ভাষা (Language):
যে ধ্বনি মানুষের বাক যন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত হয় এবং যার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করা হয় তাকে ভাষা বলে। আমরা মনে রাখবো, যে-কোনো রকমের ধ্বনি হলেই ভাষা হবে না যেমন হাততালি দিয়ে ডাকা ইশারায় কথা বলা এগুলি ভাষা নয়, আমরা মনে রাখব ভাষা হল ধ্বনিযুক্ত এবং তা অর্থবহ। আবার উচ্চারণ যোগ্য ধ্বনি হলেই তা ভাষা হবে না। তাকে হতে হবে অর্থবহ । অর্থাৎ শুধুমাত্র মনের ভাব প্রকাশের উপযোগী ধ্বনিই হল ভাষা।
উপভাষা (Dialect):
ভাষা হল মানুষের ভাব প্রকাশের মাধ্যম। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো বিভিন্ন স্থানে মানুষের ভাষা বিভিন্ন হয়। যেমন পশ্চিমবঙ্গের ভাষা বাংলা, আবার পাশের রাজ্য বিহারের ভাষা হিন্দি। শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার ভাষা ও হুগলি জেলার ভাষা শুনলে বোঝা যাবে এই দুটিই বাংলা ভাষা হলেও, দুই অঞ্চলের ভাষায় অনেক পার্থক্য আছে। আসলে কোনো ভাষা যখন বৃহৎ অঞ্চলে প্রচলিত থাকে, তখন বিভিন্ন অঞ্চলে একই ভাষার ভিন্ন ভিন্ন রূপ প্রচলিত থাকে। এই রূপগুলি উপভাষা নামে পরিচিত। উপভাষা কাকে বলে, এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা বলতে পারি: বৃহৎ অঞ্চলে প্রচলিত কোনো ভাষা অঞ্চলভেদে যে ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে, ভাষার সেই আঞ্চলিক রূপভেদগুলিকে উপভাষা বলে।
ভাষা ও উপভাষার মধ্যে পার্থক্যঃ
ভাষা ও উপভাষার মধ্যে কিছুটা মিল থাকলেও এদের মধ্যে বেশ কিছু অমিলও রয়েছে। নিচে ভাষা ও উপভাষার মধ্যে পার্থক্য দেখানো হলো-
১। যে ধ্বনি মানুষের বাক যন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত হয় এবং যার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করা হয় তাকে ভাষা বলে। অন্যদিকে বৃহৎ অঞ্চলে প্রচলিত কোনো ভাষা অঞ্চলভেদে যে ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে, ভাষার সেই আঞ্চলিক রূপভেদগুলিকে উপভাষা বলে।
২। ভাষা একটি বৃহৎ অঞ্চলে প্রচলিত। অন্যদিকে উপভাষা অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র অঞ্চলে প্রচলিত।
৩। ভাষার একটি সার্বজনীন আদর্শ রূপ থাকে। অন্যদিকে উপভাষা সেই আঞ্চলিক ভাষার রূপ।
৪। ভাষায় রচিত হয় সাহিত্য কীর্তি। অন্যদিকে উপভাষায় রচিত হয় লোকগীতি ও লোকসংগীত।
৫। ভাষার নিদিষ্ট ব্যাকরণ থাকে। অন্যদিকে উপভাষার নিদিষ্ট কোন ব্যাকরণ থাকে না।