ভব হলেও বংশানুক্রমিক ধারায় প্রাকৃতিক নির্বাচন (Natural selection) ও জেনেটিক ড্রিফট (Genetic Drift) এর কারণে জিনগত পরিবর্তন হয়ে পৃথিবীতে এক বিশাল প্রাণী-বৈচিত্র তৈরি হয়েছে। কিন্তু এই তত্ত্বের কোন প্রমাণ আছে কি? নাকি এটি শুধুই কল্পনা।

এই তত্ত্ব যারা সমর্থন করেন তাড়া নানাভাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। এই তত্ত্বের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হল ফসিল (Fossil) প্রমাণ এবং হালের ডিএনএ (DNA) নির্ভর প্রমাণ।

সৃষ্টিবাদ ও বিবর্তনবাদের মধ্যে পার্থক্যঃ
সৃষ্টিবাদ অনুসারে জগতের বর্তমানের সব বস্তু সেই আদিতে সৃষ্ট জগতের বস্তুর অনুরূপ, কিছুই বদলায়নি। সৃষ্টিবাদ ও বিবর্তনবাদের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। সৃষ্টিবাদ বা সৃজনবাদ হলো ধর্মগ্রন্থের বিবরণ অনুযায়ী জীবন ও বিশ্বজগত সৃষ্টির ইতিহাসের উপর বিশ্বাস। নব্য পৃথিবী সৃজনবাদীগণ বাইবেলের জেনেসিসে বর্ণিত সৃষ্টিতত্ত্বকে সমর্থন করে বিবর্তনের বৈজ্ঞানিক তত্ত্বকে প্রত্যাখ্যান করে থাকেন। অন্যদিকে, বিবর্তন হলো এমন একটি জীববৈজ্ঞানিক ধারণা যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে জীবের গাঠনিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ক্রমপরির্তনকে বুঝায়।

২। সৃষ্টিবাদ অনুসারে কোনাে একটি শক্তি বা ঈশ্বর বিশেষ মুহূর্তে এ জগৎ সৃষ্টি করেছেন। অন্যদিকে, বিবর্তনবাদ অনুসারে, এ জগৎ কেউ সৃষ্টি করেননি, এ জগৎ ক্রমবিকাশের ফল।

৩। সৃষ্টিবাদ অনুসারে জগতের বর্তমানের সব বস্তু সেই আদিতে সৃষ্ট জগতের বস্তুর অনুরূপ, কিছুই বদলায়নি। অন্যদিকে, বিবর্তনবাদ অনুসারে জগতের প্রতিটি বস্তুই ক্রমবিকাশের ফল। ধীর পরিবর্তনের মাঝে বহু পর্যায় পেরিয়ে জগতের প্রত্যেকটি বস্তু বর্তমান রূপ পেয়েছে।

৪। সৃষ্টিবাদ অনুসারে ইশ্বর সৃষ্টির সময় এ বিশ্বজগৎ যেমনটি ছিলো, আজও তেমনটিই আছে। কোন পরিবর্তন হয়নি বা হতে পারে না। অন্যদিকে, বিবর্তনবাদের মূল কথাই হলো- পরিবর্তন। বিশ্ব সৃষ্টির পর থেকে ধীর গতিতে এর নানামুখী পরিবর্তন হয়েছে এবং এরূপ পরিবর্তন অব্যাহত গতিতে আজও এগিয়ে চলেছে।

৫। ধর্মীয় গ্রন্থসমূহ সৃষ্টিবাদকে সমর্থন করে। অন্যদিকে, বিজ্ঞান ও দর্শনে বিবর্তনবাদের অধিক সমর্থন রয়েছে।

৬। সৃষ্টিবাদ অনুসারে জগতের সাথে স্রষ্টার সম্পর্ক হলাে বাহ্যিক। অন্যদিকে, বিবর্তনবাদ অনুসারে বিবর্তন হলাে জগতের ধর্ম। বিবর্তনের সাথে জগৎক্রিয়ার সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে আন্তঃসম্পর্ক।

Exit mobile version