জেনোটাইপ (Genotype):
জীবদেহের দৃশ্যমান অথবা সুপ্ত বেশিষ্ট্যগুলোর নিয়ন্ত্রক জিনসমূহের গঠনকে জিনোটাইপ বলে। মনেকরি, মটরশুঁটি গাছের লম্বা কান্ডের জন্য T জিন এবং বামন কান্ডের জন্য T জিন দায়ী। অতএব TT, tt, Tt যথাক্রমে বিশুদ্ধ লম্বা, বিশুদ্ধ বামন ও সঙ্কর (hrbrid) লম্বা মটরশুঁটি গাছের জিনোটাইপ। মানুষের জেনেটিক কোড তাদের জেনোটাইপ দ্বারা পাওয়া যেতে পারে। এটি প্রকাশ করা হবে এমন বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ধারণ করে। যে জীবগুলি একই রকম দেখায় তাদের জেনোটাইপ একই নয়। জেনোটাইপ জৈবিক পরীক্ষা দ্বারা নির্ধারিত হতে পারে।
ফেনোটাইপ (Phenotype):
জীবদেহের দৃশ্যমান বৈশিষ্ট্যসমূহকে ফিনোটাইপ বলে। ফিনোটাইপ প্রকৃতপক্ষে জিনোটাইপের জিনসমূহের বাহ্যিক প্রকাশ। যেমন- লম্বা ও বামন মটরশুঁটি গাছে উচ্চতা সম্পর্কিত বাহ্যিক প্রকাশগুলো যথাক্রমে TT বা Tt ও tt জিনোটাইপগুলোর ফিনোটাইপ। ফেনোটাইপ একজন ব্যক্তির জেনোটাইপ দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং জিন প্রকাশ করে বা দৃশ্যমান বৈশিষ্ট্য দ্বারা, উদাহরণস্বরূপ, চুলের রঙ বা প্রকার, চোখের রঙের শরীরের আকৃতি এবং উচ্চতা। এটি জেনোটাইপের উপর নির্ভর করে তবে পরিবেশের কারণগুলি দ্বারা প্রভাবিতও হয়।
জিনোটাইপ ও ফিনোটাইপ এর মধ্যে পার্থক্যঃ
জেনোটাইপ এবং ফেনোটাইপ উভয়ই একই রকম শোনায় তবে পার্থক্য রয়েছে। জিনোটাইপ ও ফিনোটাইপ এর মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হয়েছে-
১। জীবদেহের দৃশ্যমান অথবা সুপ্ত বেশিষ্ট্যগুলোর নিয়ন্ত্রক জিনসমূহের গঠনকে জিনোটাইপ বলে। অন্যদিকে, জীবদেহের দৃশ্যমান বৈশিষ্ট্যসমূহকে ফিনোটাইপ বলে।
২। জিনোটাইপ জীবের জিনগত অভ্যন্তরীন বৈশিষ্ট্যকে সূচিত করে। অন্যদিকে, ফিনোটাইপ হল জীবের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ।
৩। এটি কেবলমাত্র সংকরায়ন পরীক্ষাভিত্তিক নির্ণয় করা যায়। অন্যদিকে, ফিনোটাইপ নির্ণয় খালিচোখে করা যায়।
৪। জিনোটাইপ এক হলে ফিনোটাইপ এক হবেই। অন্যদিকে, ফিনোটাইপ এক হলে জিনোটাইপ এক নাও হতে পারে। যেমন মটর গাছের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ লম্বা গাছের জিনগত গঠন বা জিনোটাইপ হল TT এবং সংকর লম্বা গাছের জিনগত গঠন বা জিনোটাইপ হল Tt এক্ষেত্রে দুটি মটর গাছের ফিনোটাইপ লম্বা।
৫। একমাত্র জিনোটাইপ দেখে বিশুদ্ধ ও সংকর জীবের বৈশিষ্ট্য পৃথক করা যায়। অন্যদিকে, ফিনোটাইপ দেখে বিশুদ্ধ ও সংকর জীবের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য করা যায় না।