বহিঃশ্বসন ও অন্তঃশ্বসন এর পার্থক্য

বহিঃশ্বসনঃ

যে যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রাণীদেহে শ্বাসঅঙ্গ ও পরিবেশের বায়ুর মধ্যে গ্যাসীয় আদানপ্রদান ঘটে তাকে বহিঃশ্বসন বলে। অন্যভাবে বলা যে, প্রক্রিয়ায় ফুসফুসের মধ্যে গ্যাসীয় আদান-প্রদান ঘটে তাকে বহিঃশ্বসন বলে। এ পর্যায়ে ফুসফুস ও রক্ত জালিকা বা কৈশিক নালীর মধ্যে অক্সিজেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের বিনিময় ঘটে। বহিঃশ্বসন দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়। যথা –

১। প্রশ্বাস বা শ্বাস গ্রহণ
২। নিঃশ্বাস

অন্তঃশ্বসনঃ

অন্তঃশ্বসন প্রক্রিয়ায় দেহকোষস্থ খাদ্য অক্সিজেনের সাহায্যে জারিত হয়ে গতিশক্তি ও তাপশক্তিতে পরিণত হয়। যে প্রক্রিয়ায় ফুসফুসের গহবরের ভিতরের বায়ুথলি বা অ্যালভিওলাই সমূহের বাতাস এবং এদের গাত্রস্থিত কৈশিক নালীসমূহের রক্তের মধ্যে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড-এর বিনিময় ঘটে এবং খাদ্য জারণ প্রক্রিয়াকালে শক্তি উৎপন্ন হয়; তাকে অন্তঃশ্বসন বলে। অন্তঃশ্বসন প্রক্রিয়া ৩টি উপ-পর্যায়ে ঘটে থাকে;
যথা-

১. অক্সিজেন পরিবহন;
২. গ্লুকোজের জারণ ও শক্তি উৎপাদন;
৩. কার্বন ডাই-অক্সাইড পরিবহণ।

বহিঃশ্বসন ও অন্তঃশ্বসন এর পার্থক্য:

অন্তঃশ্বসন প্রক্রিয়ায় দেহকোষস্থ খাদ্য অক্সিজেনের সাহায্যে জারিত হয়ে গতিশক্তি ও তাপশক্তিতে পরিণত হয়। বহিঃশ্বসন ও অন্তঃশ্বসন এর পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। বহিঃশ্বসন একটি ভৌত প্রক্রিয়া। অন্যদিকে অন্তঃশ্বসন একটি জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া।

২। বহিঃশ্বসন কোষের বাইরে ঘটে। অন্যদিকে অন্তঃশ্বসন কোষের মধ্যে ঘটে।

৩।বহিঃশ্বসন এ পরিবেশ থেকে O2 শ্বসনাঙ্গে প্রবেশ করে এবং CO2 শ্বসনাঙ্গের বাইরের পরিবেশে মুক্ত হয়। অন্যদিকে অন্তঃশ্বসন এ কোষমধ্যস্থ খাদ্যসার O2 দ্বারা জারিত হয়ে শক্তি, পানি ও CO2 তৈরি করে।

৪।বহিঃশ্বসন এ এনজাইমের কোনো ভূমিকা নেই। অন্যদিকে অন্তঃশ্বসন এ এনজাইমের ভূমিকা রয়েছে।

৫। বহিঃশ্বসন এ শক্তি উৎপন্ন হয় না। অন্যদিকে অন্তঃশ্বসন এ নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়।