গচ্ছিত সম্পদ (Fund Resource):
যে সকল বস্তু বা উপকরণের পরিমাণ কম এবং ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে শেষ হয়ে যায় সে সকল বস্তু বা উপকরণকে গচ্ছিত বা অপুনর্ভব সম্পদ বলে। যেমনঃ বাতিল লোহা বা ইস্পাত।
অবাধ সম্পদ (Flow Resource):
যে সকল বস্তু বা উপকরণ ব্যবহার করার ফলে নিঃশেষ হয়ে যায় না সেই সকল সম্পদকে অবাধ বা প্রবাহমান বা অক্ষয়িষ্ণু সম্পদ বলে। যেমনঃ বাতাস, পানি ইত্যাদি।
গচ্ছিত ও অবাধ সম্পদের মধ্যে পার্থক্যঃ
অর্থনৈতিক ভূগোলের অন্যতম হলো গচ্ছিত সম্পদ ও প্রবাহমান সম্পদের পার্থক্য। নিচে সেই গচ্ছিত ও অবাধ সম্পদের মধ্যে পার্থক্যগুলি আলোচনা করা হলো-
১। যে সকল বস্তু বা উপকরণের পরিমাণ কম এবং ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে শেষ হয়ে যায় সে সকল বস্তু বা উপকরণকে গচ্ছিত বা অপুনর্ভব সম্পদ বলে। অন্যদিকে, যে সকল বস্তু বা উপকরণ ব্যবহার করার ফলে নিঃশেষ হয়ে যায় না সেই সকল সম্পদকে অবাধ বা প্রবাহমান বা অক্ষয়িষ্ণু সম্পদ বলে।
২। গচ্ছিত সম্পদের পরিমাণ সীমিত ও স্থানিকৃত। অর্থাৎ গচ্ছিত সম্পদ গুলি পৃথিবীর সর্বত্র সম পরিমাণে পাওয়া যায় না। অন্যদিকে, অবাধ সম্পদের পরিমাণ অফুরন্ত। এই সম্পদ স্থানীয়কৃত নয়। পৃথিবীর সর্বত্র পাওয়া যায়।
৩। গচ্ছিত সম্পদ গুলি সারা পৃথিবী ব্যাপী সমভাবে বন্টিত নয়। কোন কোন সম্পদ কেবলমাত্র পৃথিবীর একটি বা দুটি অঞ্চলেই পাওয়া যায়। অন্যদিকে, অবাধ সম্পদ, যেমন – বায়ু, আলো পৃথিবীর সর্বত্র সমান ভাবে বন্টিত; আবার বনভূমি, তৃণভূমি, জল প্রভৃতি প্রবাহমান সম্পদ কম বেশি পৃথিবীর প্রায় সব জায়গায় পাওয়া যায়।
৪। গচ্ছিত সম্পদ পুনরায় নবীকরণ করা যায় না। অন্যদিকে, অবাধ সম্পদ পুনরায় নবীকরণ করা যায়।
৫। গচ্ছিত সম্পদ গুলো বারবার ব্যবহারের ফলে শেষ হয়ে যায়, অর্থাৎ এগুলি ক্ষয়িষ্ণু সম্পদ। অন্যদিকে, অবাধ বা অফুরন্ত সম্পদকে বারংবার ব্যবহার করলেও ফুরিয়ে যায় না।
৬। গচ্ছিত সম্পদ নিঃশেষ হয়ে গেলে পুনরায় নতুন করে তৈরি হয় না এবং পার্থিব পরিবেশে ফিরে আসে না। যেমন – কয়লা, লোহা, পেট্রোলিয়াম, তামা ইত্যাদি। অন্যদিকে, অবাধ সম্পদ নিঃশেষ হয়ে গেলে আবার প্রকৃতিতে আপনাআপনি তৈরি হয় এবং প্রকৃতির ভান্ডার পূরণ করে। যেমন – অরণ্য, নদীর জল, সৌরশক্তি প্রভৃতি।
৭। গচ্ছিত সম্পদ আহরণ করা কষ্টসাধ্য, ব্যয় বহুল ও সময় সাপেক্ষ। অন্যদিকে, অবাধ সম্পদ সর্বত্র পাওয়া যায় বলে একে আরোহন করা সাধারনত ব্যয়বহুল ও পরিশ্রম সাপেক্ষ হয় না।
৮। কয়লা, খনিজ তেল ইত্যাদি হল গচ্ছিত সম্পদের উদাহরণ। অন্যদিকে, বনভূমি, সমুদ্রের মাছ, সূর্যালোক ইত্যাদি হল অবাধ সম্পদের উদাহরণ।