Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

নিরক্ষরেখা ও মূল মধ্যরেখার মধ্যে পার্থক্য

নিরক্ষরেখা ও মূল মধ্যরেখার

নিরক্ষরেখা ও মূল মধ্যরেখা দুটি কাল্পনিক রেখা যা পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠকে ভাগ করে। নিরক্ষরেখা পৃথিবীকে উত্তর গোলার্ধ ও দক্ষিণ গোলার্ধে ভাগ করে, অন্যদিকে মূল মধ্যরেখা পৃথিবীকে পূর্ব গোলার্ধ ও পশ্চিম গোলার্ধে ভাগ করে। নিরক্ষরেখা ও মূল মধ্যরেখার মধ্যে পার্থক্য বিশেষ বিশেষ কিছু পার্থক্য রয়েছে। নিচে নিরক্ষরেখা ও মূল মধ্যরেখার মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়েছে-

নিরক্ষরেখা (Equator) :
নিরক্ষরেখা বা বিষুবরেখা বলতে কোন গ্রহের মেরুগুলো থেকে সমান দূরে অবস্থিত গ্রহপৃষ্ঠ প্রদক্ষিণকারী একটি কাল্পনিক বৃত্তকে বোঝায়। সহজ ভাষায় এটি একটি কাল্পনিক রেখা যা পৃথিবীর মাঝ বরাবর এবং উত্তর মেরু এবং দক্ষিণ মেরু থেকে দুরত্বে কল্পনা করা হয় এবং যা পৃথিবীকে দক্ষিণ গোলার্ধ এবং উত্তর গোলার্ধে ভাগ করে।এই রেখাটির মান ০ ডিগ্রি। একে বিষুবীয় রেখাও বলা হয়।

যেহেতু পৃথিবী সূর্যের সন্মুখে 66½ ডিগ্রী কোন করে প্রদক্ষিণ করে তাই,সূর্য সর্বদা নিরক্ষরেখা/বিষুবরেখার উপর অবস্থান করে না। মার্চ থেকে শুরু করে জুন পর্যন্ত সূর্য উত্তর গোলার্ধে অবস্থান করে। সেই সময় উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্ম ঋতু দেখা যায়,এরপর ধীরে ধীরে পৃথিবী প্রদক্ষিণের ফলে দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্যের সামনে আসে। অর্থাৎ জুন মাসের পর থেকে সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধের দিকে অগ্রসর হয়, বিষুবরেখা কে অতিক্রম করে।

মূল মধ্যরেখা (Prime Meridian) :
মূল মধ্যরেখা হল পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিমে চলে যাওয়া একটি কাল্পনিক রেখা। মূল মধ্যরেখা ভৌগোলিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার একটি মধ্যরেখা (দ্রাঘিমাংশের একটি রেখা), যাকে ০° দ্রাঘিমাংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মূল মধ্যরেখা এবং তার বিপরীত মধ্যরেখা (৩৬০°-পদ্ধতিতে ১৮০ তম মধ্যরেখা) মিলিতভাবে একটি মহাবৃত্ত গঠন করে। এই মহাবৃত্ত পৃথিবীকে দুটি গোলার্ধে বিভক্ত করে। মধ্যরেখা গুলোর অবস্থান মূল মধ্যরেখার সাপেক্ষে বিবেচনা করা হলে তাদের অবস্থানের ভিত্তিতে পূর্ব গোলার্ধ এবং পশ্চিম গোলার্ধ এই দুভাগে ভাগ করা যায়।

নিরক্ষরেখা ও মূল মধ্যরেখার মধ্যে পার্থক্যঃ
১. সুমেরু এবং কুমেরু বিন্দুদ্বয় থেকে সমান দূরে পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টিত পূর্ণ বৃত্তাকার কল্পিত রেখাকে বিষুবরেখা বা নিরক্ষরেখা বলে। অন্যদিকে, পৃথিবীর কোনো স্থানের পূর্ব-পশ্চিমের অবস্থান সুনির্দিষ্ট করতে ইংল্যান্ডের গ্রিণিচ শহরের উপর দিয়ে সুমেরু থেকে কুমেরু পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত কল্পিত রেখাকে মূল মধ্যরেখা বলে।

২. নিরক্ষরেখা হল পৃথিবীর কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে চলে যাওয়া একটি কাল্পনিক রেখা। অন্যদিকে, মূল মধ্যরেখা হল পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিমে চলে যাওয়া একটি কাল্পনিক রেখা।

৩. নিরক্ষরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় 40,075 কিলোমিটার। নিরক্ষরেখার উপরে সূর্যের আলো সরাসরি পড়ে বলে এখানে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য সমান হয়। অন্যদিকে, মূল মধ্যরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় 20,000 কিলোমিটার। মূল মধ্যরেখা থেকে পূর্ব দিকের স্থানাঙ্ককে পূর্ব দ্রাঘিমাংশ এবং পশ্চিম দিকের স্থানাঙ্ককে পশ্চিম দ্রাঘিমাংশ বলা হয়।

৪. নিরক্ষরেখা হলো সীমার মধ্যবর্তী রেখা যেটি সেই সীমার দুই পাশের দুটি বিন্দুতে একই দূরত্ব থাকে এবং মূল মধ্যরেখা হলো একটি কোণের মধ্যবর্তী রেখা যেটি সেই কোণটির দুই পাশের দুটি বিন্দুতে একই অনুপাতে বিভক্ত হয়।

৫. নিরক্ষরেখার স্থানাঙ্ক নিরক্ষরেখার উপরে অক্ষাংশ 0°। অন্যদিকে, মূল মধ্যরেখার উপরে দ্রাঘিমাংশ 0°।

Exit mobile version