আগ্নেয় শিলা (Igneous Rocks):
আগ্নেয় নামটি লাতিন শব্দ “ইগ্নিয়াস” থেকে এসেছে যার অর্থ হচ্ছে আগুন। আগ্নেয় শিলা উৎপন্ন হয় লাভা শীতল ও শক্ত হওয়ার কারণে। এই লাভা উৎপন্ন হয় পৃথিবীর গহ্বর কিংবা ক্রাস্টের আংশিক গলিত বিদ্যমান পাথরের কারণে। সাধারণত তাপমাত্রা বৃদ্ধি, চাপ হ্রাস ও গাঠনিক পরিবর্তন, এই তিনটি কারণের একটি অথবা তিনটির কারণেই পাথর গলন শুরু হয়।
পাললিক শিলা (Sedimentary Rock):
এটি পৃথিবী পৃষ্ঠে তৈরি হয় পাথর, খনিজ ও মৃত জীব ও উদ্ভিদদেহের টুকরার সিমেন্টেশন ও জমাট প্রক্রিয়ার দরুন কিংবা পানিতে রাসায়নিক পদার্থ ও জৈব দ্রব্য পতিত এবং বৃদ্ধি হওয়ার ফলে যাকে সেডিমেন্টেশন বলা হয়। এই প্রক্রিয়ার ফলে পাথরের টুকরা তৈরি হয় কিংবা জৈব কণাগুলো একত্র হয়ে জমাট বাঁধে এবং এই প্রক্রিয়ার ফলে খনিজদ্রব্য দ্রবণ থেকে বাষ্পীভূত হয়ে যায়।
আগ্নেয় শিলা এবং পাললিক শিলার মধ্যে পার্থক্যঃ–
১। ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের বাইরে বেরিয়ে শীতল ও কঠিন হয়ে আগ্নেয় শিলা পরিণত হয়। অন্যদিকে, বিভিন্ন বহির্জাত শক্তির ক্ষয় জাত পদার্থ তাপ ও চাপের দ্বারা পাললিক শিলার পরিণত হয়।
২। আগ্নেয় শিলা সবচেয়ে কঠিন ও দৃঢ় সংবদ্ধ হয়। অন্যদিকে, পাললিক শিলা নরম ও অসংবদ্ধ হয়।
৩। আগ্নেয় শিলায় কোন স্তর থাকে না। অন্যদিকে, পাললিক শিলা স্তর বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
৪। আগ্নেয় শিলায় কেলাস দেখা যায়। অন্যদিকে, পাললিক শিলায় কেলাস গঠিত হয় না।
৫। আগ্নেয় শিলায় কোন জীবাশ্ম দেখা যায় না। অন্যদিকে, পাললিক শিলায় জীবাশ্ম দেখা যায়।
৬। আগ্নেয় শিলার উদাহরণ হল গ্রানাইট, ব্যাসল্ট ইত্যাদি। অন্যদিকে, পাললিক শিলার উদাহরণ হল বেলে পাথর, কাদা পাথর, চুনা পাথর ইত্যাদি।
৭। আগ্নেয় শিলায় খনিজ সম্পদের পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে অনেক কম পাওয়া যায়। অন্যদিকে, পৃথিবীর প্রধান প্রধান খনিজ সম্পদ যেমন কয়লা, পেট্রোলিয়াম প্রভৃতি পাললিক শিলা অঞ্চলেই সঞ্চিত থাকে।