শিশির:
শিশির হল কোনো শীতল বস্তুর উপর জলীয় বাষ্প জমা হয়ে সৃষ্ট বিন্দু। একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বাতাস একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে। তাপমাত্রা বাড়লে যেমন ধারনক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি তাপমাত্রা কমলে ধারনক্ষমতা হ্রাস পায়। সাধারণত সন্ধার পরে তাপমাত্রা কমে যায় এবং বাতাস জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়ে থাকে। যদি তাপমাত্রা আরো কমে যায়, তখন বাতাস আর জলীয় বাষ্প ধরে রাখতে পারে না এবং তা শীতল বস্তুর উপর পানির কণা হিসেবে জমা হয়। এ পানির বিন্দু শিশির বিন্দু নামে পরিচিত (যেমন, ঘাসের উপর শিশির বিন্দু জমা হয়)।
কুয়াশা:
কুয়াশা হলো ভূমির সংস্পর্শে থাকা মেঘমালা। মেঘকেও আংশিকভাবে কুয়াশা বিবেচনা করা যায়, মেঘের যে অংশটুকু মাটির ওপরে বাতাসে ভাসমান থাকে তা কুয়াশা হিসেবে বিবেচিত নয়, তবে মেঘের ভূমির উঁচু অংশের সংস্পর্শে থাকা মেঘকে কুয়াশা বলা হয়। শীতের সময় তাপমাত্রা কম থাকে এবং মাটিতে থাকা আদ্রতা উপরে উঠে গিয়ে কুয়াশা তৈরি করে। এছাড়া ‘অ্যাডভেকশন ফগ’ বা মাটির তুলনায় বাতাস উষ্ণ এবং আদ্রতা বেশি থাকার কারণে যে কুয়াশা তৈরি হয়ে ভেসে বেড়ায়। কুয়াশা সাধারণত রাতে তৈরি হয় যখন বায়ু এমন একটি স্থানে শীতল হয় যেখানে ঘনত্ব পৌঁছে যায়।
শিশির এবং কুয়াশার মধ্যে পার্থক্য:
কুয়াশা হলো ভূমির সংস্পর্শে থাকা মেঘমালা। মেঘকেও আংশিকভাবে কুয়াশা বিবেচনা করা যায়। শিশির এবং কুয়াশার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। শিশির রাতে ফর্ম এবং সকালে পাতা, ঘাস, পাতাগুলি বা ধাতব উপরিভাগে ঘনীভবন হিসাবে উপস্থিত হয়। অন্যদিকে রাতে কুয়াশা গঠন করে এবং সকালে ঘন মেঘের কাছাকাছি বা মাটির নিকটে উপস্থিত হয়।
২। শিশির তাপমাত্রা বিপর্যয় বা আর্দ্রতার পরিবর্তনের কারণে স্থলভাগের স্থলভাগে বায়ুমণ্ডলে স্থলিত ছোট জলের ফোটা থেকে তৈরি মেঘকে অবিশ্বাস্য বোঝায়। অন্যদিকে কুয়াশা বোঝাচ্ছে একটি ঘন নিম্ন-নিচু মেঘ, যা পৃষ্ঠের স্তরে উপস্থিত হয়, যা ছোট জলের গ্লোবুলগুলি দিয়ে তৈরি হয়, যা বাতাসে স্থগিত থাকে।
৩। কুয়াশার ঘনত্ব বেশি। অন্যদিকে কুয়াশার থেকে শিশিরের ঘনত্ব তুলনামূলকভাবে কম।
৪। শিশিরের দৃষ্টিপাত এক কিলোমিটারেরও বেশি সীমাবদ্ধ। অন্যদিকে কুয়াশার দৃষ্টিপাত প্রায় এক কিলোমিটার সীমাবদ্ধ।
৫। শিশির অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। জন্যদিকে কুয়াশা দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থায়ী হয়।