দেশী পাট:
পাটের একটি অতি মূল্যবান সম্পদ হলো নীল বীজ ক্যাপসুলারিজ পাট। একে সাদা ধবধবে পাটও বলা হয়। বেশ মিহি এর আঁশ। সে কারণে বেশ নমনীয়। আঁশের আকৃতিও বেশ লম্বা। এ পাট খানিকটা বেশি রোগ সংবেদনশীল। তবে এর অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলো অন্যান্য পাট জাতে সংযোজন করে নিতে পারলে তা পাট উন্নয়নের জন্য একটি ইতিবাচক ঘটনা হতে পারে। তাছাড়া এই পাটে রোগ প্রতিরোধী জিন সংযোজন করে নিতে পারলে এটি এমনিতেই পাট শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে গবেষকগণ মনে করেন।
তোষা পাট:
উদ্ভিদ বিদ্যায় তোষা পাটকে বলা হয় Corchorus olitorius । তোষা অন্যান্য সবগুলো জাত অপেক্ষা উন্নতমানের পাট। এর তন্তু সুক্ষ্ম ও মসৃণ, যথেষ্ট শক্তিসম্পন্ন,পরিষ্কার ও চকচকে এবং লম্বা । গোড়ায় কাটিং কম থকে। রং সোনালী, সোনালীলাল, বাদামী, তামাটে ধূসর হয়ে থাকে। আঁশের মধ্যে জালের পরিমান বেশী থাকে। বাংলাদেশে তোষা পাটই বেশী চাষ হয়
দেশী পাট ও তোষা পাটের মধ্যে পার্থক্য:
পাটের একটি অতি মূল্যবান সম্পদ হলো নীল বীজ ক্যাপসুলারিজ পাট। একে সাদা ধবধবে পাটও বলা হয়। দেশী পাট ও তোষা পাটের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। দেশী পাট গাছ ১.৫ থেকে ৩.৬ মিটার লম্বা হয়। বৃদ্ধির পরবর্তী ধাপে জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে। বীরুৎ জাতীয় একবর্ষজীবী, বপন কালের ওপর ভিত্তি করে মাঠে ৪-৫ মাস থাকে। অন্যদিকে তোষা পাট গাছ ১.৫ থেকে ৪.৫ মিটার লম্বা হয়। সাধারণভাবে জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। বীরুৎ জাতীয় একবর্ষজীবী, বপন কালের ওপর ভিত্তি করে ৪-৫ মাস মাঠে থাকে। আগাম বপন করলে অপরিনত বয়সে ফুল আসে
২। দেশী পাটের কান্ড নলাকার গাঢ় সবুজ থেকে গাঢ় লালের মাঝামাঝি বিভিন্ন মাত্রার রং বিশিষ্ট হয়। পরিপক্কতার বিভিন্ন পর্যায়ে কান্ডের গোড়ায় পেরিডার্মের বৃদ্ধি বিভিন্ন রকম হয়। কান্ড গোড়ার দিকে মোটা উপরের দিকে ক্রমশঃ সরু।অন্যদিকে তোষা পাটের কান্ড নলাকার, কান্ডের বর্ণ সবুজ অথবা হালকা লাল থেকে গাঢ় লাল, বর্ণের শেডগুলো Capsularis অপেক্ষা কম; পেরিডার্ম অনুপস্থিত বা সুগঠিত নয়। পরবর্তি পর্যায়ে লেন্টিসেল দেখা যায়। কান্ডের গোড়া দেশী পাটের ন্যায় ততটা মোটা নয়।
৩। দেশী পাটের পাতা তুলনাম লকভাবে ছোট, হালকা সবুজ বর্ণের, স্বাদে তিক্ত। অন্যদিকে তোষা পাটের পাতা তুলনাম লকভাবে বড়, বর্ণ গাঢ় সবুজ এবং স্বাদে তিক্ত নয়।
৪। দেশী পাটের ফুল ছোট, বৃতি হলুদ অথবা ফ্যাকাশে হলুদ, ডিম্বাশয় হলুদ অথবা ফ্যাকাশে হলুদ এবং গোলাকার। অন্যদিকে তোষা পাটের ফুল তুলনামুলকভাবে বড়, বৃতি সবুজ, পাপড়ি হলুদ, ডিম্বাশয় লম্বাটে।
৫। দেশী পাটের ফল গোলাকার, প্রতি দুই সারিতে ৮ থেকে ১০ টি করে বীজ থাকে। অন্যদিকে তোষা পাটের ফল লম্বাটে, প্রতি সারিতে ২৫ থেকে ৪০ টি বীজ থাকে।
৬। দেশী পাটের বীজ ছোট, চকলেট বাদামী বর্ণের, ৩০০ টি বীজের ওজন প্রায় ১ গ্রাম। অন্যদিকে তোষা পাটের বীজ তুলনামুলকভাবে বীজ ছোট, নীলাভ সবুজ থেকে ধূসর বর্ণ, তবে কখনো কখনো কাল বর্ণের হয়ে থাকে। ৫০০ টি বীজের ওজন ১ গ্রাম।