ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান দুটিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল। এই দুটি দলের মধ্যে দর্শন, নীতি এবং অগ্রাধিকারের দিক থেকে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। নিচে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান নীতির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (Democratic Party) :
মার্কিন রাজনীতিতে এই দলটি সামাজিক স্বাধীনতা ও উন্নয়নের প্রচলিত ধারণা নিয়ে কিছুটা বাম ঘরনের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রধান ভাবাদর্শ হলো সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা,কল্যাণময় রাষ্ট্রের দিকে মনোযোগী হওয়া।এই দলটির সরকারী নীতি সাধারণ জনগণের স্বার্থে হয়ে থাকে।এছাড়াও পরিবেশ সংরক্ষণ,শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা,সামাজিক স্বাধীনতা,সাধ্যের মধ্যে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা। সবার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চায়।
এ পর্যন্ত ১৫ জন ডেমোক্র্যাটস ১৬ প্রশাসনের অধীনে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন; প্রথম ৭ ম প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জ্যাকসন ,যিনি ১৮২৯ থেকে ১৮৩৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ত্ব পালন করেন।
রিপাবলিকান পার্টি (Republican Party) :
এই দলকে জিওপি(GOP) বা গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি হিসেবে অভিহিত করা হয়। প্রজাতন্ত্রের (রিপাবলিকানিজম) নামানুসারে এবং মার্কিন বিপ্লবের মূল্যবোধ থেকেই দলটির নামকরণ করা হয়। রিপাবলিকান পার্টির প্রধান ভাবাদর্শ হলো মার্কিন রক্ষণশীলতা নীতি।দলটির প্রধান কর্মপন্থা মূলত মুক্ত বাজার পুঁজিবাদ,শক্তিশালী প্রতিরক্ষা নীতি, বিনিনিয়ন্ত্রণ (অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অঙ্গরাজ্য সমূহের আইন লঘু করার পদ্ধতি) নীতি, সামাজিক সংরক্ষণশীলতা নীতি ( বিশেষ ভাবে গর্ভপাত এবং সমকামীদের বিবাহ বিরোধিতা) এবং ঐতিহ্যগত মার্কিন মূল্যবোধ। মুক্ত বাজার অর্থনীতির পক্ষপাতী, সরকারের হস্তক্ষেপ কমিয়ে আনতে চায়, কর কমানোর পক্ষপাতী। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসেবার ওপর জোর দেয়।
এ পর্যন্ত ১৯ জন প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান দলের থেকে নির্বাচিত হয়েছেন যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে আছেন রিপাবলিকান দল থেকে প্রথম নির্বাচিত হওয়া ১৬ তম মার্কিন রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিংকন যিনি ১৮৬১ সাল থেকে ১৮৬৫ সালে আততায়ীর হতে খুন হওয়ার আগ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি পদে নিয়োজিত ছিলেন।
ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান নীতির মধ্যে পার্থক্যঃ
১. মার্কিন রাজনীতিতে এই দলটি সামাজিক স্বাধীনতা ও উন্নয়নের প্রচলিত ধারণা নিয়ে কিছুটা বাম ঘরনের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। অন্যদিকে, রিপাবলিকান এই দলকে জিওপি(GOP) বা গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি হিসেবে অভিহিত করা হয়।
২. ডেমোক্র্যাটরা সরকারকে সামাজিক সমস্যা সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে চায়। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং মুক্ত বাজারকে গুরুত্ব দেয়।
৩. ডেমোক্র্যাটরা সামাজিক পরিবর্তনের পক্ষপাতী। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধকে ধরে রাখতে চায়।
৪. ডেমোক্র্যাটরা অর্থনীতির সমতা এবং সামাজিক নিরাপত্তায় জোর দেয়। অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং কর কমানোর পক্ষপাতী।
৫. ডেমোক্র্যাটরা পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষপাতী। অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকেও গুরুত্ব দেয়।
৬. ডেমোক্র্যাটরা সবার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চায়। অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসেবার ওপর জোর দেয়।