সরণঃ
কোনো বস্তু বা বিন্দু একটি অবস্থান থেকে আরেকটি অবস্থানে স্থানান্তরিত হলে, প্রথম অবস্থান থেকে দ্বিতীয় অবস্থান অবধি ভেক্টরকে সরণ বলে। সরণের পরিমাণ হলো দুটি অবস্থানের মধ্যবর্তী ন্যূনতম দূরত্ব, অর্থাৎ সরলরৈখিক দূরত্ব এবং সরণের দিক প্রথম অবস্থানটি থেকে দ্বিতীয় অবস্থানটির দিকে। যদি বস্তুটি সর্পিল গতিতে প্রথম অবস্থান থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে যায়, তাহলে অতিক্রান্ত দূরত্ব সরণের থেকে দৈর্ঘ্যে বেশি। সরণকে s দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
ধরা যাক, একটি গতিশীল বস্তু A বিন্দু থেকে যাত্রা শুরু করে ACB বা ADB বা AEB বা AFB পথে চলে B বিন্দুতে এসে থেমেছে। বস্তুকণাটি B বিন্দুতে পৌঁছাতে যে পথ অনুসরণ করুক না কেন তার প্রথম ও শেষ অবস্থান বিন্দুর মধ্যবর্তী সরল রৈখিক দূরত্ব হবে গতিশীল বস্তুর সরণ এর পরিমান। অর্থাৎ যে রাস্তা দিয়েই হোক না কেন কোন বস্তুর যাত্রা শুরুর বিন্দু এবং যাত্রা শেষ বিন্দু সরলরেখা দ্বারা যোগ করলে যে দূরত্ব পাওয়া যায়, সেটি হলো বস্তুর সরণ।
দূরত্বঃ
কোনাে সচল বস্তুকণা যে পথে চলে সেই পথের মোট প্রকৃত দৈর্ঘ্যকে দূরত্ব বলে । দূরত্ব একটি স্কেলার রাশি, এর কোনাে অভিমুখ নেই । দূরত্বের পরিবর্তন হয় শুধু মানের পরিবর্তন দ্বারা। যেকোনো দিকে পারিপার্শিকের সাপেক্ষে বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তনকে দূরত্ব বলে।
ধরি , অতিক্রান্ত দুরত্ব = AB + BC = 4 মি + 3 মি = 7 মি ।
সরণ ও দূরত্বের মধ্যে পার্থক্যঃ
১। কোনো গতিশীল বস্তুর নির্দিষ্ট দিকে আদি ও শেষ অবস্থানের নূন্যতম সরলরৈখিক দূরত্ব কে সরন বলে। কোনো গতিশীল বস্তুর যেকোনো দিকে আদি ও শেষ অবস্থানের পার্থক্য কে দূরত্ব বলে।
২। সচল বস্তুকণার প্রাথমিক ও শেষ অবস্থানের মধ্যে যে রৈখিক দূরত্ব তাই হল সরণের মান । অন্যদিকে দূরত্ব হল বস্তুকণা যে পথে যায় সেই পথের দৈর্ঘ্য ।
৩। সরণ একটি ভেক্টর রাশি। অন্যদিকে দূরত্ব একটি স্কেলার রাশি ।
৪। দূরত্বের পরিবর্তন হয় শুধু মানের পরিবর্তন দ্বারা, অপরদিকে সরণের পরিবর্তন হয় শুধু মান বা শুধু দিক বা উভয়ের পরিবর্তন দ্বারা।
৫। সরণ শুন্য হলে অতিক্রান্ত দূরত্ব শূন্য নাও হতে পারে। অপরদিকে অতিক্রান্ত দূরত্ব শূন্য হলে সরণ সর্বদা শূন্য হবে।