এনজাইম (Enzyme):
উৎসেচক বা এনজাইম (enzyme) হচ্ছে এক প্রকার জৈব অনুঘটক (organic catalyst)। গঠনগতভাবে এটি প্রোটিন জাতীয় পদার্থ। জীবদেহে এমন কিছু প্রোটিন অণু সৃষ্টি হয় যার কাজ হলো দেহের জরুরি কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়াকে দ্রুততর করা, এই অণুগুলোকে বলা হয় এনজাইম। ব্যতিক্রম রাইবোজাইম (ribozyme) এবং ডিএনএজাইম যেখানে যথাক্রমে আরএনএ ও ডিএনএ উৎসেচক (এনজাইম) হিসাবে কাজ করে।এনজাইম পরিপাকে, বিপাকে, স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহনে সাহায্য করে।
আন্তর্জাতিক প্রাণরাসায়ন ও অণু জীববিজ্ঞান সম্মিলনের (IUBMB) নামকরণ কমিটি উৎসেচকদের ছয়টি প্রধান ভাগে ভাগ করে ছটি ইসি নম্বর নির্দিষ্ট করেন ও প্রত্যক উৎসেচককে চারটি সংখ্যা দিয়ে সঠিক ভাবে চিহ্নিত করার প্রথা প্রচলন করে।
প্রোটিন (Protein):
প্রোটিন (Protein) হলো অ্যামিনো এসিড দিয়ে তৈরি, যা কোষের “বিল্ডিং ব্লকস” হিসাবে কাজ করে। প্রেটিন শরীরে অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যেমন: প্রোটিন কোষগুলিতে বেশিরভাগ কাজ করে এবং দেহের টিস্যু এবং অঙ্গগুলির গঠন, কার্যকারিতা এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি খুবই প্রয়োজনীয়। মাংস, মাছ, হাঁস-মুরগি, ডিম, শিং এবং দুগ্ধজাত খাবারের মতো অনেক খাবারেই প্রোটিন পাওয়া যায়। প্রোটিন সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা জানি খাদ্যের ছয়টি উপাদান রয়েছে তার মধ্যে প্রোটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন ছাড়া কোনো প্রাণীর অস্থিত্ব কল্পনা করা সম্ভব নয়।তাই পুষ্টিবিজ্ঞানে প্রোটিনকে সকল প্রাণের প্রধান উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয়। সব প্রোটিনই কার্বন,হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন দিয়ে গঠিত। প্রোটিনকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভাঙলে প্রথমে এমাইনো এসিড পরে কার্বন,হাইড্রোজেন ইত্যাদি মৌলিক পদার্থ পাওয়া যায়।
উৎসগত দিক দিয়ে প্রোটিন দুই ধরণের যথাঃ১.উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। যে প্রোটিনগুলো উদ্ভিদ জগৎ থেকে পাওয়া যায় তাকে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বলে। ও ২.প্রাণীজ প্রটিন। যে প্রোটিন গুলো প্রাণী জগৎ থেকে পাওয়া যায় তাকে প্রাণীজ প্রোটিন বলে।
এনজাইম এবং প্রোটিনের মধ্যে পার্থক্য:
উৎসেচক বা এনজাইম (enzyme) হচ্ছে এক প্রকার জৈব অনুঘটক (organic catalyst)। গঠনগতভাবে এটি প্রোটিন জাতীয় পদার্থ। এনজাইম এবং প্রোটিনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। একটি এনজাইম একটি জীবানু দ্বারা উত্পাদিত পদার্থকে বোঝায় যা নির্দিষ্ট জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া আনতে অনুঘটক হিসাবে কাজ করে।
অন্যদিকে একটি প্রোটিন নাইট্রোজেনাস জৈব যৌগের একটি শ্রেণিকে বোঝায়, যার এক বা একাধিক দীর্ঘ শৃঙ্খল দ্বারা গঠিত বড় অণু থাকে অ্যামিনো অ্যাসিড এবং সমস্ত জীবের একটি প্রয়োজনীয় অঙ্গ, বিশেষত শরীরের টিস্যুর কাঠামোগত উপাদান যেমন পেশী, চুল ইত্যাদি, এবং এনজাইম এবং অ্যান্টিবডি হিসাবে।
২। এনজাইমগুলি এক ধরণের প্রোটিন। অন্যদিকে প্রোটিনগুলি দেহের এক প্রকার ম্যাক্রোমোকলিকুল।
৩। এনজাইমগুলি গ্লোবুলার প্রোটিন। অন্যদিকে প্রোটিনগুলি হয় গ্লোবুলার বা তন্তুযুক্ত প্রোটিন।
৪। এনজাইমগুলি তাদের ফাংশনের উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। অন্যদিকে প্রোটিনগুলি তাদের রাসায়নিক রচনার ভিত্তিতে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
৫। এনজাইমগুলির প্রধান কাজটি হলো জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়াকে অনুঘটক করা। অন্যদিকে প্রোটিনগুলি কাঠামো গঠন করে, জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়াকে অনুঘটক করে তোলে এবং জৈবিক প্রক্রিয়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৬। এনজাইমগুলো কার্যকরী প্রোটিন। অন্যদিকে প্রোটিন কার্যকরী বা স্ট্রাকচারাল হতে পারে।