দোয়া ও মোনাজাতের মধ্যে পার্থক্য

দোয়া ও মোনাজাত এ দুটি শব্দের মধ্যে ব্যবহারগত দিক থেকে তেমন পার্থক্য নেই। কিন্তু শাব্দিক দিক থেকে পার্থক্য আছে। দোয়া ও মোনাজাতের মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-

ব্যবহারগত দিক বলতে বোঝায়, দোয়াটা আরবি শব্দ এবং দোয়াই মূলত শরিয়ত অনুযায়ী সঠিক শব্দ। আমাদের আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন, ‘তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব।’ এখানে দোয়া শব্দটি এসেছে।

তাই কোরআনে কারিমের মধ্যে মূলত যে শব্দটি এর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা হচ্ছে দোয়া। দোয়াটাই মূলত এখানে প্রযোজ্য শব্দ। আর এই দোয়াকে খুব সহজে বোঝানোর জন্য উর্দু ভাষায় মোনাজাত ব্যবহার করা হয়। মোনাজাত শব্দের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে কানে কানে কথা বলা, চুপিচুপি কথা বলা এবং এই কানে কানে কথা বলাটা দুজনের মধ্যে হতে হবে। এ জন্য এ শব্দটি মূলত মুফাআলা থেকে আরবি ভাষায় ব্যবহৃত হয়েছে।

মুফাআলা বলা হয়ে থাকে যেখানে মুশারাকা থাকে। অর্থাৎ একজনের সঙ্গে আরেকজনের শেয়ারিং বা অংশগ্রহণ থাকে। অংশগ্রহণ যেখানে নেই, সেখানে মুশারাকা হয় না।

তাই মোনাজাতের মধ্যে অংশগ্রহণ হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার। বান্দা গোপনে বা চুপিচুপি অথবা কানে কানে যে কথা বলবে, সেটি মোনাজাত হবে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে এই শব্দ খুব বেশি উপযুক্ত বা যথার্থ নয়। কারণ, এই ধারণা এখানে ব্যবহৃত হয় না।

তাই মোনাজাত ও দোয়া এ দুই শব্দের পারিভাষিক দিক থেকে দোয়াটাই হচ্ছে উপযুক্ত শব্দ। কারণ, দোয়ায় আমরা কানে কানে কথা বলি না, আল্লাহর কাছে হাত তুলে প্রার্থনা করি। এই অর্থে দোয়া ও মোনাজাতের মধ্যে উপযুক্ত হচ্ছে দোয়া শব্দটিই। তবে এখানে যে পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে এ পরিভাষা যদি কেউ মনে না করেন এবং তিনি দোয়া অর্থেই মোনাজাত শব্দকে প্রয়োগ করেন, তাহলে এই প্রয়োগের মধ্যে ব্যবহারগত কারণে এদের মধ্যে কোনো পার্থক্য হবে না এবং তা ভুল হবে না।