ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিস এর মধ্যে পার্থক্য

ক্যারিওকাইনেসিস (Karyokinesis):
মাইটোসিস কোষ বিভাজনকালে নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে ক্যারিওকাইনেসিস বলে। ক্যারিওকাইনেসিসের ফলে নিউক্লিয়াসটি সমান দুই অংশে বিভাজিত হয়ে সমগুণসম্পন্ন অপত্য কোষ গঠন করে। বিভাজিত কোষে নিউক্লিয়াসটির একটি জটিল পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্যারিওকাইনেসিস সম্পন্ন হয়। উল্লেখ্য, ক্যারিওকাইনেসিস ৫টি পর্যায় বা দশায় সম্পন্ন হয়। যথা- প্রোফেজ, প্রো-মেটাফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ ও টেলোফেজ।

সাইটোকাইনেসিস (Cytokinesis):
টেলোফেজ পর্যায়ের শেষের দিকেই সাইটোকাইনেসিস আরম্ভ হয়। যে প্রক্রিয়ায় বিভাজনরত কোষের সাইটোপ্লাজম দুই ভাগে বিভক্ত হয়, তাকে সাইটোকাইনেসিস বলে। উদ্ভিদ কোষে স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চল ক্রমেই প্রশস্ত হয়ে কোষপ্রাচীরকে স্পর্শ করে। সূত্রগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়। বিষুবীয় অঞ্চলেই লাইসোজোমের মতো ফ্রাগমোসোম জমা হয় এবং পরে এরা মিলিত হয়ে প্লাজমালেমা নামের ঝিল্লির সৃষ্টি করে।

প্লাজমালেমা নামের ঝিল্লির ওপর অন্যান্য দ্রব্য জমা হয়ে এটি কোষপ্লেটে পরিণত হয়। কোষপ্লেটের ওপর হেমিসেলুলোজ ও অন্যান্য দ্রব্য জমা হয়ে কোষপ্রাচীর গঠন করে। কোষপ্রাচীর গঠনের ফলে মাতৃকোষটি পরবর্তী সময়ে দুই ভাগে ভাগ হয়ে দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে।

ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিস এর মধ্যে পার্থক্যঃ

মাইটোসিস কোষ বিভাজনকালে নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে ক্যারিওকাইনেসিস বলে। ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিস এর মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হয়েছে-

১। কোষের সাইটোপ্লাজমের বিভাজনকে সাইটোপ্লাজম বলে; কিন্তু নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে ক্যারিওকাইনেসিস বলে। অন্যদিকে, যে প্রক্রিয়ায় বিভাজনরত কোষের সাইটোপ্লাজম দুই ভাগে বিভক্ত হয়, তাকে সাইটোকাইনেসিস বলে।

২। ক্যারিওকাইনেসিস পদ্ধতিতে কোষের নিউক্লিয়াসের বিভাজন ঘটে। অন্যদিকে, সাইটোকাইনেসিস পদ্ধতিতে কোষের সাইটোপ্লাজমের বিভাজন ঘটে

৩। ক্যারিওকাইনেসিস জটিল পদ্ধতি এবং দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন। অন্যদিকে, সাইটোকাইনেসিস অপেক্ষাকৃত সরল পদ্ধতি এবং কম সময়ের প্রয়োজন।

৪। ক্যারিওকাইনেসিস সমগ্র প্রক্রিয়াটি পাঁচটি দশা, যথা-প্রোফেজ, প্রো-মেটাফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ এবং টেলোফেজ-এ বিভক্ত। অন্যদিকে, সাইটোকাইনেসিসকে কোনো পর্যায়ে বিভক্ত করা হয় না।

৫। ক্যারিওকাইনেসিস নিউক্লিয়াস বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসে পরিণত হয়। অন্যদিকে, সাইটোকাইনেসিসকে সাইটোপ্লাজম সমান দুটি ভাগে বিভক্ত হয়।

৬। ক্যারিওকাইনেসিসে নিউক্লিয়াসের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে। অন্যদিকে, সাইটোকাইনেসিস কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে।

৭। ক্যারিওকাইনেসিস সাইটোকাইনেসিসের আগে ঘটে। অন্যদিকে, সাইটোকাইনেসিস ক্যারিওকাইনেসিসের পরে ঘটে।