ব্যাপন:
একই তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলীয় চাপে কোনো পদার্থের অধিকতর ঘন স্থান থেকে কম ঘন স্থানে বিস্তার লাভ করার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে। যেমন – ঘরের এক কোণে সেন্টের বোতল খোলা মুখে রাখলে তার থেকে সেন্টের সুগন্ধ পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে, এটি হলো গ্যাসীয় পদার্থের ব্যাপন। আবার তরল পানিতে কয়েক ফোটা তরল নীল বা তুঁতের দ্রবণ মেশানো হলে তা কিছুক্ষনের মধ্যেই পুরো পানিকে নীল বর্ণে পরিণত করে, এটিও ব্যাপনের উদাহরণ তবে তরল পদার্থের ৷
নিঃসরণ:
সরু ছিদ্রপথে কোনো গ্যাসের অণুসমূহের উচ্চ চাপের স্থান থেকে নিম্মচাপের স্থনের দিকে সজোরে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়াকে নিঃসরণ বলে। যেমন আমরা এরোসল, বডি স্পে ব্যবহারের সময় এগুলোর ক্যানের মাথায় চাপ দিই। এতে এরোসল, বডি স্পে সরু ছিদ্রপথে সজোরে বেরিয়ে আসে। এ ভাবে সজোরে বেরিয়ে আসাটাই নিঃসরণ।
বিভিন্ন ফল পাকলে যে সুগন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে ফলত্বকের ক্ষুদ্র ছিদ্র দিয়ে নিঃসরণ প্রক্রিয়ায় ফলের গন্ধ বাইরে বেরিয়ে আসে। এরপর ফলের গন্ধ ব্যাপন প্রক্রিয়ায় চারিদিকে ছড়িয়ে পরে।
ব্যাপন ও নিঃসরণের মধ্যে পার্থক্য:
নিঃসরণের ক্ষেত্রে পাত্রের ভিতর অধিকচাপ এবং পাত্রের বাহিরে কম চাপ থাকে। ব্যাপন ও নিঃসরণের মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-
১। সাধারণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে অনুসমূহের স্বতঃস্ফূর্ত মন্থর প্রক্রিয়া হল ব্যাপন। অন্যদিকে নিঃসরণ হলো অধিক চাপের প্রভাবে গ্যাসীয় দ্রুত প্রক্রিয়া।
২। ব্যাপন এর ক্ষেত্রে পাত্রের ভিতর ও বাহিরে চাপ একই থাকে। অন্যদিকে নিঃসরণের ক্ষেত্রে পাত্রের ভিতর অধিকচাপ এবং পাত্রের বাহিরে কম চাপ থাকে।
৩। ব্যাপন দীর্ঘসময় স্থায়ী হয়। অন্যদিকে নিঃসরণ স্বল্প সময় স্থায়ী হয়।
৪। ব্যাপন হচ্ছে ধীর প্রক্রিয়া। অন্যদিকে নিঃসরণ হচ্ছে দ্রুত প্রক্রিয়া।
৫। ব্যাপন একটি স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়া। অন্যদিকে নিঃসরণ একটি স্বতঃস্ফূর্ত নয়।
৬। ব্যপনের ক্ষেত্রে চাপের প্রভাব নেই। অন্যদিকে নিঃসরণের ক্ষেত্রে চাপের প্রভাব আছে।
রসায়ন সংক্রান্ত আরো পার্থক্য পড়ুনঃ Chemistry
আরোও পার্থক্য পড়ুনঃ যোগান রেখা ও সূচির মধ্যে পার্থক্য, স্বাধীন চলক ও অধীন চলকের মধ্যে পার্থক্য, একমাত্রিক ও দ্বিঘাত অপেক্ষকের মধ্যে পার্থক্য, মুদ্রাস্ফীতি এবং অপসারণের মধ্যে পার্থক্য, কৌণিক বেগ ও রৈখিক বেগের মধ্যে পার্থক্য,