Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

গ্যাসট্রাইটিস ও গ্যাস্ট্রিক আলসারের পার্থক্য

গ্যাসট্রাইটিস ও গ্যাস্ট্রিক আলসারের

গ্যাস্ট্রাইটিস (Gastritis):

গ্যাস্ট্রাইটিস হ’ল গ্যাস্ট্রিক মিউকোসা নামক পেটের আস্তরণের প্রদাহ। পেটের খাবারের জন্য বাফার হিসাবে কাজ করে। খাবার পেটে মিশ্রিত হয় এবং অ্যাসিডিক গ্যাস্ট্রিকের রস দিয়ে হজম হয়। হজমের এনজাইমগুলি পেটেও লুকিয়ে থাকে, যা ডায়েটরি প্রোটিনকে ভেঙে দেয়। গ্যাস্ট্রিক মিউকোসায় প্রচুর পরিমাণে গ্রন্থি থেকে গ্যাস্ট্রিক রস উৎপাদিত হয়। গ্যাস্ট্রিক মিউকোসা একটি পাতলা স্নিগ্ধ শ্লেষ্মা তৈরি করে যা গ্যাস্ট্রিকের রসের অ্যাসিড অম্লীয় প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে এর বিশেষায়িত কোষগুলি থেকে পেটের অভ্যন্তরীণ পৃষ্ঠকে কভার দেয়। বিভিন্ন কারণ; এটি প্রতিরক্ষামূলক শ্লেষ্মা স্তর আক্রমণ করতে পারে বা অত্যধিক পেটের অ্যাসিড উৎপাদন করতে পারে। ফলস্বরূপ, গ্যাস্ট্রাইটিস হয়।

গ্যাস্ট্রাইটিস প্রায়শই পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং অম্বল জ্বলনের মতো লক্ষণগুলির সাথে উপস্থাপিত হয়। গ্যাস্ট্রাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি নামক ব্যাকটিরিয়া দ্বারা সংক্রমণ হয়। গ্যাস্ট্রাইটিসের অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে: ধূমপান, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন করা, অ-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগ হিসাবে পরিচিত অ্যাসপিরিন এবং আইবুপ্রোফেনের মতো ওষুধগুলির দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার, বড় অপারেশন, গুরুতর জখম এবং জ্বলন , বিভিন্ন ব্যাকটিরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাকের সংক্রমণ, খাবারে এ্যালার্জী, খাদ্যে বিষক্রিয়া, ইমিউন সিস্টেম তার নিজের দেহের কোষগুলিতে আক্রমণ করে: এই ক্ষেত্রে, এই রোগটিকে অটোইমিউন বা টাইপ এ গ্যাস্ট্রাইটিস বলে। এটি কোনও গুরুতর রোগ নয় এবং সহজেই সঠিক পুষ্টি এবং ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যায়।

গ্যাস্ট্রিক আলসার (Gastric Ulcer):

পেপটিক আলসার হলে পেটের ওপরের দিকে সবসময় অল্প অল্প ব্যথার পাশাপাশি হঠাৎ তীব্র ব্যথার সৃষ্টি হয় এবং বদহজম দেখা দেয়। খাবারের অনিয়ম কিংবা দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকলে পেপটিক আলসার দেখা দিতে পারে। পেপটিক আলসার শুধু পাকস্থলীতেই হয় তা নয় বরং এটি পৌষ্টিকতন্ত্রের যেকোনো অংশেই হতে পারে। পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরী হবার ফলে পেপটিক আলসার হয়ে থাকে। কেননা অতিরিক্ত অ্যাসিড পাকস্থলীর মিউকোসার পর্দা নষ্ট করে ফেলে এবং পাকস্থলীর সংস্পর্শে এসে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এবং হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়াও মিকোসাল পর্দা নষ্ট করে ফেলে, অ্যাসিডকে পাকস্থলীর সংস্পর্শে এনে প্রদাহের সৃষ্টি করতে সাহায্য করে।

এছাড়াও পৌষ্টিকতন্ত্র থেকে অতিরিক্ত অ্যাসিড এবং পেপসিন নামক এক ধরনের পরিপাককারী এনজাইমের নিঃসরণের ফলে পেপটিক আলসার হতে পারে। আবার কখনো কখনো জন্মগত ভাবে পৌষ্টিকতন্ত্রের কাঠামো দুর্বল থাকলেও পেপটিক বা গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়ে থাকে।

গ্যাসট্রাইটিস ও গ্যাস্ট্রিক আলসারের পার্থক্য:

গ্যাসট্রাইটিস ও গ্যাস্ট্রিক আলসার দুই ধরনের রোগ। তবে দুটোই খাদ্যাভ্যাসের অনিয়মের কারণে হয়। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাকে আপনারা মেডিকেলের ভাষায় বলেন গ্যাসট্রাইটিস, আবার কখনো বলেন গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়েছে। দুটো বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

গ্যাসট্রাইটিস আর গ্যাস্ট্রিক আলসার খুব আলাদা বিষয়। গ্যাসট্রাইটিস একটি প্রচলিত সমস্যা। খুব ঝাল খাবার খাওয়ার পর দেখা যায়, পেটের মাঝখানে বা ওপরের পেটে বা মাঝখানে জ্বালাপোড়া করে বা ব্যথা করে। একে গ্যাসট্রাইটিস বলা হয়। আর আলসার হলো আরো পরের অবস্থা। আলসার বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব নয়। এটা এন্ডোস্কোপি করে দেখতে হয়। খাদ্যনালির কিছু অংশ, মিউকাস ও পেশির অংশ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন একে আলাসার বলে। তা ছাড়া আলসার বাইরের থেকে বোঝার উপায় নেই। অনেক দিন ধরে গ্যাসট্রাইটিস হতে দেখা যায় যে আলসার বৃদ্ধি পায়।

Exit mobile version