হিউমাস:
হিউমাস একটি জৈব সার যা প্রাকৃতিক অবস্থায় যে কোন ধরনের মাটিতে প্রাকৃতিকভাবে ঘটে। এটি পরিমাণে খুবই কম এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। উদাহরণস্বরূপ, বনে, জমিতে হিউমাসের পরিমাণ 5%, আর সৈকতে হিউমাসের পরিমাণ মাত্র 1%। এটি কম্পোস্ট এবং জৈব কম্পোস্ট থেকে আলাদা কারণ এটি ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়ার ক্রিয়ায় আরও উন্নত পচন প্রক্রিয়ায় রয়েছে; এর উচ্চ কার্বন উপাদানের কারণে এটি একটি কালো রঙ ধারণ করে।
যখন আর্দ্রতা পচে যায়, মাটি এবং গাছপালা নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সরবরাহ করে। এটি বিশ্বের সবচেয়েপুষ্টিকর জৈব পচন প্রক্রিয়া। মাটিতে আর্দ্রতা প্রয়োগের সবচেয়ে সহজ উপায় হল কেঁচো, যা আপনি নিজের বাগান থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। এগুলি এবং ব্যাকটেরিয়া মলমূত্র জৈব পচন প্রক্রিয়া উৎপন্ন করে এবং উদ্ভিজ্জ হিউমাসের গঠন ত্বরান্বিত করে।
জৈব পদার্থ:
জৈব মৃত্তিকা (Organic Soil) জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ মৃত্তিকা। পিট ও মাক জৈব মৃত্তিকার উদাহরণ। মৃত্তিকার শ্রেণিবিন্যাসে জৈব মৃত্তিকাকে হিস্টোসল বর্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যথেষ্ট পরিমাণে জৈব পদার্থের উপস্থিতির কারণে শাক-সবজি ও অগভীর শিকড়বিশিষ্ট গাছপালা ও অনুজীবের জন্য এ মৃত্তিকা অনুকূল ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব অবস্থা সৃষ্টি করে।
এসব মৃত্তিকাতে তাৎপর্যপূর্ণ পরিমাণে নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও সালফার সাধারণত জৈব যৌগ হিসেবে অবস্থান করে। সুতরাং জৈব মৃত্তিকা এসব পুষ্টি উপাদানে অবশ্যই সমৃদ্ধ থাকে। প্রাণরাসায়নিক দিক থেকে জৈব মৃত্তিকা অত্যধিক বাফার ক্ষমতাসম্পন্ন। অর্থাৎ চুন প্রয়োগের ফলে সৃষ্ট ক্ষারত্ব ও সার প্রয়োগের ফলে সৃষ্ট অম্লত্বের মান যাতে দ্রুত পরিবর্তন না হয় তা প্রতিরোধে সক্ষম।
হিউমাস ও জৈব পদার্থ এর মধ্যে পার্থক্য:
হিউমাস একটি জৈব সার যা প্রাকৃতিক অবস্থায় যে কোন ধরনের মাটিতে প্রাকৃতিকভাবে ঘটে। হিউমাস ও জৈব পদার্থ এর মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা হয়েছে-
১। হিউমাস অধিক জটিল। অন্যদিকে জৈব পদার্থ তুলনামূলক কম জটিল।
২। হিউমাস অসম্পূর্ণ ভাবে বিয়োজিত বা অবিয়োজিত জৈব পদার্থের অবশিষ্টাংশ। অন্যদিকে জৈব পদার্থ অসম্পূর্ণ ভাবে বিয়োজিত বা অবিয়োজিত মাটির অবশিষ্টাংশ।
৩। হিউমাসে নতুন উৎপাদন অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অন্যদিকে জৈব পদার্থে নতুন উৎপাদন অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।
৪। হিউমাস সম্পূর্ণভাবে স্থায়ী। অন্যদিকে জৈব পদার্থ অস্থায়ী ।
৫। হিউমাসে C:N অনুপাত কম। অন্যদিকে জৈব পদার্থে C:N অনুপাত অধিক।
৬। হিউমাসে অধিক পরিমাণে প্রোটিন ও লিগনিন থাকে। অন্যদিকে জৈব পদার্থে সামান্য পরিমাণে প্রোটিন ও লিগনিন থাকে।
৭। হিউমাসে সামান্য পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে। অন্যদিকে জৈব পদার্থে অধিক পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট উপস্থিত থাকে।
৮। হিউমাসে বিয়োজন শেষ হওয়ায় অণুজীব দ্বারা পুনরায় আক্রান্ত হয় না। অন্যদিকে জৈব পদার্থে অণুজীব দ্বারা পুনরায় আক্রান্ত হয়।
৯। হিউমাস সর্বদা মৃত পদার্থ ধারণ করে। অন্যদিকে জৈব পদার্থ জীবিত বা মৃত পদার্থ ধারণ করতে পারে।
১০। হিউমাস কলোয়েডাল প্রকৃতির নয় । অন্যদিকে জৈব পদার্থ কলোয়েডাল প্রকৃতির হয় ।
ভূগোল সংক্রান্ত আরো পার্থক্য পড়ুনঃ Geography
আরোও পার্থক্য পড়ুনঃ রম্বস ও সামান্তরিকের মধ্যে পার্থক্য, কার্ডিয়াক এবং কঙ্কাল পেশীর মধ্যে পার্থক্য, সম্পাদ্য এবং উপপাদ্যের মধ্যে পার্থক্য, তথ্য ও উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য, গণিত এবং ফলিত গণিতের মধ্যে পার্থক্য