কারক ও বিভক্তির মধ্যে পার্থক্য

বিভক্তি

বাক্যের একটি শব্দের সঙ্গে আরেকটি শব্দের সম্পর্ক স্থাপনের জন্য শব্দগুলোর সঙ্গে কিছু শব্দাংশ যুক্ত করতে হয়। এই শব্দাংশগুলোকে বলা হয় বিভক্তি।

    মা শিশু চাঁদ দেখা।

উপরের বাক্যটিতে কোন শব্দের সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত করা হয়নি। ফলে বাক্যের শব্দগুলোর মধ্যে কোন সম্পর্ক সৃষ্টি হয়নি, এবং এগুলো বাক্যও হয়ে উঠতে পারেনি। এখন শিশু’র সঙ্গে কে বিভক্তি আর দেখা’র সঙ্গে চ্ছেন’ বিভক্তি যোগ করলে বাক্যটি হবে-

মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।

বাংলা শব্দ বিভক্তি সাত প্রকার:

→ বিভক্তি — একবচন

→ প্রথমা — ০

→ দ্বিতীয়া — কে, রে

→ তৃতীয়া — দ্বারা, দিয় (দিয়ে), কর্তৃক

→ চতুর্থী — কে, রে

→ ৫মী — হইতে, থেক চেয়ে, হতে

→ ষষ্ঠী — র, এর

→ সপ্তমী — তে, এ, য়

কারক

বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে নামপদের সম্পর্ককে কারক বলে। অর্থাৎ, বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে অন্যান্য পদের যে সম্পর্ক, তাকে কারক বলে।কারক ৬ প্রকার-

১. কর্তৃকারক

২. কর্মকারক

৩. করণকারক

৪. সম্প্রদান কারক

৫. অপাদান কারক

৬. অধিকরণ কারক

কারক ও বিভক্তির মধ্যে পার্থক্যঃ

১। বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে অন্যান্য পদের যে সম্পর্ক, তাকে কারক বলে। অপরদিকে বাক্যের একটি শব্দের সঙ্গে আরেকটি শব্দের সম্পর্ক স্থাপনের জন্য শব্দগুলোর সঙ্গে কিছু শব্দাংশ যুক্ত করতে হয়। এই শব্দাংশগুলোকে বলা হয় বিভক্তি।

২ । কারক হল বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের সঙ্গে ক্রিয়াপদের সম্পর্ক। অপরদিকে বিভক্তি হল সেই সম্পর্কের নির্মাণকারী। বিভক্তি হল এক ধরনের ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছ, যা শব্দ বা ধাতুকে পদে পরিণত করে।

৩। বিভক্তি প্রধানত দুই প্রকার। অপরদিকে কারক প্রধানত ছয় প্রকার।

৪। মৌলিক বাংলা শব্দ বিভক্তিগুলো হলো- শূণ্য বিভক্তি (০), এ, য়, তে, কে, রে, র(এর)। তবে এছাড়াও কিছু কিছু অব্যয় শব্দ কারক সম্বন্ধ নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলো হলো- দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক, হতে, থেকে, চেয়ে, ইত্যাদি। অপরদিকে কারক নির্ণয়ের উপায় হলো ক্রিয়াকে_প্রশ্ন করে যথাঃ কে, কারা, কী, কাকে, কী দিয়ে, কাকে দান করা হল?, কি হতে বের হল?, কোথায়, কখন, কী বিষয়ে?