অনুরূপতা সম্বন্ধের বিষয় হচ্ছে দু’টি- একটি হলো বিবৃতি বা বিশ্বাস, অপরটি হলো বাস্তবাবস্থা। এখানে বিশ্বাস ও বিবৃতি বলতে কোন ক্রিয়াকে বোঝায় না বরং বিশ্বাসের বিষয়কে বোঝায়। আর সেটি হলো বচন। বচনই হলো অনুরূপতা সম্বন্ধের প্রথম বিষয়। বাস্তবাবস্থাও অনুরূপতা সম্বন্ধের আরেকটি বিষয়। অবশ্য বাস্তবাবস্থা বলতে কী বোঝায় তা নিয়ে অনুরূপতাবাদীদের মধ্যে মত পার্থক্য রয়েছে। তবে বাস্তব অবস্থা শব্দটিকে ঘটনা শব্দটির সাথে দৈনন্দিন জীবনে আমরা যেভাবে গুলিয়ে ফেলি তা থেকেই সমস্যাটি তৈরি হয়। এ জন্য বাস্তবাস্থার সাথে ঘটনার পার্থক্যকে বুঝতে হবে এবং মনে রাখতে হবে এ দুটি এক বিষয় নয়।
ঘটনা ও বাস্তবাবস্থার মধ্যে পার্থক্যঃ
বাস্তব অবস্থা শব্দটিকে ঘটনা শব্দটির সাথে দৈনন্দিন জীবনে আমরা যেভাবে গুলিয়ে ফেলি। উভয়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। নিচে ঘটনা ও বাস্তবাবস্থার পার্থক্য তুলে ধরা হলো-
১. ঘটনা সবসময়ই কাল সাপেক্ষ। ঘটনা মানেই তা একটি স্থানে ও কালে ঘটে। তাই ঘটনার জন্য স্থান, কাল ও ব্যাপ্তি অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য। অন্যদিকে, বাস্তবাবস্থার জন্য এ তিনটির কোনটিই লাগে না তা সব সময় বর্তমান কালের ক্রিয়ায় আমরা প্রকাশ করি।
২. ঘটনা মানেই তা কোন একক বা বিচ্ছিন্ন বিষয় সাপেক্ষ। অন্যদিকে, বাস্তব অবস্থা দ্বারা আমরা কোন একক ব্যাপারকে নির্দেশ করি না তাই এটা তার অপরিহার্য বৈশিষ্ট্যও নয়।
৩. বাস্তবাস্থার মাঝে একটি সার্বিক ও অনিবার্য সম্পর্ক রয়েছে, যা ঘটনার বেলায় প্রযোজ্য নয়। আর এখানেই ঘটনা ও বাস্তবাবস্থা এর বড় পার্থক্য।
৪. ঘটনা হল একটি নির্দিষ্ট সময়ে ও স্থানে সংঘটিত একটি ঘটনা, যেটি সাধারণত অপ্রত্যাশিত ও আকস্মিক হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি ভূমিকম্প, একটি দুর্ঘটনা, বা একটি জন্ম। ঘটনাগুলি সাধারণত সংক্ষিপ্ত হয় এবং এর কোনও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব থাকে না।
অন্যদিকে, বাস্তবাবস্থা হল একটি পরিবেশ বা অবস্থা যা দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী হয়। বাস্তবাবস্থাগুলি সাধারণত জটিল এবং বিভিন্ন উপাদান দ্বারা প্রভাবিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা, বা একটি পরিবেশগত ব্যবস্থা। বাস্তবাবস্থাগুলি দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে এবং এগুলি পরিবর্তন করতে সময় লাগে।