ইন্টারফেজ (Interphase):
ইন্টারফেজ হল কোষ চক্রের দীর্ঘতম পর্যায়। এটি কোষ চক্রের দীর্ঘ সময়ের জন্য (মোট সময়ের প্রায় 91%) প্রসারিত হয়। নিউক্লিওলাস এবং নিউক্লিয়ার মেমব্রেন ইন্টারফেজে দেখা যায়। ইন্টারফেসের তিনটি উপ-পর্যায় রয়েছে যথা G1 ফেজ, S ফেজ এবং G2 ফেজ। G1 এবং G2 দুটি ফাঁক পর্যায়।
এই দুটি পর্যায়ে, কোষ বৃদ্ধি পায়, কোষ পুষ্টি জমা করে, কোষ অর্গানেল তৈরি করে এবং কোষ প্রোটিন সংশ্লেষণ করে। S ফেজ একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় যেখানে ডিএনএ (DNA) প্রতিলিপি ঘটে। S পর্বের শেষে, কোষে DNA এর দুটি সম্পূর্ণ সেট থাকে। কোষটি ইন্টারফেজ শেষ করার পরে, কোষটি মাইটোসিস ফেজ (এম ফেজ) এ প্রবেশ করে।
এম. ফেজ (M. phase):
মাইটোসিস দ্বারা কোষ বিভাজন জিনগতভাবে সমবৈশিষ্ট্যসম্পন্ন অভিন্ন কোষের জন্ম দেয় যেখানে ক্রোমোজোমের মোট সংখ্যা বজায় থাকে। সাধারণত, মাইটোসিস বিভাজনের (নিউক্লিয়াসের বিভাজন) পূর্বে ইন্টারফেজ পর্যায়ের S ধাপ (যে ধাপে ডিএনএ অনুলিপন সম্পন্ন হয়) সংঘটিত হয় এবং মাইটোসিসের পরে সম্পন্ন হয় টেলোফেজ ও সাইটোকাইনেসিস। সাইটোকাইনেসিস পর্যায়ে একটি কোষের সাইটোপ্লাজম, কোষঅঙ্গাণু এবং কোষঝিল্লি বিভক্ত হয়ে প্রায় সমান কোষীয় উপাদান সমৃদ্ধ দুটি কোষ সৃষ্টি হয়।
একটি মাতৃকোষ বিভাজিত হয়ে জিনগতভাবে অভিন্ন দুটি কোষের সৃষ্টিই হল মাইটোসিসের বিভিন্ন পর্যায়ের সম্মিলনে গঠিত প্রাণীকোষচক্রের মাইটোটিক (M) ফেজ।
ইন্টারফেজ এবং এম. ফেজ এর মধ্যে পার্থক্যঃ
ইন্টারফেজ হল কোষ চক্রের দীর্ঘতম পর্যায়। এটি কোষ চক্রের দীর্ঘ সময়ের জন্য (মোট সময়ের প্রায় 91%) প্রসারিত হয়। ইন্টারফেজ এবং এম. ফেজ এর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। মাইটোসিস বিভাজন শুরু করার প্রস্তুতি পর্যায়কে ইন্টারফেজ বলে। অন্যদিকে, একটি মাতৃকোষ বিভাজিত হয়ে জিনগতভাবে অভিন্ন দুটি কোষের সৃষ্টিই হল মাইটোসিসের বিভিন্ন পর্যায়ের সম্মিলনে গঠিত প্রাণীকোষচক্রের মাইটোটিক (M) ফেজ।
২। ইন্টারফেজ কোষ বিভাজনের প্রস্তুতি দশা। অন্যদিকে, এম ফেজ কোষের প্রকৃত বিভাজন দশা।
৩। ইন্টারফেজ কোষচক্রের ৯০-৯৫% সময় এখানে ব্যয় হয়। অন্যদিকে, এম ফেজ কোষ চক্রের ৫-১০% সময় এখানে ব্যয় হয়।
৪। ইন্টারফেজ দশায় কোষীয় সংগঠনের বৃদ্ধি এবং সংখ্যাগত বৃদ্ধি ঘটে। অন্যদিকে, এম ফেজ দশায় কোষীয় সংগঠনের বিস্তার ও বিভাজন ঘটে।
৫। ইন্টারফেজ দশায় বংশগতীয় বস্তু ক্রোমাটিন হিসেবে থাকে। অন্যদিকে, এম ফেজ দশায় বংশগতীয় বস্তু ক্রোমোসোম হিসেবে থাকে।