অগ্রগামী তরঙ্গ ও স্থির তরঙ্গের মধ্যে পার্থক্য

অগ্রগামী তরঙ্গঃ

কোন তরঙ্গ যদি কোন বিস্তৃত মাধ্যমের এক স্তর হতে অন্য স্তরে সঞ্চালিত হয়ে ক্রমাগত সম্মুখের দিকে অগ্রসর হতে থাকে, তবে তাকে অগ্রগামী বা চলমান তরঙ্গ বলে। তরঙ্গ এর মত অগ্রগামী তরঙ্গ দুই প্রকারের। অগ্রগামী আড় তরঙ্গ ও অগ্রগামী লম্বিক তরঙ্গ।

অগ্রগামী তরঙ্গ যদি তরঙ্গ এর গতির অভিমুখে সমকোণে কম্পিত হয় তবে তা অগ্রগামী আড় বা অগ্রগামী অনুপ্রস্থ তরঙ্গ। আবার কম্পন যদি গতির অভিমুখের সমান্তরালে কম্পিত হয় তবে সেই তরঙ্গ অগ্রগামী লম্বিক বা অগ্রগামী অনুপ্রস্থ তরঙ্গ। অগ্রগামী তরঙ্গের সাধারণ সমীকরনগুলো হলো-

y = a sin (ωt – 2πx/λ)
y = a sin2π/λ (vt – x) (অগ্রগামী তরঙ্গ x অক্ষের ধনাত্মক দিকে হলে এ সমীকরণটি প্রযোজ্য। ঋণাত্মক দিকে হলে (vt – x) এর স্থলে (vt + x) বসবে)

স্থির তরঙ্গঃ

একই রকম দুটি তরঙ্গ বিপরীত দিক থেকে সমভাবে অগ্রসর হয়ে একে অপরের উপর আপতিত হলে যে তরঙ্গের উদ্ভব হয় তাকে স্থির তরঙ্গ বলে। তরঙ্গের দোলনগুলির শীর্ষ বিস্তারগুলি স্থানের যেকোনও বিন্দুতে সময়ের সাথে অপরিবর্তনশীল থাকে এবং তরঙ্গের ব্যাপ্তি জুড়ে এর বিভিন্ন বিন্দুতে দোলনগুলি একই দশায় বিরাজ করে।

যেসমস্ত অবস্থানে তরঙ্গের বিস্তারের পরম মান ন্যূনতম বা সর্বনিম্ন হয়, সেগুলিকে নিস্পন্দ বিন্দু বা গ্রন্থি বলে। এর বিপরীতে যেসব অবস্থানে তরঙ্গের বিস্তারের পরম মান সর্বোচ্চ হয়, সেগুলিকে প্রতিনিস্পন্দ বিন্দু বা প্রতিগ্রন্থি বলে।

অগ্রগামী তরঙ্গ ও স্থির তরঙ্গের মধ্যে পার্থক্যঃ

দুটি তরঙ্গ বিপরীত দিক থেকে সমভাবে অগ্রসর হয়ে একে অপরের উপর আপতিত হলে যে তরঙ্গের উদ্ভব হয়। অগ্রগামী তরঙ্গ ও স্থির তরঙ্গের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। অগ্রগামী তরঙ্গের সকল কণাই পর্যাবৃত্ত গতি লাভ করে। অন্যদিকে স্থির তরঙ্গের নিস্পন্দ বিন্দুর কণাগুলাে ছাড়া অন্যান্য সব কণাই পর্যাবৃত্ত গতি লাভ করে।

২। অগ্রগামী তরঙ্গের কণাগুলাে কখনাে স্থির; কিন্তু তাদের ভিতর দশার পার্থক্য থাকে। অন্যদিকে স্থির তরঙ্গের প্রতিটি পূর্ণ কম্পনে কণাগুলাে দুইবার স্থির অবত্যাপ্রাপ্ত হয়।

৩। অগ্রগামী তরঙ্গের প্রতিটি কণার বিস্তার সমান। কিন্তু তাদের ভিতর দশার পার্থক্য থাকে। অন্যদিকে স্থির তরঙ্গের প্রতিটি কণার দশা সমান। কিন্তু বিস্তার বিভিন্ন। সুস্পন্দ বিন্দুতে বিস্তার সর্বাধিক এবং নিপল বিন্দুতে বিস্তার সর্বাপেক্ষা কম।

৪। অগ্রগামী তরঙ্গ মাধ্যমের ভিতর দিয়ে নির্দিষ্ট বেগে অগ্রসর হয়। অন্যদিকে স্থির তরঙ্গের মধ্যে স্থিরভাবে অবস্থান করে এবং সীমাবদ্ধ স্থানে পর্যায়ক্রমে উৎপন্ন ও বিলুপ্ত হয়।

৫। অগ্রগামী তরঙ্গের প্রতিটি কণাকে সরণ, ঘনত্ব, চাপের পরিবর্তন, শক্তি ও বেগের একই রকম চক্রের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। অন্যদিকে স্থির তরঙ্গের প্রতিটি কণাকে একই রকম পরিবর্তন চক্রের ভিতর দিয়ে যেতে হয়।

৬। অগ্রগামী অনুপ্ৰথ তরঙ্গের ক্ষেত্রে এরপর দুটি তরঙ্গশীর্ষের মধ্যবর্তী দূরত্ব এবং অগ্রগামী অনুদৈর্ঘ্য তঙ্গের ক্ষেত্রে একটি সঙ্কোচন ও একটি প্রসারণের মোট দৈর্ঘ্যকে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বলে। অন্যদিকে স্থির তরঙ্গের পর পর তিনটি নিস্পন্দ বিন্দু অথবা তিনটি সুস্পন্দ বিন্দুর মধ্যবর্তী দূরত্বই স্থির তরঙ্গের এক তরঙ্গ দৈর্ঘ্য


পার্থক্য ফেসবুক পেজ
ফিজিক্স সংক্রান্ত আরো পার্থক্য পড়ুনঃ Physics


আরোও পার্থক্য পড়ুনঃ রম্বস ও সামান্তরিকের মধ্যে পার্থক্যকার্ডিয়াক এবং কঙ্কাল পেশীর মধ্যে পার্থক্যসম্পাদ্য এবং উপপাদ্যের মধ্যে পার্থক্যতথ্য ও উপাত্তের মধ্যে পার্থক্যগণিত এবং ফলিত গণিতের মধ্যে পার্থক্য