হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মধ্যে পার্থক্য

অনেকেই হার্ট অ্যাটাক হলে ভাবেন, স্ট্রোক হয়েছে। আবার স্ট্রোক হলে ভাবেন, হার্টের বুঝি কোনো সমস্যা হয়েছে। তবে দুটো একেবারই ভিন্ন জিনিস। হার্ট অ্যাটাক হার্টের সমস্যা, আর স্ট্রোক মস্তিষ্কের সমস্যা।

হার্ট অ্যাটাকঃ

হার্ট অ্যাটাক হৃৎপিন্ডের একটি রোগ। হৃৎপিন্ডে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ করে করোনারি ধমনি। কোন কারণে এ করোনারি ধমনি বন্ধ হয়ে গেলে হৃৎপিন্ডে রক্ত ও অক্সিজেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে যে রোগের সৃষ্টি হয় তাকে হার্ট অ্যাটাক বলে।

স্ট্রোকঃ

স্ট্রোক হচ্ছে একটি মস্তিষ্কের রোগ। কোন কারণে যদি মস্তিষ্কের রক্তনালি ছিঁড়ে অতিরিক্ত রক্ত জমা হয় বা মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহে বাধা পায়, সেই অবস্থাকে স্ট্রোক বলে।

হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মধ্যে পার্থক্যঃ

যে কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়, ঠিক একই কারণে স্ট্রোক হয়। আমাদের যে মস্তিষ্ক, যেটি সারা শরীরকে পরিচালনা করে, সেখানেও রক্ত চলাচলের এ রকম নালি রয়েছে সে নালিগুলোর কোনো একটি অংশ যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে মস্তিষ্কের কিছু অংশের ক্ষতি হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে শরীরের কোনো দিকের অংশ প্যারালাইসিস হয়ে যায় বা অবশ হয়ে যায়। একে সাধারণত স্ট্রোক বলে। সুতরাং আমরা সাদামাটা ভাবে বলতে পারি, হার্টের রক্তচলাচল বন্ধ হয়ে হার্টের যে ক্ষতি হয়, একে হার্ট অ্যাটাক বলা হয়। আর মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে মস্তিষ্কের যে ক্ষতি হয় সেটাকে স্ট্রোক বলা হয়।

সত্যিকার অর্থেই আমাদের সমাজে জনগণের মধ্যে কিছু ভুল ধারণা রয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক। এর মধ্যে এটি একটি ভুল ধারণা। সাধারণত হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক দুটো আলাদা জিনিস। মানুষ আসলে স্ট্রোক বলতে হার্ট অ্যাটাককে বোঝে। এ জন্য কেউ যদি প্যারালিইসিস হয় বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়, হঠাৎ করে একদিক প্যারালাইসিস হয়ে যায় বা কেউ যদি অজ্ঞান হয়ে যায়, অনেকে মনে করে, এগুলো হার্ট অ্যাটাক। তাকে হৃদরোগ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

হৃদরোগের রোগীরা সাধারণত বুকে ব্যথা নিয়ে আসে। তাদের বুকে ব্যথার সঙ্গে হয়তো শরীর ঘেমে যায়। বমি হতে পারে, কিছুটা অজ্ঞানের মতো হতে পারে। মূলত বুকে ব্যথা নিয়ে প্রকাশ হয়। শ্বাসকষ্টও হতে পারে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস, এ ধরনের ঝুঁকির বিষয় থাকে, আবার ধূমপানও করে, হয়তো সে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত। তাকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিতে হবে।

স্ট্রোক হলো মস্তিষ্কের অসুখ এবং হার্ট অ্যাটাক হলো হার্টের অসুখ।  যদিও সাধারণত ঝুঁকিগুলো একই রকম থাকে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, যারা ওষুধপত্র ঠিকমতো নেয় না, ডায়াবেটিস রয়েছে, নিয়ন্ত্রণ করে না—এ ধরনের রোগী যারা ধূমপান করে, তারা কোনো কারণে যদি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়, প্যারালাইসিসের মতো হয়ে যায়, তখন ধারণা করা যেতে পারে তার হয়তো স্ট্রোক হয়েছে। সে ক্ষেত্রে এ ধরনের রোগীদের যেসব হাসপাতালে নিউরোলোজি বিভাগ রয়েছে, সেখানে নিয়ে যেতে হবে।