Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

জিব্বেরেলিন ও সাইটোকাইনিনের মধ্যে পার্থক্য

জিব্বেরেলিন ও সাইটোকাইনিনের

জিব্বেরেলিন (Gibberellin):

গাছের পরিপক্ক বীজ, অঙ্কুরিত চারাগাছ, উদ্ভিদের মুকুল ও বীজের পত্র ইত্যাদিতে সংশ্লেষ হওয়া টারপিনয়েড গোষ্ঠীর যে জৈব অম্লগুলি গাছের অর্থাৎ উদ্ভিদের দৈর্ঘ্যের বৃদ্ধি ঘটায়, বীজগুলির সুপ্ত দশা কমিয়ে আনে এবং উদ্ভিদের ফুল ধারণে সহযোগিতা করে তাদের জিব্বেরেলিন হরমোন বলে। অক্সিনের মতো জিব্বেরেলিনও উদ্ভিদের একরকম গুরুত্বপূর্ণ হরমোন । এটি একরকমের টারপিনয়েড জাতীয় নাইট্রোজেনবিহীন জৈব অম্ল । জিব্বেরেলিন প্রধানত কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন নিয়ে গঠিত ।

জিব্বেরেলিনের রাসায়নিক নাম জিব্বেরেলিক অ্যাসিড [GA বা Gibberelic acid] । এরা বর্ণহীন ও গন্ধহীন জৈব অ্যাসিড । GA1, GA2, GA3, GA4 ইত্যাদি রূপে পাওয়া যায়, তার মধ্যে GA3 কে বেশি কাজে লাগানো হয় । জিব্বেরেলিন উদ্ভিদের পরিপক্ক বীজে বেশি উৎপন্ন হয় । তাছাড়া মুকুল, অঙ্কুরিত চারাগাছ, বীজের বীজপত্র এবং পাতার বর্ধিষ্ণু অঞ্চলে এই হরমোন পাওয়া যায় ।

সাইটোকাইনিন (Cytokinin):

ফল ও বীজের মধ্যে সংশ্লেষ হওয়া পিউরিন জাতীয় নাইট্রোজেন ঘটিত যে ক্ষার জাতীয় জৈব পদার্থ কোষ বিভাজনকে উদ্দীপিত করে,তাকেই বলা হয় সাইটোকাইনিন হরমোন। সাইটোকাইনিন (সিকে) হল উদ্ভিদ বৃদ্ধিকারী উপাদান (ফাইটোহরমোন) এর একটি শ্রেণি যা উদ্ভিদের শিকড় এবং অংকুরে কোষ বিভাজন বা সাইটোকাইনেসিসকে ত্বরান্বিত করে। এগুলি প্রাথমিকভাবে কোষের বৃদ্ধি এবং পার্থক্যকরণের সাথে জড়িত থাকে ,তবে শীর্ষের আধিপত্য,শাখা মুকুলের বৃদ্ধি এবং পাতাযর বার্ধক্যকেও প্রভাবিত করে।

সাইটোকাইনিন ও অক্সিনের অনুপাত গাছের বৃদ্ধিতে সাইটোকাইনিনের প্রভাবের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।প্যারেনকাইমা কোষগুলিতে সাইটোকাইনিনের একক কোনও প্রভাব নেই।যখন অক্সিনের সাথে কালচার করা হয় তবে সাইটোকাইনিন ছাড়া, তারা বড় হয় তবে বিভাজিত হয় না।সাইটোকাইনিন যুক্ত করা হলে কোষগুলি বিস্তৃত হয় এবং বিভাজিত হয়।সাইটোকাইনিন এবং অক্সিন যখন সমান স্তরে উপস্থিত থাকে তখন প্যারেনকাইমা কোষগুলি একটি অবিচ্ছিন্ন ক্যালাস গঠন করে।অধিক সাইটোকাইনিন অঙ্কুর মুকুলের বৃদ্ধি প্ররোচিত করে, যখন অধিক অক্সিন মূল গঠনে প্ররোচিত করে।

জিব্বেরেলিন ও সাইটোকাইনিনের মধ্যে পার্থক্যঃ

উদ্ভিদের দৈর্ঘ্যের বৃদ্ধি ঘটায়, বীজগুলির সুপ্ত দশা কমিয়ে আনে এবং উদ্ভিদের ফুল ধারণে সহযোগিতা করে। জিব্বেরেলিন ও সাইটোকাইনিনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। উদ্ভিদের দৈর্ঘ্যের বৃদ্ধি ঘটায়,বিজগুলির সুপ্ত দশা কমিয়ে আনে এবং উদ্ভিদের ফুল ধারণে সহযোগিতা করে তাদের জিব্বেরেলিন হরমোন বলে। অন্যদিকে, ফল ও বীজের মধ্যে সংশ্লেষ হওয়া পিউরিন জাতীয় নাইট্রোজেন ঘটিত যে ক্ষার জাতীয় জৈব পদার্থ কোষ বিভাজনকে উদ্দীপিত করে, তাকেই বলা হয় সাইটোকাইনিন হরমোন।

২। জিব্বেরেলিন নাইট্রোজেনবিহীন জৈব যৌগ । অন্যদিকে, সাইটোকাইনিন নাইট্রোজেনঘটিত জৈব যৌগ।

৩। জিব্বেরেলিন প্রধানত পরিণত বীজ, অঙ্কুরিত চারা গাছ এবং বীজপত্রে উৎপন্ন হয় । অন্যদিকে, সাইটোকাইনিন প্রধানত শস্য কলায় এবং ফুল ও ফলের নির্যাসে পাওয়া যায় ।

৪। জিব্বেরেলিন প্রধানত উদ্ভিদের ফুল সৃষ্টিতে এবং বীজের সুপ্ত অবস্থা ভঙ্গ করে অঙ্কুরোদগমে সাহায্য করে। অন্যদিকে, সাইটোকাইনিন প্রধানত উদ্ভিদের কোষ বিভাজন ঘটায়।

৫। ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে জিব্বেরেলিন হরমোনের কোনো ভূমিকা নেই। অন্যদিকে, ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে সাইটোকাইনিনের কোনো ভূমিকা নেই ।

Exit mobile version