Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

ম্যাগমা ও লাভার মধ্যে পার্থক্য

ম্যাগমা ও লাভার

ম্যাগমা(Magma):

ম্যাগমা প্রাচীন গ্রীক ম্যাগমা থেকে এসছে। যার অর্থ “ঘন অসচ্ছল” হলো গলিত বা আধা-গলিত প্রাকৃতিক উপাদান যা থেকে সমস্ত আগ্নেয় শিলা গঠিত হয়। আগ্নেয়গিরি থেকে যে গলিত পদার্থ বের হয়,তাকে ম্যাগমা বলে। আসলে ম্যাগমার কোনো প্রকার নেই,এটি ঠাণ্ডা হলে একে আগ্নেয় শিলা বলে। ম্যাগমা পৃথিবীর তলদেশের নীচে পাওয়া যায় এবং অন্যান্য পার্থিব গ্রহ এবং কিছু প্রাকৃতিক উপগ্রহে ম্যাজমেজমের প্রমাণও পাওয়া গেছে।

গলিত শিলা ছাড়াও ম্যাগমাতে স্থগিত স্ফটিক এবং গ্যাস বুদবুদও থাকতে পারে। সাবটাকশন জোন, কন্টিনেন্টাল ফাট অঞ্চল, মধ্য-মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং হটস্পট সহ বিভিন্ন টেকটোনিক সেটিংসে ম্যান্টল বা ক্রাস্ট গলানোর মাধ্যমে ম্যাগমা উৎপাদিত হয়।

লাভা(Lava):

লাভা শব্দটি সম্ভবত ল্যাটিন শব্দ লাবেস (labes) থেকে এসেছে, যার অর্থ গড়িয়ে পড়া। ১৭৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ মে থেকে ৪ জুন-এর মাঝামাঝি কোনো সময়ে ফ্র্যন্সিস্কো জেরাও নামের এক ব্যক্তি ভিসুভিয়াস পর্বতের আগ্নুৎপাত সম্পর্কে লিখতে গিয়ে এই কথাটির প্রথম ব্যবহার করেন। আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যৎপাতের সময় নি:সৃত গলিত বা অর্ধগলিত সিলিকেটময় পদার্থকে লাভা বলে। লাভা বলতে কোনো আগ্নেয়গিরি থেকে নিঃসৃত গলিত পাথর বা তা থেকে জমাট বাঁধা পাথরকে বোঝানো হয়।

কোনো কোনো গ্রহ এবং উপগ্রহের ভূ-অভ্যন্তরে লাভা থাকে। যেমন- পৃথিবীর ভূ-অভ্যন্তরেও লাভা রয়েছে। লাভা যখন কোনো আগ্নেয়গিরি থেকে বেরিয়ে আসে তখন এর উষ্ণতা থাকে ৭০০° সেলসিয়াস থেকে ১২০০° সেলসিয়াস। থিক্সোট্রপিক এবং শীয়ার থিনিং ধর্মের জন্য ঠান্ডা হওয়া বা জমাট বাঁধার আগে লাভা জলের থেকে ১,০০,০০০ গুণ অবধি সান্দ্র হতে পারে। আগ্নেয়গিরি থেকে বিস্ফোরণহীণভাবে উদগীরিত লাভা যখন ভূপৃষ্ঠে বয়ে যায় তখন তাকে লাভা প্রবাহ বলা হয়।

ম্যাগমা ও লাভার মধ্যে পার্থক্য:

আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যৎপাতের সময় নি:সৃত গলিত বা অর্ধগলিত সিলিকেটময় পদার্থকে লাভা বলে। ম্যাগমা ও লাভার মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-

১। ভূগর্ভের উত্তপ্ত ও গলিত তরল খনিজের মিশ্রণকে ম্যাগমা বলে। অন্যদিকে লাভা বলতে বোঝায় ভূপৃষ্ঠের উপরিস্থিত উত্তপ্ত তরল গ্যাস ও বাষ্প হীন শিলার মিশ্রণ।

২। ভূ-গর্ভে ম্যাগমার উপস্থিতি দেখা যায়। অন্যদিকে লাভা ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগেই অবস্থান করে।

৩। ভূগর্ভের তরল শিলায় হল ম্যাগমা। অন্যদিকে লাভা হলো ভূপৃষ্ঠের উপরিস্থিত তরল ও কঠিন শিলার মিশ্রন।

৪। আণবিক বিস্ফোরণের ফলে ভূগর্ভের উষ্ণতার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ক্ষুব্ধ মন্ডলের পদার্থসমূহ গলে গিয়ে ম্যাগমার সৃষ্টি করে। অন্যদিকে ভূগর্ভস্থ ম্যাগমার বহির্গমনের ফলে ভূপৃষ্ঠে লাভার প্রবাহ হয়।

৫। তিন ধরনের লাভা যেমন ‘এ’এ, পাহোওইও এবং পিলো লওয়া। তাদের রাসায়নিক গঠন উপর নির্ভর করে। অন্যদিকে ম্যাগমা তিন ধরনের তা হলো- বাসাল্টিক ম্যাগমা, আন্দেসিটিক ম্যাগমা এবং রিয়েলিটিিক ম্যাগমা।

৬। ম্যাগমা ভূত্বকের নিম্নাংশ বা গুরুমণ্ডলের উপরের অংশে উৎপন্ন হয়। অন্যদিকে লাভা ভূপৃষ্ঠে কিম্বা ভূপৃষ্টিয় অংশে সঞ্চিত হয়।

Exit mobile version