Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

জিলাপি ও অমৃতির মধ্যে পার্থক্য

জিলাপি ও অমৃতি

জিলাপি (Jilapi):
জিলাপির সর্বাধিক পুরনো লিখিত বর্ণনা পাওয়া যায় মুহম্মদ বিন হাসান আল-বোগদাদীর লিখিত ১৩শ শতাব্দীর রান্নার বইতে, যদিও মিসরের ইহুদিরা এর আগেই খাবারটি আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছিল। ইরানে এই মিষ্টান্ন জেলেবিয়া নামে পরিচিত, যা সাধারণত রমযান মাসে গরীব-মিসকিনদের মাঝে বিতরণ করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানরা জিলাপি নিয়ে আসে। বাংলাদেশে রমযান মাসে ইফতারিতে এটি একটি জনপ্রিয় খাবার। মধ্যযুগে পারসি ভাষাভাষি তুর্কিরা খাবারটিকে ভারতবর্ষে নিয়ে আসে। ১৫শ’ শতকের ভারতে জিলাপিকে ”কুন্ডলিকা” বলা হত।

আটা, বেসন এবং ইষ্ট এর আঠালো মিশ্রণকে এককেন্দ্রিক ভাবে ২ বা ৩ প্যাঁচ দিয়ে গরম তেলের উপর ফেলা হয়। বেশ ভাজা হয়ে গেলে আগে থেকে বানানো চিনির রসেতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রেখে বানানো হয় জিলাপি। জিলাপি সাধারণভাবে গরম গরম পরিবেশিত হয়। জিলাপি তৈরির জন্য প্লাস্টিকের সসের বোতলে জিলাপির ব্যাটার ঢুকিয়ে জিলাপি তৈরি করলে অনেক বেশি সোজা হয়।

ঢাকার শাহী জিলাপি বিশাল আকারের জিলাপি যা খেতে খুবই সুস্বাদু।তৈরি করার প্রণালী প্রায় একই হলেও এ জিলাপি আকারে বড় হয়। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যকে ধারণ করে এ জিলাপি। ময়মনসিংহে চালের গুড়ার সাথে তেঁতুলের টক দিয়ে বানানো টক স্বাদের চিকন জিলাপিকে টক জিলাপি বলা হয়।

অমৃতি (Amriti):
অমৃতি হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভুত একটি মিষ্ঠান্ন। এটি কিছুটা জিলাপির মত দেখতে খাবার তবে এর রঙ সাধারণত লাল বা কমলা হয় এবং এটা খেতেও জিলাপির থেকে আলাদা হয়। এটি তৈরি হয় অড়হর ডাল ভিজিয়ে বেটে সেটি ভেজে। কোথাও কোথাও একে আমিত্তি পিঠা হিসাবেও আখ্যায়িত করা হয়। আমিত্তি বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ইফতার আইটেম। সিলেটি ইফতারির একটি বিশেষত্ব হচ্ছে এই মিষ্টান্নটি যা কোনো ধরনের ফুড কালার ছাড়াই তৈরি করা হয়। অনুষ্ঠান ও মুসলমানদের মিলাদ মাহফিলের শেষে তাবারুক হিসাবে জিলিপি ও অমৃতি বিতরণ যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।

জিলাপি ও অমৃতির মধ্যে পার্থক্যঃ

সাধারণত অমৃতি জিলিপির মতো দেখতে হলেও জিলিপির তুলনায় এই অমৃতির আকার একটু বেশি বড়ো হয়। জিলাপি ও অমৃতির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১. আটা, বেসন এবং ইষ্ট এর আঠালো মিশ্রণকে এককেন্দ্রিক ভাবে ২ বা ৩ প্যাঁচ দিয়ে গরম তেলের উপর ফেলা হয়। বেশ ভাজা হয়ে গেলে আগে থেকে বানানো চিনির রসেতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রেখে বানানো হয় জিলাপি। অন্যদিকে, অমৃতি বিউলি বা কলাই ডাল বেটে মোটামুটি ঘন ব্যাটার করে ফুলের আকারে গরম তেলে ভেজে রসে ফেলতে হয়।

২. জিলাপি ময়দা, ব্যসন সহযোগে প্রস্তুত করা হয়। অন্যদিকে, অমৃতি বিউলি বা কলাই ডাল বেটে প্রস্তুত করা হয়।

৩. জিলাপি ভাজার পর হলদে বাদামী বর্ণের হয়। অন্যদিকে, অমৃতি ভাজার পর কমলা বর্ণের হয়।

৪. জিলাপি ৩/ ৪ প্যা্ঁচ যুক্ত গোলাকৃতি দেখতে হয়। অন্যদিকে, অমৃতি জ্যামিতিক আকারের হয়।

৫. সাধারণত জিলাপির মধ্যে রং বা ফুড কালার ব্যবহার করা হয় না। অন্যদিকে, অমৃতির রং লাল হওয়ার জন্য জন্য অমৃতি তৈরির মিশ্রণটির মধ্যে লাল রং – এর ফুড কালার বা রং ব্যবহার করা হয়।

Exit mobile version