Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

হারাম ও মাকরূহের মধ্যে পার্থক্য

হারাম ও মাকরূহের

হারাম ও মাকরূহ দুটি বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য হলো একে হারাম হিসেবে নিবন্ধন করা হয় যা ব্যক্তির জীবনের প্রাথমিক ও মৌলিক মূল্য বিবেচনা করে। তবে ইসলামের দিক থেকে হারাম ও মাকরূহের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। নিচে হারাম ও মাকরূহের মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়েছে-

হারাম (Haram) :
হারাম (আরবি: حَرَام ḥarām) একটি ইসলামি পরিভাষা। এ দ্বারা নিষিদ্ধ কাজ বোঝানো হয়। মন্দ কাজসমূহের মধ্যে হারামকে সবচেয়ে গুরুতর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইসলামে যে কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তাকে হারাম বলে। অর্থাৎ কুরআনুল কারিম ও বিশ্বনবির হাদিসে যে সব কাজ ও বিষয়কে সুস্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ বা অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় তা হারাম বা অবৈধ। বিশ্বমানবতাকে দুনিয়ার যাবতীয় অকল্যাণ ও ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্যেই আল্লাহ তাআলা হারামের বিধান প্রদান করেছেন। যে ব্যক্তি হারাম কাজ করে তার অন্তর-আত্মা নষ্ট হয়ে যায়, দেহের ক্ষতি হয় এবং বিবেক বুদ্ধি লোপ পায়। যা নির্বুদ্ধিতার পরিচয় বহন করে।

এক কথায় হারাম কাজ মানুষকে গোনাহগার বানিয়ে দেয়। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা ইসলামে হারামের বিধান প্রণয়ন করে মানুষকে অশান্তির শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ থেকে নিষ্কৃতি দান করেছেন।

মাকরূহ (Makruh) :
মাকরূহ শব্দের আভিধানিক অর্থ: ঘৃণিত, নিন্দনীয়, অপছন্দনীয়। পরিভাষায়ঃ ما نهى عنه الشارع لا على وجه الإلزام بالترك শরীয়তের বিধান ও পরিভাষাগুলোর একটি হলো মাকরুহ। এর অর্থ- অপছন্দনীয়। মাকরুহ হারামের কাছাকাছি একটি শব্দ। মূলত ‘মাকরুহ’ শব্দটি ‘মাহবুব’-এর বিপরীত। মাহবুব অর্থ প্রিয়, মাকরুহ অর্থ, অপ্রিয়, অপছন্দনীয়। মাকরূহ্ এমন আমল যা পালন করার তুলনায় না করা উত্তম। অর্থাৎ যে কাজ না করাটাই উত্তম। মাকরূহ্ কাজ করলে শাস্তি পেতে হবে না, কিন্তু এ ধরনের কাজ এড়িয়ে যেতে বলেছে ইসলাম। যেমন : আস্‌রের নামাযের পর থেকে মাগ্‌রিব পর্যন্ত ঐ দিনের আস্‌রের নামায ছাড়া অন্য কোনও নামায আদায় করা।

হারাম ও মাকরূহের মধ্যে পার্থক্যঃ
১. মাকরুহ অর্থ অপছন্দনীয়, হারাম অর্থ নিষেধ, আল্লাহ প্রদত্ত বিধানে যা কঠোর ভাবে নিষেধ তাই হারাম। অন্যদিকে, শরিয়ত প্রদত্ত নীতিমালায় যা অপছন্দ তাই মাকরুহ।

২. হারাম বলতে বোঝায় নিষিদ্ধ, যা করা পাপ এবং ঈশ্বরের অবাধ্যতা। হারাম কাজের জন্য শাস্তি হবে। অন্যদিকে, মাকরূহ বলতে বোঝায় অপছন্দনীয়, যা করা ভালো নয়, তবে নিষিদ্ধ নয়। মাকরূহ কাজ না করলে পুরস্কার পাওয়া যাবে, এবং করলে শাস্তি হবে না।

৩. হারাম কাজ সবসময়ই নিষিদ্ধ। কতিপয় হারাম কাজের জন্য শরিয়ত কর্তৃক শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে। এছাড়া ইসলাম অনুযায়ী হারামে লিপ্ত ব্যক্তির জন্য মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে শাস্তির কথা বলা আছে। হারাম কাজের মধ্যে রয়েছে মানুষ হত্যা, চুরি-ডাকাতি, মদ্যপান, সুদের লেনদেন, ঘুষ আদানপ্রদান, ধর্ষণ, ব্যভিচার ইত্যাদি।

অন্যদিকে, মাকরূহ বলতে বোঝায় শরীয়ত যেটাতে কোনো প্রকার বাধা প্রদান করে না, তবে যে কাজটা অপছন্দনীয়। তাছাড়া, মাকরুহ তানযীহি কাজের জন্য শাস্তি নির্ধারিত নয়।

৪. উদাহরণ: রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এশার ছালাতের পূর্বে ঘুমানো এবং এশার পরে কথা বলাকে অপসন্দ করতেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৮৭ ‘জলদী ছালাত আদায়’ অনুচ্ছেদ)। এখন আপনি যদি এই হাদিসটির বিপরীত কাজ করেন মানে এশার ছালাতের পূর্বে ঘুমান বা এশার সালাতের পরে অনেক বেশি কথা বলেন বা গল্প-গুজুব করেন তাহলে সেটা মাকরুহ হবে কিন্তু এটার জন্য আপনার কোন গুনাহ বা শাস্তি হবে না। তবে এটা পরিহার করাই উত্তম।

Exit mobile version