উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপ বিষয় দুুটি শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। উভয়ে মধ্যে মিলের চেয়ে বেশি অমিল পরিলক্ষিত হয়। উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপের মধ্যে পার্থক্য নিম্নলিখিত তথ্যের আলোকে বুঝা যায়। নিম্নরূপ-
উচ্চ রক্তচাপ (High Blood Pressure) :
স্বাভাবিক মাত্রা থেকে কারো শরীরে যদি Blood Pressure এর মাত্রা বেড়ে যায় তবে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার বলে। যার আরেক নাম উচ্চ রক্তচাপ, HTN , বা HPN, হল একটি রোগ যখন কোন ব্যক্তির রক্তের চাপ সব সময়েই স্বাভাবিকের চেয়ে ঊর্ধ্বে। হাইপারটেনশনকে প্রাথমিক (আবশ্যিক) হাইপারটেনশন অথবা গৌণ হাইপারটেনশনে শ্রেণীভুক্ত করা হয়। প্রায় ৯০–৯৫% ভাগ ক্ষেত্রেই “প্রাথমিক হাইপারটেনশন” বলে চিহ্নিত করা হয়।বাকি ৫-১০% বিভিন্ন রোগের কারণে হয়। যে সকল কারণ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে সেগুলো হল: বেশি লবণ গ্রহণ, অতিরিক্ত মেদ, কাজের চাপ, মদ্যপান, পরিবারের আকার, অতিরিক্ত আওয়াজ এবং ঘিঞ্জি পরিবেশে থাকা। উচ্চমাত্রার লবণের ব্যবহার এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। ধারণা করা হয় প্রায় শতকরা ৬০ ভাগ রোগী লবণের ব্যবহার দ্বারা প্রভাবিত হন।
উচ্চ রক্তচাপ সনাক্ত হবার পর সাধারনত চিকিৎসক রোগীর বয়স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা পর্যালোচনা করে যথাযথ ওষুধ খাবার নির্দেশ দেন। সেই পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে। কখনোই নিজে থেকে ওষুধের ধরন বা মাত্রা কমানো বা বাড়ানো উচিত নয়। এতে শরীরে বিরূপ প্রভাব পরতে পারে।
নিম্ন রক্তচাপ (Low Blood Pressure) :
স্বাভাবিক মাত্রা থেকে কারো শরীরে যদি Blood Pressure কমে যায় তবে তাকে নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেসার বলে। কারো রক্তচাপ ৯০/৬০ অথবা তার নিচে হলে এবং এর সঙ্গে যদি নিম্ন রক্তচাপের শারীরিক লক্ষণগুলো থাকে, তবে তার রক্তচাপকে কম বা নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়। একজন সুস্থ ব্যক্তি, যার মাঝে শারীরিক অসুস্থতার কোনো লক্ষণ নেই, যার রক্তচাপ সব সময়ই ৯০/৬০ বা এর কম থাকে, তিনি কিন্তু নিম্ন রক্তচাপের রোগী নন। বুঝতে হবে যে কম রক্তচাপ তার জন্য স্বাভাবিক। নিম্ন রক্তচাপের সঙ্গে একজন রোগীর মাঝে অবশ্যই নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো (এক বা একাধিক) থাকতে হবে। নিয়মিত আহার না করা, পানিশুন্যতা, হার্টের সমস্যা, অনেক ঔষধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াসহ নানা কারণে নিম্ন রক্তচাপ দেখা দিতে পারে।
রক্তচাপ যদি স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘদিন কম থাকে এবং শারীরিক কোনো লক্ষণ না থাকে তবে বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে রক্তচাপ যদি হঠাৎ কমে যায়, অথবা ওপরের লক্ষণগুলো দেখা দেয় তবে সাধারণ পদক্ষেপ হিসেবে নিচের বিষয়গুলো লক্ষ রাখুন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন
- অতিরিক্ত পরিশ্রম পরিহার করুন
- অত্যধিক রোদে বা গরমে থাকবেন না
- দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা শুয়ে থাকবেন না
- শোয়া থেকে বসা বা বসা থেকে দাঁড়ানো ইত্যাদি ধীরে করুন
- ডায়াবেটিস রোগী হলে রক্তের শর্করা পরীক্ষা করুন
- নতুন কোনো ওষুধ সেবন করার পর রক্তচাপ কমলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপের মধ্যে পার্থক্যঃ
১. যখন ধমনীতে রক্ত প্রবাহের চাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে তখন তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে। অন্যদিকে, যখন ধমনীতে রক্ত প্রবাহের চাপ স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে তখন তাকে নিম্ন রক্তচাপ বলে।
২. উচ্চ রক্তচাপ হলে রক্তের চাপ অনেকটাই উচ্চ হয়ে যায়, যা হৃদরোগ, ধমনী সমস্যা, ডায়াবিটিস, ওবেসিটি, অতিরিক্ত তামা সাইন্ট্যারেল (sodium) খাবার প্রবৃদ্ধি, কিমিটি ব্যবহার ইত্যাদি কারণে হতে পারে।
অন্যদিকে, নিম্ন রক্তচাপে রক্তের চাপ খুব কম হয়ে যায়, যা শারীরিক অসুস্থতা, অত্যন্ত ধারনশক্তির অভাব, অতিরিক্ত প্রস্রাব, হাড় পরিবর্তন, দ্রবণ হারানো, হৃদরোগ, ডায়াবিটিস, রক্ত ক্ষয়, প্রজাননের সমস্যা, ইত্যাদি কারণে ঘটে।
৩. উচ্চ রক্তচাপ, HTN , বা HPN, হল একটি রোগ যখন কোন ব্যক্তির রক্তের চাপ সব সময়েই স্বাভাবিকের চেয়ে ঊর্ধ্বে। হাইপারটেনশনকে প্রাথমিক প্রায় ৯০–৯৫% ভাগ ক্ষেত্রেই “প্রাথমিক হাইপারটেনশন” বলে চিহ্নিত করা হয়। বাকি ৫-১০% বিভিন্ন রোগের কারণে হয়।
অন্যদিকে, রক্তচাপ ৯০/৬০ অথবা তার নিচে হলে এবং এর সঙ্গে যদি নিম্ন রক্তচাপের শারীরিক লক্ষণগুলো থাকে, তবে তার রক্তচাপকে কম বা নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়। একজন সুস্থ ব্যক্তি, যার মাঝে শারীরিক অসুস্থতার কোনো লক্ষণ নেই, যার রক্তচাপ সব সময়ই ৯০/৬০ বা এর কম থাকে, তিনি কিন্তু নিম্ন রক্তচাপের রোগী নন।
৪. উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিপূর্ণ দিক হলো- হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগ, ব্রেন হেমোরেজ ইত্যাদি হতে পারে। অন্যদিকে, নিম্ন রক্তচাপের ঝুঁকিপূর্ণ দিক হলো- মাথা ঘোরা,
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, পতনের ঝুঁকি, ক্লান্তি, ঝাপসা দৃষ্টি ইত্যাদি হতে পারে।
৫. এই দুটি অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন প্রকারের পরামর্শ ও চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। সর্বশেষতম চিকিৎসাগুলি একজন চিকিৎসক বা চিকিৎসা পেশাদারের সাথে আলোচনা করা উচিত।